Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

বৈঠকে ডোভাল কেন, উঠল প্রশ্ন

অযোধ্যা রায়কে সামনে রেখে মুসলিম মন জয়েরও চেষ্টা করছে সঙ্ঘ-বিজেপি। গত কাল ঠিক এই বার্তা দিতে টিভিতে জাতির উদ্দেশে বার্তা দেন মোদী।

ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অজিত ডোভাল (মাঝখানে)। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠকে অজিত ডোভাল (মাঝখানে)। রবিবার নয়াদিল্লিতে। ছবি: পিটিআই

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৯ ০২:৪৫
Share: Save:

সকালেই মিলাদ-উন-নবির শুভেচ্ছা এল প্রধানমন্ত্রীর তরফে। তার পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের কাছ থেকে। প্রিয়ঙ্কা গাঁধী বঢরার তরফেও এল, সঙ্গে চার মাস ধরে জম্মু-কাশ্মীরের বাসিন্দাদের ভোগান্তির কথা। দুপুর গড়াতে টুইট করলেন রাহুল গাঁধীও।

অযোধ্যা রায়কে সামনে রেখে মুসলিম মন জয়েরও চেষ্টা করছে সঙ্ঘ-বিজেপি। গত কাল ঠিক এই বার্তা দিতে টিভিতে জাতির উদ্দেশে বার্তা দেন মোদী। আজ হিন্দু ও মুসলিম ধর্মগুরু এবং বিশিষ্ট জনেদের নিয়ে বৈঠকে বসলেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভাল। দিল্লিতে নিজের বাসভবনেই ডাকলেন সকলকে। কিন্তু প্রশ্ন উঠল, কেন ডোভাল? সম্প্রীতি রক্ষার বার্তা দিতে তো বসতে পারতেন প্রধানমন্ত্রীও। নিদেন পক্ষে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। ডোভালের বৈঠক শেষ হতেই প্রকাশিত হল হিন্দু-মুসলিম ‘যৌথ’ বিবৃতি। তাতে বলা হল, দেশ-বিরোধী শক্তি অশান্তি ছড়ানোর চেষ্টায় আছে। শান্তি ও সম্প্রীতি সুনিশ্চিত করতেই এই বৈঠক। বস্তুত, অযোধ্যা নিয়ে সমাজমাধ্যমে আপত্তিকর পোস্টের অভিযোগে সারা দেশে প্রায় ৯০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে খবর। যোগগুরু রামদেব, স্বামী পরমাত্মানন্দ, হৃষীকেশের স্বামী চিদানন্দ সরস্বতী, শিয়া ধর্মগুরু কালবে জাওয়াদ, হজরত খাজা মইনুদ্দিন হাসান চিস্তির সইদ আবেদিন আলি খান, মৌলানা আসগর আলি সালাফির মতো ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিলেন আজকের বৈঠকে। সরকারি সূত্রের বক্তব্য, রায় ঘোষণার আগেই এই বৈঠক ডাকা হয়েছিল। রায়ের পরে এটি আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠল। বৈঠকের পরে পরমাত্মানন্দ বলেন, ‘‘ডিজিটাল যুগে দেশের ভিতরে ও বাইরে কিছু ব্যক্তি অশান্তি ছড়াতে চাইছে। তার মোকাবিলা করতে সকলকে সক্রিয় হতে হবে, যাতে ধর্মগুরুরা নিজেদের অনুগামীদেরও এই বার্তা দিতে পারেন।’’

মৌলানা আসগর আলি সালাফির বক্তব্য, ‘‘আমরা আদালতের রায়কে স্বাগত জানাব, আগেই বলেছি। আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে সব আশঙ্কা ভুল প্রমাণিত হয়েছে। হিন্দু ও মুসলমান উভয়ে আবেদন জানানোয় ভাল ফল হয়েছে।’’ রামদেবের প্রস্তাব, মন্দির গড়তে মুসলিমরা এগিয়ে আসুন, মসজিদ গড়তে হিন্দুরা। তাঁর বক্তব্য, ‘‘রায় নিয়ে অনেকের মনে প্রশ্ন থাকতে পারে। কিন্তু রায় মেনে ঐক্য বজায় রাখতে হবে। যারা বিভাজন চায়, তারা সফল হবে না।’’ সইদ আবেদিন আলি খানের মতে, হিন্দু-মুসলিম বিবাদ ঘুচিয়ে দারিদ্র মোকাবিলা ও শিক্ষার মান বাড়ানোয় মন দিতে হবে।

মন্দির নির্মাণের জন্য সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে একটি ট্রাস্ট গড়তে বলেছে। সেই ট্রাস্টে কারা কারা থাকবেন, তা নিয়েও সরকারে আলোচনা শুরু হয়েছে। কিন্তু ধর্মগুরুদের অনেকে চান, দুই সম্প্রদায়কে নিয়ে একটি পাকাপাকি মঞ্চ গড়ে আলোচনা চালিয়ে যেতে। স্বামী চিদানন্দ সরস্বতী বলেন, ‘‘আমেরিকায় ৯/১১ (১১ সেপ্টেম্বর) বিভেদ ঘটানোর লক্ষ্যে হয়েছিল, ভারতে ৯/১১ (৯ নভেম্বর) মানুষকে একসঙ্গে এনেছে। আমরা হয়তো একসঙ্গে প্রার্থনা করতে পারব না। কিন্তু দেশ, মানবতা, পরিবেশ রক্ষা তো একসঙ্গে করতে পারব।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Ayodhya Case Babri Masjid Ajit Doval
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE