Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Women

বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে আইন কবে, প্রশ্ন সেটাই

রায় স্বাগত জানালেও আগামীর চলার পথটা এখনও কঠিন। অনেকটা এ ভাবেই বৈবাহিক ধর্ষণ প্রসঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের দৃষ্টিভঙ্গিটি দেখছেন অনেকে।

আগামীর চলার পথটা এখনও কঠিন।

আগামীর চলার পথটা এখনও কঠিন। প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:১০
Share: Save:

রায় স্বাগত জানালেও আগামীর চলার পথটা এখনও কঠিন। অনেকটা এ ভাবেই বৈবাহিক ধর্ষণ প্রসঙ্গে সর্বোচ্চ আদালতের দৃষ্টিভঙ্গিটি দেখছেন অনেকে। তবে এই রায়ের গুরুত্ব মুক্তকণ্ঠে স্বীকার করছেন প্রবীণ বিচারপতি থেকে সমাজকর্মী সকলেই। সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অশোক গঙ্গোপাধ্যায় যেমন স্পষ্ট বলছেন, ‘‘নারীর ব্যক্তিসত্তা উদযাপনের ইতিহাসে এ এক যুগান্তকারী পদক্ষেপ।’’ তবে তাঁর মতে, ‘‘গ্রামেগঞ্জে মেয়েদের লড়াইয়ের রাস্তা তো কঠিন। মেয়েদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা বা আর্থিক সবলতা ছাড়া এই আইনের সুফল পাওয়া মুশকিল।’’

কাঠুয়ার ধর্ষিতা শিশুর জন্য ন্যায় বিচার ছিনিয়ে এনেছিলেন জম্মু-কাশ্মীর হাইকোর্টের আইনজীবী দীপিকা সিংহ রাজাওয়াত। তাঁর কথায়, ‘‘এ ভাবেই নারী ও মানবাধিকারের জন্য আইন তৈরি হয়।’’ ফোর্বস তালিকাভুক্ত আইনজীবী কলকাতার রামিয়া হরিহরণের মতেও, ‘‘বৈবাহিক ধর্ষণের বিরুদ্ধে নিঃশর্ত ভাবে আইন হওয়া উচিত।’’ আমেরিকায় গর্ভপাতের অধিকার বিপন্ন হওয়ার সমসময়েই ভারতে যেন উলটপুরাণ ঘটছে। সব মেয়ের গর্ভপাতের অধিকার রক্ষার সূত্রেই বৈবাহিক ধর্ষণের অপরাধ মেনে নেওয়ার কথা বলেছে সর্বোচ্চ আদালত। অথচ, ভারতে ধর্ষণ আইনে বৈবাহিক ধর্ষণকে ধর্ষণ বলা হয় না। সুপ্রিম কোর্টের রায় এবং বৈবাহিক ধর্ষণ প্রসঙ্গে মন্তব্যে সেই ‘লজ্জা’ কাটবে বলে মনে করছেন নারী অধিকার রক্ষা কর্মী অনন্যা চক্রবর্তী। তাঁর কথায়, ‘‘এ দেশে সংসদে বৈবাহিক ধর্ষণকে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা ভেস্তে গেলেও সুপ্রিম কোর্টের রায় প্রায় আইনের সমান। এই রায় হাতিয়ার করে এর পরে বৈবাহিক ধর্ষণের শিকার অনেকে পুলিশের কাছে যাবেন। পুলিশ কিছু না-করলে আদালতে রিট আবেদন জমা দিতে পারবেন।’’ রাজ্য পুলিশের অবসরপ্রাপ্ত আইজি পঙ্কজ দত্তও বলছেন, ‘‘পুলিশকে এমন অভিযোগে এ বার সাড়া দিতে হবে।’’ তবে কারও কারও আশঙ্কা, ভবিষ্যতে এই আইনটিরও অপব্যবহার হতে পারে।

আপাতত বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে আইন তৈরিই বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন অম্বেডকর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্বের শিক্ষিকা রুক্মিনী সেন। তাঁর কথায়, ‘‘বিচারপতি বর্মার কমিশনও তো ২০১৩-য় বৈবাহিক ধর্ষণকে অপরাধ হিসেবে দেখার সুপারিশ করেছিল। এর পরেও গত মে মাসে দিল্লি হাইকোর্টের এক বিচারপতিই এ সব আইন হলে বিয়ের পবিত্রতা ধাক্কা খাবে বলেন। বিশাখা রায়ের কর্মক্ষেত্রে মেয়েদের যৌন হেনস্থা নিয়ে আইন হতে ১৬ বছর বাদে লেগেছিল। কিছুই সহজে হয় না!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Women Crime Violence
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE