Advertisement
E-Paper

গদিতে বসেও প্রশ্নে নীতীশের ভবিষ্যৎ

তা হলে শুধুই কী লালুর হাত থেকে পরিত্রাণ পেতেই নীতীশ বিজেপির হাত ধরলেন? নীতীশের এই সিদ্ধান্তের ফলে জেডিইউ-এর মধ্যে বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে। দলের আর এক শীর্ষস্থানীয় নেতা শরদ যাদব দেখা করেছেন রাহুল গাঁধীর সঙ্গে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৭ ০৩:২৮
ফাইল চিত্র।

ফাইল চিত্র।

কাল কী হচ্ছে, পরশু কী হবে— আগেই সেটা বোঝার ক্ষমতা থাকা উচিত রাজনেতার। অনেকটা এমন কথাই বলেছিলেন উইনস্টন চার্চিল। নিজের রাজনৈতিক জীবনে সব সময়েই এই অঙ্কটি কষে এসেছেন নীতীশ কুমার। কিন্তু এ বারে কী একটু বেশি ঝুঁকি নিলেন না?

নরেন্দ্র মোদী সরকারের এক শীর্ষ মন্ত্রী আজ বলেন, ‘‘আসলে নীতীশ কুমার নিজের রাজনৈতিক লাভ বাড়ানোর থেকেও লোকসান কমানোর ঝুঁকি নিয়েছেন।’’

প্রশ্নটা এখানেই। বিজেপির সঙ্গে এসে লাভটা কার বেশি হল? নীতীশের ভবিষ্যৎই বা কী? নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে ঘোর বিরোধের সময়ে নীতীশের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে এসেছেন অরুণ জেটলি। ঘনিষ্ঠ মহলে জেটলি আজ বলেছেন, আসলে লালু প্রসাদের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারছিলেন না নীতীশ। উভয়ের কাজের পদ্ধতি আলাদা। তার উপর একের পর এক দুর্নীতির অভিযোগে জড়িয়ে যাওয়া লালু ও তাঁর পরিবারের সঙ্গে থাকলে নীতীশের ভাবমূর্তিতেও আঁচ আসত।

তা হলে শুধুই কী লালুর হাত থেকে পরিত্রাণ পেতেই নীতীশ বিজেপির হাত ধরলেন? নীতীশের এই সিদ্ধান্তের ফলে জেডিইউ-এর মধ্যে বিক্ষোভ দানা বেঁধেছে। দলের আর এক শীর্ষস্থানীয় নেতা শরদ যাদব দেখা করেছেন রাহুল গাঁধীর সঙ্গে। জেডিইউ সাংসদ আলি আনোয়ার প্রকাশ্যে নীতীশের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছেন। সন্ধেয় দিল্লিতে বৈঠকও করেছেন বিক্ষুব্ধরা। তাঁদের প্রশ্ন, ‘‘জোট গড়ার সময় লালু দুর্নীতিগ্রস্ত ছিলেন না? বড় দল হয়েও লালু মুখ্যমন্ত্রী করেছেন নীতীশকে।’’ বিক্ষুব্ধরা এখন লালুর সঙ্গে হাত মিলিয়ে নীতীশকে কাবু করতে চাইছেন। আর নীতীশের হয়ে শরদ যাদবদের ক্ষোভ কমাতে গত কাল থেকেই লেগে রয়েছেন জেটলি। শরদ-সহ বিক্ষুব্ধদের মন্ত্রিত্বের টোপ দিয়ে যুদ্ধবিরতির চেষ্টা হচ্ছে।

কিন্তু বিজেপি শিবিরে কান পাতলে শোনা যাবে, নীতীশকে এই ঝুঁকির মাসুল গুণতে হতে পারে ভবিষ্যতে। ঘর গোছানোর পরে আসল রূপে নামবেন নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ। বিজেপিরই এক নেতার ব্যাখ্যা, ‘‘মহারাষ্ট্রে শিবসেনাও দাদা ছিল, বিজেপি ছোট ভাই। সে ছবি এখন পাল্টে গিয়েছে। বিহারে নীতীশ এখন বিজেপির নেতা। ভবিষ্যতে নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহই হতে চাইবেন বড় দাদা। উভয়ের ভোটব্যাঙ্ক প্রায় সমান। সেখানে নিজের শক্তি বাড়িয়ে নীতীশকেই পরিণত করবেন ছোট ভাইয়ে।’’

জেডিইউ-এর অনেক নেতা বলছেন, এই এক সিদ্ধান্তে নীতীশ সংখ্যালঘু ভোট হারালেন। বিরোধী জোটে চিড় ধরালেন। আর নিজের প্রধানমন্ত্রী হওয়ার বাসনাও জলাঞ্জলি দিলেন। হয়ত বুঝেছিলেন, বিরোধী শিবিরে থাকলে প্রধানমন্ত্রী প্রার্থী হিসেবে মেলে ধরার সুযোগ থাকলেও ভোটে মোদীই ফের ফিরবেন। তাই নিজের রাজ্যেই শান্তিতে থাকতে চান আপাতত। কিন্তু রাহুল গাঁধী বলছেন, এই কাজ করতে গিয়ে নিজের বিশ্বাসযোগ্যতা হারালেন নীতীশ। বিহারের ভোটে সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে যে জনমত পাওয়া গিয়েছিল, নিজের রাজনৈতিক স্বার্থ আর ক্ষমতার জন্য নীতীশ কুমার এখন তাদেরই আলিঙ্গন করলেন।

Nitish Kumar CM Bihar JDU BJP নীতীশ কুমার
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy