বারাণসীতে স্কুল পড়ুয়াদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার
পড়াশোনা শুধু ডিগ্রি বা চাকরির জন্য নয়। পড়াশোনা করে কে কী হবে, তা তার উপরে চাপিয়ে দেওয়া চলবে না। পড়ুয়ারা নিজের পছন্দ অনুযায়ী যা হতে চাইবে, সেই অনুযায়ী তাদের শিক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে।
‘থ্রি ইডিয়টস’ সিনেমার র্যাঞ্চো-র মন্ত্র নয়। আজ বারাণসীতে সর্বভারতীয় শিক্ষা সঙ্গম-এ এই মন্ত্র দিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
দেশের শিক্ষাবিদদের প্রধানমন্ত্রীর লোকসভা কেন্দ্র বারাণসীকে ডেকে নিয়ে গিয়ে শিক্ষা মন্ত্রক জাতীয় শিক্ষা নীতি সম্পর্কে তিন দিনের সম্মেলন আয়োজন করছে। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু সেই শিক্ষা সঙ্গমেই আজ প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষাকে তার সঙ্কুচিত গণ্ডির বাইরে নিয়ে এসে একবিংশ শতাব্দীর চিন্তাভাবনার সঙ্গে মেলাতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, “আমাদের দুর্ভাগ্য যে এমন ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, যেখানে পড়াশোনার অর্থ কেবল চাকরি। গোলামির সময়ে ব্রিটিশরা নিজেদের প্রয়োজন মেটাতে সেবক বর্গ তৈরি করতে করেছিল। স্বাধীনতার পরে এতে সামান্য রদবদল হয়েছিল। কিন্তু পুরোপুরি বদল হয়নি। ব্রিটিশদের তৈরি ব্যবস্থাভারতের মূল চরিত্রের অংশ ছিল না, হতে পারে না।”
বিরোধীদের কটাক্ষ, প্রধানমন্ত্রী বছরে ২ কোটি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়ে পূরণ করতে পারেনি। এখন পড়াশোনা করেও চাকরির আশা না করাই ভাল, সেটাই ঠারে ঠারে বুঝিয়ে দিতে চাইছেন। কংগ্রেস নেত্রী প্রিয়ঙ্কা গান্ধী বঢরার বক্তব্য, “শুধু জুন মাসে ১.৩ কোটি মানুষ রোজগার হারিয়েছেন। গত ১২ মাসে কর্মসংস্থানের হার সর্বনিম্ন। ২০২২-এ স্টার্ট-আপ সংস্থা থেকে ১২ হাজার মানুষের চাকরি গিয়েছে। এ দিকে কেন্দ্রীয় সরকারের ৩০ লক্ষ পদ খালি পড়ে রয়েছে। বিজ্ঞাপনবীর বিজেপি সরকারের কাছে দেশের তরুণদের জন্য নতুন নতুন জুমলা রয়েছে। কিন্তু চাকরি নেই।”
প্রধানমন্ত্রী অবশ্য শিক্ষাবিদদের বলেছেন, শুধু ডিগ্রিধারী যুবক তৈরি না করে, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রয়োজন মতো মানব সম্পদ তৈরি করতে হবে। পড়ুয়াদের পছন্দ মাফিক তাদের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ দিতে হবে। এ দেশের শিক্ষাকে আন্তর্জাতিক মানে নিয়ে যেতে হবে। জাতীয় শিক্ষা নীতি তারই ভিত তৈরি করবে। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য, জাতীয় শিক্ষা নীতি মাতৃভাষায় উচ্চশিক্ষার সুযোগ করে দিচ্ছে। আবার প্রাচীন ভাষা সংস্কৃতকেও এগিয়ে নিয়েযাওয়া হচ্ছে।
কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিল্পের চাহিদা মতো শিক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে। মোদীর বক্তব্য, তিনি গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পরে সচিবদের ডেকে বলেচিলেন, তাঁরাই যে যাঁর দফতরের মুখ্যমন্ত্রী। পাঁচ বছরে কে কী করবেন, আমজনতার জীবনে কী প্রভাব পড়বে, তা বিশদে জানাতে হবে। শিল্পের উন্নয়নের রূপরেখা তৈরির পরে শিক্ষাসচিব তাঁকে এসে বলেন, শিক্ষা ও শিল্প, দু’টি দু’দিকে চলেছে। শিল্প যা চাইছে, সেই অনুযায়ী শিক্ষা ব্যবস্থায় পরিবর্তনের লক্ষ্য নিতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy