E-Paper

৮০ টাকা করে দিয়েই কি ভুয়ো ভোটার-বাদ আর্জি

লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী সম্প্রতি অভিযোগ তোলেন, কর্নাটকে ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে আলন্দ কেন্দ্রে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে ৬ হাজারের মতো ভোটারের নাম কাটার চেষ্টা হয়েছিল।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:১৪

—প্রতীকী চিত্র।

অনলাইন পোর্টালে ভোটার তালিকা থেকে এক-একটা নাম কাটানোর আবেদন করার পারিশ্রমিক ৮০ টাকা! ২০২২ সালের ডিসেম্বর থেকে ২০২৩ সালের ফেব্রুয়ারির মধ্যে কর্নাটকের আলন্দ বিধানসভা কেন্দ্রের ৬০১৮ জন ভোটারের নাম বাদ দেওয়ার আবেদনপত্র জমা পড়ে গিয়েছিল তাঁদের অজানতেই। নাম-পিছু ৮০ টাকার হিসাবে প্রায় ৪.৮ লক্ষ টাকা পারিশ্রমিকে এই জালিয়াতির ভার দেওয়া হয়েছিল দক্ষিণী রাজ্যটিরই এক ডেটা সেন্টার অপারেটরকে। তদন্তে নেমে তারা এমনই তথ্য পেয়েছে বলে জানিয়েছে কর্নাটক পুলিশের বিশেষ তদন্তকারী দল (সিট)। গত সপ্তাহে সুভাষ গুট্টেদার নামে কর্নাটকের এক বিজেপি নেতার বাড়িতে তল্লাশিও চালায় সিট। ২০২৩ সালে আলন্দ আসনেই কংগ্রেসের বি আর পাটিলের কাছে হেরে গিয়েছিলেন চার বারের বিধায়ক সুভাষ।

লোকসভার বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী সম্প্রতি অভিযোগ তোলেন, কর্নাটকে ২০২৩-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে আলন্দ কেন্দ্রে কংগ্রেসের শক্ত ঘাঁটিতে ৬ হাজারের মতো ভোটারের নাম কাটার চেষ্টা হয়েছিল। এই তদন্তে সিটের নজরে ছিল কলবুর্গী জেলা সদরের একটি তথ্যকেন্দ্র বা ডেটা সেন্টার। সিটের সন্দেহ, নাম বাদের ভুয়ো আবেদনগুলি জমা দেওয়া হয়েছিল সেখান থেকেই। সূত্রের মতে, এখানে গোয়েন্দাদের নজরে ছিলেন মহম্মদ আশফাক নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা। তিনি এবং মহম্মদ আক্রম নামে এক ব্যক্তি ডেটা সেন্টারটি চালাতেন। ২০২৩ সাল থেকেই আশফাক এই নাম বাদ দেওয়ার কাজে জড়িত থাকতে পারেন বলে গোয়েন্দাদের সন্দেহ। আশফাক অবশ্য নিজেকে নির্দোষ দাবি করার পাশাপাশি সমস্ত বৈদ্যুতিন যন্ত্র জমা দেওয়ার অঙ্গীকার করেছিলেন। পরে তিনি দুবাইয়ে চলে যান। যদিও অভিযোগ, আক্রম, জুনেদ, আলম ও নাদিম নামে চার সহযোগীর সঙ্গে ইন্টারনেট কলের মাধ্যমে যোগাযোগ রেখেছিলেন আশফাক।

১৭ অক্টোবর বিজেপি নেতা সুভাষ, তাঁর দুই ছেলে এবং হিসাবরক্ষকের বাড়িতে সিট তল্লাশি চালায়। সাতটিরও বেশি ল্যাপটপ ও মোবাইল তারা বাজেয়াপ্ত করে। জালিয়াতির ‘পারিশ্রমিক’-এর টাকার উৎসও খুঁজছে সিট। প্রাথমিক ভাবে সিটের তদন্তে জানা গিয়েছে, নির্বাচন কমিশনের পোর্টালের মাধ্যমে ভোটার তালিকায় বদলের আর্জি জানাতে যে নথিভুক্তির প্রয়োজন হয়, আলন্দ আসনের ক্ষেত্রে সেই কাজে অন্তত ৭৫টি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হয়েছিল। নম্বরগুলির মালিকদের মধ্যে পোলট্রি মালিক থেকে শুরু করে পুলিশকর্মীর আত্মীয়ের মতো ব্যক্তিরা রয়েছেন। অথচ দেখা গিয়েছে, ওই ব্যক্তিরা এ বিষয়ে কিছু জানেন না। যাঁদের নাম বাদের আবেদন জমা পড়েছিল, অন্ধকারে ছিলেন তাঁরাও। শেষে দেখা যায়, নাম বাদের ৬০১৮টি আর্জির মধ্যে মাত্র ২৪টির সারবত্তা রয়েছে, কারণ তাঁরা আর ওই এলাকায় থাকেন না। সিট বুঝতে চাইছে, কমিশনের পোর্টালে ঢুকে এমন বেআইনি কাজ করা কী ভাবে সম্ভব ডেটা সেন্টার অপারেটরদের পক্ষে?

কংগ্রেস নেতা পবন খেরার দাবি, ভোট চুরি যে সংগঠিত অপরাধই ছিল, এ বার তা প্রমাণিত। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপির আমলে ভোটদানের পবিত্র অধিকার মাথা-পিছু ৮০ টাকার পণ্য হয়ে দাঁড়াচ্ছে। সরকারের কাছে এ অসম্মানের।’’ বিজেপি নেতা সুভাষের দাবি, এই অনিয়মে তাঁর কোনও যোগ নেই। তাঁকে হারানো বি আর পাটিল মন্ত্রী হতে চান বলে এ সব অভিযোগ তুলছেন।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Voter List Controversy Karnataka

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy