রেল-সূত্রেই জানা গিয়েছিল, গত শনিবার নয়াদিল্লি স্টেশনে পদপিষ্ট হয়ে ১৮ জনের মৃত্যুর দিনে অসংরক্ষিত বা জেনারেল টিকিট বিক্রি হয়েছিল দশ হাজারের বেশি। অথচ আগের কয়েক দিনেই এই সংখ্যাটাই ছিল প্রায় অর্ধেক। আজ এক জনস্বার্থ মামলায় দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ প্রশ্ন তুলল, ট্রেনের কামরার ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি সংখ্যায় টিকিট কেন বিক্রি করবেন রেল কর্তৃপক্ষ? নয়াদিল্লি স্টেশনের ঘটনার মতো বিপর্যয় ঠেকাতে কেন্দ্রীয় সরকার, ভারতীয় রেল এবং রেলওয়ে বোর্ড সুরক্ষা সংক্রান্ত কী পদক্ষেপ করেছে, তা জানতে চেয়েছে আদালত।
নয়াদিল্লি স্টেশনের মতো ঘটনা ঠেকাতে প্রয়োজনীয় সুরক্ষা ব্যবস্থার আর্জি জানিয়ে জনস্বার্থ মামলাটি করেছে আইনজীবী, উদ্যোগপতি ও অন্য পেশাদারদের একটি সংগঠন। তারই শুনানিতে দিল্লি হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি কে উপাধ্যায় এবং বিচারপতি তুষার রাও গেডেলার বেঞ্চ আজ রেলের উদ্দেশে বলেছে, ‘‘একটি কামরায় কত সংখ্যক যাত্রী উঠবেন, তা বেঁধে দেওয়া হলে ওই সংখ্যার অতিরিক্ত টিকিট কেন বিক্রি করা হবে? এটি একটি সমস্যা।’’
এই প্রসঙ্গে বিচারপতিরা রেলওয়ে আইনের ৫৭ নম্বর ধারাটি উদ্ধৃত করেন, যেখানে রেলের কামরার সর্বোচ্চ যাত্রীসংখ্যা বেঁধে দেওয়ার বিষয়টিকে প্রশাসনের তরফে বাধ্যতামূলক বলা হয়েছে। আদালত রেলকে বলেছে, ‘‘কখনও কখনও ভিড় বেড়ে যাওয়ার অবস্থা তৈরি হয়। তখন সেই ভিড়কে জায়গা করে দিতে আপনারা কামরার যাত্রীসংখ্যা বাড়াতে পারেন। কিন্তু একটি কামরায় কত জন যেতে পারবেন,
তা নির্দিষ্ট করে দেওয়ার বিষয়টি আগাগোড়া অবহেলিত হয়েছে বলেই মনে হচ্ছে।’’
মামলাকারীদের আইনজীবী আদিত্য ত্রিবেদী বলেন, বিমানবন্দরের ভিতরে কত লোক রয়েছে, তা জানার পরিকাঠামো আছে। ভারতীয় রেলের তা নেই। অসংরক্ষিত শ্রেণির ক্ষেত্রে কোনও নির্দেশিকাও জারি করা হয়নি। রেল তার নিজের আইনই না মানলে কী ভাবে তার কাছ থেকে সুরক্ষা আশা করা যাবে?
রেলের তরফে সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা বলেন, ‘‘এটি আইন। তা মানার জন্য কোনও নির্দেশ লাগবে না।’’ অসংরক্ষিত শ্রেণির টিকিট বিক্রি নিয়ে মেহতা বলেন, ‘‘এ বিষয়ে ইতিমধ্যেই একটি নির্দেশিকা রয়েছে। তবু কিছু গরিব মানুষ এসে বসে পড়েন। রেল এই বিষয়টি খতিয়ে দেখবে।’’ পরবর্তী শুনানি ২৬ মার্চ।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)