Advertisement
২১ মে ২০২৪

মোদীকে রুখতে ছক রাহুলের

গুজরাতে গ্রাম জয় করলেও শহরেই পিছিয়ে পড়েছিল কংগ্রেস। সামনের কর্নাটক নির্বাচনে তারই মেরামতে নামলেন কংগ্রেস সভাপতি।

রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।

রাহুল গাঁধী। —ফাইল চিত্র।

দিগন্ত বন্দ্যোপাধ্যায়
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০৫:২৩
Share: Save:

মনমোহন সিংহের সঙ্গে পরামর্শ করে এ বার শহরের ভোট হাসিলের জন্য ঘুঁটি সাজাচ্ছেন রাহুল গাঁধী। গুজরাতে গ্রাম জয় করলেও শহরেই পিছিয়ে পড়েছিল কংগ্রেস। সামনের কর্নাটক নির্বাচনে তারই মেরামতে নামলেন কংগ্রেস সভাপতি।

কংগ্রেস সূত্রের মতে, গুজরাতের ফল প্রকাশের পরে মনমোহনই রাহুলকে বলেছেন শহরে আরও জোর দিতে। মনমোহনের যুক্তি, ২০০৯ সালে লোকসভা নির্বাচনে কংগ্রেস শহর এলাকায় ভাল ফল করেছিল। ৫৭টি বড় শহরের মধ্যে ৩৪টিতেই জিতেছিল দল। আধাশহরের সিংহভাগও গিয়েছিল কংগ্রেসের ঝুলিতেই। ফলে পরিকাঠামো উন্নত করলে শহরেও বাজিমাত করা সম্ভব।

মনমোহনের পরামর্শের পরেই কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে দিল্লিতে ডেকে পাঠান রাহুল। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জানতে চান, শহরের ভোট পেতে তাঁর রণকৌশল কী। কংগ্রেস সূত্রের মতে, মুখ্যমন্ত্রী দলের সভাপতিতে জানান, শহরে ‘অন্নভাগ্য’ প্রকল্পে চাল বিতরণ করা হয়। ‘ইন্দিরা ক্যান্টিন’ও যথেষ্ট জনপ্রিয়। সেখানে ৫ টাকায় প্রাতঃরাশ আর ১০ টাকায় মধ্যাহ্নভোজের সুবিধা রয়েছে। এ ছাড়াও শহরের উন্নয়নের পরিকাঠামোও তৈরি হয়েছে।

কিন্তু সেটি পর্যাপ্ত নয় বলেই মনে করছেন কংগ্রেস নেতৃত্ব। কারণ, ‘ইন্দিরা ক্যান্টিন’-এ শহরের গরিবরা সস্তায় খাবারের সুবিধা পান ঠিকই। তবে তাঁদের সিংহভাগ ভিন রাজ্য থেকে আসা কর্মী, যাঁদের ভোটও নেই কর্নাটকে। কংগ্রেসের এক নেতা জানান, রাহুল নির্দেশ দিয়েছেন, শহরের ভোটারদের পেশা অনুযায়ী একটি তালিকা তৈরি করতে। সেই তালিকা ধরে দলের বিভিন্ন মোর্চাকে ঝাঁপাতে বলেছেন কংগ্রেস সভাপতি। যুবকদের জন্য আলাদা কর্মসূচিও তৈরি করতে বলেছেন।

প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরমের মতে, ‘‘রাহুল গাঁধীর নেতৃত্বে নরেন্দ্র মোদীর গড় গুজরাত কংগ্রেস প্রায় জিতেই ফেলেছিল। প্রায় ৫০ হাজার বুথের মধ্যে মাত্র ১২টি-তে কংগ্রেস যদি ২০১৪ সালের লোকসভার সমান ভোট পেয়ে যেত, তা হলে দল অনায়াসে আরও ৫টি আসন পেতে পারত। ২০১৪ তে এমনিতেই কম ভোট পেয়েছিল কংগ্রেস। হাতে গোনা কিছু ভুল না হলে কংগ্রেস এ বার জিতে যেত গুজরাতে। আর এনসিপি-র সঙ্গে জোট হলে বাড়ত আরও একটি আসন।’’

গুজরাতের ৪২টি শহুরে কেন্দ্রের মধ্যে ৩৬টিই বিজেপি পেয়েছে। কংগ্রেসের ঝুলিতে গিয়েছে মাত্র ৬টি। কর্নাটকে শহর এলাকায় নির্বাচনী কেন্দ্রের সংখ্যা একশোর মতো। সেখানে প্রায় পৌনে দুই কোটি ভোটার রয়েছে। শহর এলাকায় এমনিতেই মোদীর দাপট রয়েছে। গুজরাতে সরকার ধরে রাখার জন্য শহরই পরিত্রাতা হয়ে উঠেছিল মোদীর কাছে।

সামনের ভোটে সেই অস্ত্রটি ভোঁতা করতে এখন থেকেই ঝাঁপাচ্ছেন রাহুল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE