দিল্লির নেহরু প্লেস। মোবাইল, ল্যাপটপ কেনাবেচা ও মেরামতির প্রধান বাজার। সেই নেহরু প্লেসে হাজির হয়ে মোবাইল-ল্যাপটপ সারানোর কাজে নিযুক্ত কর্মীদের সঙ্গে বসে রাহুল গান্ধী আজ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নিয়ে প্রশ্ন তুললেন।
রাহুলের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী স্লোগানের শিল্প করায়ত্ত করেছেন। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-য় শিল্পক্ষেত্রে কারখানা উৎপাদন তুঙ্গে উঠবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। অথচ কারখানা উৎপাদন এখন তলানিতে। তরুণদের মধ্যে বেকারত্ব তুঙ্গে। চিন থেকে আমদানি দ্বিগুণ হয়েছে। মোদীজি এর কোনও সমাধান করতে পারেননি। ২০১৪ থেকে অর্থনীতিতে কারখানা উৎপাদনের ভাগ ১৪ শতাংশে নেমে এসেছে। কারখানা উৎপাদনে গতি আনতে যে উৎসাহ ভাতা বা পিএলআই (প্রোডাকশন লিঙ্কড ইনসেন্টিভ) প্রকল্প চালু হয়েছিল, তা চুপচাপ গুটিয়ে ফেলা হচ্ছে।
নেহরু প্লেসে গিয়ে শিবম ও সইফ নামের দুই মোবাইল-ল্যাপটপ মেরামতির কাজে নিযুক্ত তরুণের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল। তাঁরা জানান, ছোট ছোট যন্ত্রাংশ সবই চিন থেকে আসছে। ইলেকট্রনিক পণ্যের বাজার পুরোটাই চিনের নিয়ন্ত্রণে। রাহুল গান্ধী বলেন, এখানে যন্ত্রাংশ নিয়ে এসে জুড়ে দেওয়া হচ্ছে বা ‘অ্যাসেম্বল’ করা হচ্ছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ ও ‘অ্যাসেম্বলড ইন ইন্ডিয়া’-র মধ্যে ফারাক রয়েছে। ভারতে যন্ত্রাংশ আমদানি করে জোড়া হচ্ছে। চিনের মুনাফা হচ্ছে। যন্ত্রাংশ তৈরি হচ্ছে না। ফলে কর্মসংস্থানও হচ্ছে না।
রাহুলের অভিযোগের পরে বিজেপির আইটি সেলের প্রধান অমিত মালবীয় পাল্টা যুক্তি দিয়েছেন, ভারত এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল নির্মাণকারী দেশ। ২০১৪-তে দেশে মাত্র দু’টি মোবাইল কারখানা ছিল। এখন ৩০০টি মোবাইল কারখানা হয়েছে। ইলেকট্রনিক পণ্যের উৎপাদন মূল্য ১৮,৯০০ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৪ লক্ষ ২২ হাজার কোটি টাকায় পৌঁছেছে। পিএলআই প্রকল্পে ১০,৯০৫ কোটি টাকার লগ্নি এসেছে। মোট ৭.১৫ লক্ষ কোটি টাকার উৎপাদন হয়েছে। ৩.৯লক্ষ কোটি টাকা মূল্যের পণ্য রফতানি হয়েছে।
কংগ্রেসের পাল্টা যুক্তি, ২০১৩-১৪-তে দেশের জিডিপি-তে কারখানা উৎপাদনের ভাগ ১৬.৭ শতাংশ ছিল। মোদী সরকারের দশ বছরে ২০২২-২৩ সালে তা ১৪ শতাংশে নেমেএসেছে। এ থেকেই বোঝা যায়,‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ প্রকল্প‘ফ্লপ’ করেছে। নেহরু প্লেসে আলাপচারিতায় রাহুল বলেন, ‘‘আমাদের অন্য দেশের পণ্যের বাজার হয়ে থাকলে চলবে না। আমাদের নিজেদের পণ্য উৎপাদন করতে হবে। না হলে আমরা অন্য দেশের থেকে পণ্য কিনতেই থাকব।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)