পাশাপাশি দু’টি বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। একটি খোলা মাঠে। অন্যটি সেই মাঠের পাশে একটি ‘ম্যারেজ হলে’। খোলা মাঠে প্যান্ডেল করে যে বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল, সেটি একটি হিন্দু পরিবারের। আর ‘ম্যারেজ হলে’ যে বিয়ের আসর বসেছিল সেটি একটি মুসলিম পরিবারের। দুই অনুষ্ঠান বাড়িতেই তখন বিয়ে ঘিরে হইহুল্লোড় চলছিল।
খোলা মাঠে ছাঁদনাতলায় তখন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছিলেন নরেন্দ্র এবং সংস্কৃতি কাউরে পাটিল। বিয়ের রীতি-রেওয়াজ শুরু হতেই ঝোড়ো হাওয়া বইতে শুরু করে। তার পর আচমকাই ঝমঝমিয়ে বৃষ্টি নামে। ঝোড়ো হাওয়া আর বৃষ্টিতে বিয়ের আসর লন্ডভন্ড হয়ে যায়। মাঝপথে থেমে যায় নরেন্দ্র-সংস্কৃতির বিয়ে। দুর্যোগের জন্য তো আর বিয়ে থেমে থাকতে পারে না! কিন্তু উপায়? বর-কনের পরিবারের লোকজন যখন এই দুশ্চিন্তায় ডুবে, তখন তাঁদের খেয়াল হয় পাশের ‘ম্যারেজ হলের’ কথা। কিন্তু সেখানে তখন বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হচ্ছিলেন মাহিন এবং মহসীন কাজি।
নরেন্দ্রর পরিবার কাজী পরিবারের কাছে অনুরোধ জানায় বিয়ে সম্পন্ন করার জন্য ‘ম্যারেজ হলে’ জায়গা পাওয়া যাবে কি না। কাজী পরিবারের সদস্যের হাসিমুখে পাটিল পরিবারের সদস্যদের সেই অনুরোধ মেনে নেন। তার পর সেই ‘ম্যারেজ হলে’ই পাশাপাশি মহিন-মহসীন এবং নরেন্দ্র-সংস্কৃতির বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়। ঘটনাটি মহারাষ্ট্রের পুণের।
পাটিল পরিবারের এক সদস্য বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওয়ানওরি এলাকায় বিয়ের অনুষ্ঠান চলছিল। হঠাৎই ঝড়-বৃষ্টি শুরু হয়ে যায়। সব লন্ডভন্ড হয়ে যায়। বিয়ের মণ্ডপ ভেঙে পড়ে। তখন কাজী পরিবারের কাছে আমরা গিয়ে অনুরোধ জানাই। ওরাও রাজি হয়ে যায়। ওদের মণ্ডপেই বিয়ের ব্যবস্থা করে দেয়। আমরা কৃতজ্ঞ।’’বৃষ্টি এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে দুই ভিন্ন সম্প্রদায়কে একই ছাদের তলায় এনে দাঁড় করাল। সম্প্রীতির এক দারুণ দৃশ্যের সাক্ষী থাকল পুণে। ‘খলনায়ক’ হয়ে হাজির হওয়া বৃষ্টিই সম্প্রীতির এই দৃশ্যের পটভূমি তৈরি করে যেন ‘নায়কের’ ভূমিকায় অবতীর্ণ হল।