মুম্বইয়ের মাজাগাঁও ডকে আইএনএস খান্ডেরিকে আনুষ্ঠানিক ভাবে জলে নামানোর অনুষ্ঠান, বৃহস্পতিবার। ছবি: এএফপি।
জলে নামল ভারতীয় নৌসেনার দ্বিতীয় স্করপেন সাবমেরিন। মুম্বইয়ের মাজাগাঁও ডক থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই ডিজেল-ইলেকট্রিক অ্যাটাক সাবমেরিনটিকে বৃহস্পতিবার জলে নামানো হয়েছে। আজ থেকেই শুরু হয়ে যাচ্ছে আইএনএস খান্ডেরি নামে এই অ্যাটাক সাবমেরিনের পরীক্ষামূলক সমুদ্রযাত্রা। টর্পেডো এবং অ্যান্টি-শিপ মিসাইল ব্যবহার করে হামলা চালাতে সক্ষম এই ডুবোজাহাজ।
ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে মোট ছ’টি স্করপেন ক্লাস সাবমেরিন তৈরি করছে ভারত। মোট খরচ ৩০০ কোটি ডলার। এই গোত্রের প্রথম সাবমেরিন আইএনএস কলবরী গত বছরই ভারতীয় নৌসেনার হাতে এসেছে। কলবরীর পরীক্ষামূলক অভিযান প্রায় শেষ পথে। সেটি খুব শীঘ্রই ভারতীয় নৌসেনায় কমিশনড হবে। তার মধ্যেই দ্বিতীয় স্করপেন ক্লাস অ্যাটাক সাবমেরিন আইএনএস খান্ডেরি নৌসেনার হাতে চলে এল। প্রতিরক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ ভামরে এবং নৌসেনার প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লানবার উপস্থিতিতে বৃহস্পতিবার আইএনএস খান্ডেরি আনুষ্ঠানিক ভাবে জলে নেমেছে। এ বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত এই ডিজেল-ইলেকট্রিক অ্যাটাক সাবমেরিনটি বিভিন্ন পরীক্ষামূলক অভিযানে অংশ নেবে। তার পরই সেটিকে নৌসেনায় কমিশন করা হবে। স্করপেন ক্লাসের বাকি চারটি সাবমেরিনের নির্মাণ কাজও দ্রুত এগোচ্ছে। ন’মাস পর তৃতীয় সাবমেরিনটি জলে নামবে বলে খবর। তার পর থেকে প্রতি ন’মাস অন্তর বাকি তিনটিকেও একে একে জলে নামানো হবে।
আরব সাগরে নামছে ভারতের দ্বিতীয় স্করপেন সাবমেরিন আইএনএস খান্ডেরি। ছবি: পিটিআই।
ভারতীয় নৌসেনায় কমিশনড সাবমেরিনের সংখ্যা এই মুহূর্তে মোট ১৫। সেগুলির মধ্যে ১৩টি হল ডিজেল-ইলেকট্রিক অ্যাটাক সাবমেরিন। বাকি ২টি নিউক্লিয়ার অ্যাটাক সাবমেরিন। ভারত মহাসাগরীয় জলভাগের আশেপাশে অবস্থিত প্রায় সব দেশই সাবমেরিন বহরের নিরিখে ভারতের চেয়ে অনেক পিছিয়ে। কিন্তু চিনের মোকাবিলার জন্য ভারতীয় নৌসেনার আরও কিছু সাবমেরিন প্রয়োজন। সে কথা মাথায় রেখেই ফ্রান্সের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে ৬টি স্করপেন সাবমেরিন তৈরির প্রকল্প হাতে নেয় ভারত।
দেখুন গ্যালারি: ভারতের ‘ভয়ঙ্কর’ সাবমেরিন বাহিনী
২০১৬-র সেপ্টেম্বরে স্করপেন সাবমেরিন খবরের শিরোনামে এসেছিল। এই সাবমেরিনগুলি সম্পর্কে বিভিন্ন গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে গিয়েছিল এবং তা অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিতও হয়েছিল। তা নিয়ে প্রবল তোলপাড় শুরু হয়। তবে ভারতীয় নৌসেনা বলছে, স্করপেন সংক্রান্ত গোপন তথ্য ফাঁস হয়ে গেলেও, তাতে এই সাবমেরিনের সক্ষমতা কোনও ভাবেই কমে যায় না। স্করেপন ক্লাস সাবমেরিনগুলি একে একে জলে নামতে শুরু করায় ভারতীয় নৌসেনার সক্ষমতা দ্রুত বাড়ছে বলে নৌসেনা মনে করছে।
ভারতের প্রথম স্করপেন সাবমেরিন আইএনএস কলবরী। ছবি: সংগৃহীত।
স্করপেন সাবমেরিন লুকিয়ে হামলা চালাতে অত্যন্ত পারদর্শী। পৃথিবীর অধিকাংশ ডিজেল-ইলেকট্রিক সাবমেরিনেরই সে ক্ষমতা নেই। জলের তলা দিয়ে যাতায়ত করলেও, সেগুলির যাতায়াত খুব একটা নিঃশব্দ নয়। তাই প্রতিপক্ষ সহজেই সাধারণ সাবমেরিনের গতিবিধি আঁচ করতে পারে। স্করপেন সাবমেরিনের গতিবিধি অনেক গোপন। ফলে এই সাবমেরিন প্রতিপক্ষকে চমকে দিয়ে হামলা চালাতে সক্ষম। স্করপেন থেকে টর্পেডো এবং অ্যান্টি-শিপ মিসাইল নিক্ষেপ করা যায়। জলের তলা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠ, দু’রকম অবস্থান থেকেই হামলা চালানোর সক্ষমতা রয়েছে স্করপেনের। এ ছাড়া গুপ্তচরবৃত্তি চালানো, সাবমেরিন-বিধ্বংসী যুদ্ধে অংশ নেওয়া এবং মাইন পাতার কাজেও স্করপেনের জুড়ি নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy