জম্মু-কাশ্মীরের তথ্য-পরিসংখ্যান সংগ্রহের অধিকার পেতে রাজ্যসভায় বিল পাশ করাল নরেন্দ্র মোদীর সরকার। বিলটি লোকসভায় পাশ হয়েছিল গত এপ্রিলেই। আজ সেটি রাজ্যসভায় পাশ করাতে গিয়ে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়তে হয় সরকার পক্ষকে। বিরোধীদের যুক্তি, সংবিধানের ৩৭০ ধারা অনুযায়ী জম্মু-কাশ্মীরকে যে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া রয়েছে, সরকারের আনা ‘পরিসংখ্যান সংগ্রহ (সংশোধনী) বিল, ২০১৭’ তার পরিপন্থী। এটা ওই রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপও বটে।
রাজ্যসভার বিরোধী দলনেতা তথা ওই রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী গুলাম নবি আজাদ অভিযোগ করেন, বিজেপি জম্মু-কাশ্মীরে ক্ষমতার শরিক হওয়া সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের সঙ্গে কেন্দ্র এই বিলটির বিষয়ে কোনও রকম আলোচনা করেনি। প্রশ্নটা বিলটির গুণমান নিয়ে নয়, সংবিধানে বলা বিশেষ মর্যাদার। যে কারণে, বিরোধী দলগুলি তো বটেই, বিজেপির জোটসঙ্গী পিডিপি-ও নেই কেন্দ্রের এই উদ্যোগের পাশে।
রাজ্যসভায় বিলটি এনে কেন্দ্রীয় পরিসংখ্যান মন্ত্রী ডি ভি সদানন্দ গৌড়া যুক্তি দেন, দেশের যাবতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা হয় তথ্য-পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে। দেশের আর সব অংশের তথ্য পাওয়ার ব্যবস্থা থাকলেও, শুধুমাত্র জম্মু-কাশ্মীর থেকে তা পাওয়ার ক্ষেত্রে একটা ‘আইনি শূন্যতা’ ছিল। সরকার শুধু সেই ফাঁকটুকুই পূরণ করতে এই বিল এনেছে। কংগ্রেসের জয়রাম রমেশ জানতে চান, জম্মু-কাশ্মীরের তথ্য পেতে কেন্দ্রের অসুবিধাটা কোথায় হচ্ছে? কংগ্রেসের পাশাপাশি, সিপিএম, সিপিআই, জেডিইউ-এর মতো দলের নেতারাও কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আসল উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেন। কংগ্রেসের গুলাম নবি হুঁশিয়ার করেন, গত ৩০ বছর ধরে জম্মু-কাশ্মীরের অবস্থা ভাল নয়। কাশ্মীরের বর্তমান অশান্ত পরিস্থিতির মধ্যে কেন্দ্রের এই চেষ্টার পরিণাম মারাত্মক হতে পারে। এর মধ্যেই হোয়াটসঅ্যাপে অল্পবয়সি মেয়েদের মধ্যে বার্তা ছড়াচ্ছে যে জম্মু-কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি কতটাই স্পর্শকাতর, মোদী সরকারের তা বোঝা উচিত। বিজেপির সাংসদ পাল্টা যুক্তি দেন, তথ্য-পরিসংখ্যানের ভিত্তিতেই অবস্থার উন্নতি ঘটতে পারে জম্মু-কাশ্মীরের।