শুল্ক ঘিরে কূটনৈতিক চাপানউতরের পরে সম্প্রতি ভারত প্রসঙ্গে সুর নরম করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এই আবহে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনার পথ আরও প্রশস্ত হচ্ছে। নয়াদিল্লির সরকারি সূত্রকে উদ্ধৃত করে সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, সোমবার রাতেই ভারতে আসছেন বাণিজ্যচুক্তি সংক্রান্ত মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রধান ব্রেন্ডন লিঞ্চ। মঙ্গলবার থেকেই বাণিজ্য নিয়ে আলোচনা শুরু হবে দু’দেশের।
ট্রাম্পের শুল্কনীতির জেরে ভারত এবং আমেরিকার মধ্যে বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে আলোচনা মাঝপথেই থমকে গিয়েছে। অতীতে ভারত এবং আমেরিকা উভয় দেশই বিভিন্ন সময়ে দাবি করেছে, তাদের মধ্যে আলোচনা অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। কিন্তু এর পরেও ভারতের উপরে প্রথমে ২৫ শতাংশ এবং পরে আরও ২৫ শতাংশ, মোট ৫০ শতাংশ হারে শুল্ক চাপিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। এশিয়ার অন্য দেশগুলির তুলনায় ভারতের উপর শুল্কের হার অনেক বেশি।
ট্রাম্পের নয়া শুল্কনীতিতে গোটা বিশ্বে ভারত ছাড়া একমাত্র ব্রাজ়িলের উপরেই ৫০ শতাংশ শুল্ক চাপানো হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, ভারতকে কখনও ‘মৃত অর্থনীতির’ দেশ, কখনও ‘শুল্কের মহারাজা’ বলেও খোঁচা দিয়েছেন আমেরিকা। তবে ভারতও কড়া বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছিল, আমেরিকার সিদ্ধান্ত অন্যায্য, অযৌক্তিক এবং অনর্থক। জাতীয় স্বার্থ সুরক্ষিত করতে ভারত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করবে বলেও জানিয়েছিল নয়াদিল্লি। এ ছাড়া প্রধানমন্ত্রী মোদীও বিভিন্ন বক্তৃতায় বুঝিয়ে দিয়েছেন, দেশীয় পণ্যের উপর গুরুত্ব দিচ্ছে নয়াদিল্লি।
আরও পড়ুন:
এই কূটনৈতিক টানাপড়েনের মাঝেই ভারতের প্রসঙ্গে সুর নরম করে ট্রাম্প মেনে নেন, ভারতের পণ্যে ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করা আদৌ সহজ ছিল না। শুল্কের জন্য যে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল ধরেছে, তা-ও মেনে নিয়েছেন তিনি। সম্প্রতি তিনি এ-ও জানিয়েছিলেন, বাণিজ্যের প্রতিবন্ধকতা কাটানোর জন্য তাঁর প্রশাসন ভারতের সঙ্গে কথাবার্তা চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি নিজেও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলতে চান, সে কথাও জানিয়েছিলেন ট্রাম্প। এর পরে প্রধানমন্ত্রী মোদীও সমাজমাধ্যমে লেখেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের অনুভূতি এবং আমাদের সম্পর্ক নিয়ে ওঁর ইতিবাচক বক্তব্যের প্রশংসা করছি। আমরা এর সম্পূর্ণ প্রতিদান দেব।’’ তার পর থেকেই অনুমান করা হচ্ছিল, বাণিজ্য নিয়ে দু’দেশের মধ্যে আলোচনার পথ পুনরায় প্রশস্ত হতে পারে। এরই মধ্যে এএনআই সূত্রে জানা যায়, সোমবার রাতেই ভারতে আসছেন বাণিজ্যচুক্তি সংক্রান্ত মার্কিন প্রতিনিধিদলের প্রধান।