বিহারের ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন (এসআইআর)-এর কাজে কোনও বেআইনি পদ্ধতি ধরা পড়লে, গোটা প্রক্রিয়াই বাতিল করে দেওয়া হবে। সোমবার এমনটাই জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই মামলার চূড়ান্ত রায় দেশব্যাপী এসআইআর-এর জন্যই কার্যকর হবে বলে স্পষ্ট করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ।
গত শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, এসআইআর-এর প্রক্রিয়ায় আধার কার্ডকে ব্যক্তিপরিচয়ের প্রামাণ্য নথি হিসাবে ব্যবহার করতে হবে। ওই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আর্জি জানানো হয় সোমবার। তবে এখনই ওই নির্দেশ পরিবর্তন করছে না শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, আগামী ৭ অক্টোবর এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে। মামলাকারীদের আইনজীবীরা অনুরোধ করেছিলেন, যাতে ১ অক্টোবর (চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশের দিন)-এর আগে এক দিন শুনানি হয়। তবে দশেরার জন্য আদালতে ছুটি থাকার কারণে সেই অনুরোধ গ্রহণ করেনি শীর্ষ আদালত। তবে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট করে দিয়েছে, চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ হলেও কোনও সমস্যা হবে না। ভোটার তালিকা চূড়ান্ত হোক বা না-হোক, কোনও বেআইনি প্রক্রিয়া ধরা পড়লেই আদালত গোটা প্রক্রিয়া বাতিল করে দেবে।
আগামী ৭ অক্টোবরই এই মামলার চূড়ান্ত শুনানি হবে বলে জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। আদালত এ-ও স্পষ্ট করে দিয়েছে, এই মামলার চূড়ান্ত রায় শুধু বিহারের জন্য হবে না। দেশব্যাপী এসআইআর-এর কাজের জন্যই এই রায় কার্যকর হবে। এর আগে বিহারের এসআইআর সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, ব্যক্তি পরিচয়ের প্রামাণ্য নথি হিসাবে আধার কার্ডকে ব্যবহার করা যাবে। এই নিয়ম আপাতত শুধু বিহারের জন্যই। শীর্ষ আদালত এ-ও স্পষ্ট জানায়, আধার কার্ড কখনওই নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। শুধু ভোটার তালিকায় নাম তোলার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারে আধার কার্ড।
আরও পড়ুন:
আদালতের ওই নির্দেশ পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়েছিল সোমবার। মামলার একটি পক্ষের আইনজীবী অশ্বিনী উপাধ্যায়ের দাবি, আধার শুধুই একটি পরিচয়পত্র। এটি নাগরিকত্ব, বয়স বা ঠিকানার পরিচয় বহন করে না। তাই এসআইআর-এর জন্য প্রয়োজনীয় নথি হিসাবে এটিকে বিবেচনা করা যায় না বলেই আদালতে সওয়াল করেন তিনি। তাঁর বক্তব্য, অন্য ১১টি নথির সঙ্গে আধারকে যুক্ত করা আইনের পরিপন্থী। কারণ, বিদেশি নাগরিকদের কাছেও আধার নথি থাকতে পারে। তাই পূর্বের নির্দেশ পুনর্বিবেচনা করার আবেদন জানান তিনি। আইনজীবীর বক্তব্য, অন্যথায় বিপর্যয় ঘটতে পারে। তখন বিচারপতি বাগচী বলেন, “বিপর্যয় হবে কি হবে না— সে বিষয়ে কমিশনকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।”