আরএসএসের বিজয়া দশমী কর্মসূচিতে আত্মনির্ভরতার অস্ত্রে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুল্কবাণ মোকাবিলার বার্তা দিলেন সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবত। বৃহস্পতিবার নাগপুরের ওই কর্মসূচিতে তিনি বলেন, ‘‘নিবিড় যোগাযোগের বন্ধনে আবদ্ধ এই বিশ্বে বাণিজ্যিক সহযোগীর উপর ভারতকে যেন অসহায়ের মতো নির্ভর করতে না হয়।’’
কিন্তু কোন অস্ত্রে সেই ‘অসহায় নির্ভরতা’ অতিক্রম করা যাবে? আরএসএস প্রধানের গলায় শোনা গিয়েছে সেই ‘স্বদেশি মন্ত্র’। তাঁর কথায়, ‘‘দেশকে অবশ্যই দেশীয় উৎপাদনের উপর গুরুত্ব দিতে হবে। স্বদেশি পণ্য গ্রহণ এবং স্বনির্ভরতা অর্জনই একমাত্র উপায়। এর কোনও বিকল্প নেই।’’ সেই সঙ্গে তাঁর তাৎপর্যপূর্ণ মন্তব্য, ‘‘আত্মনির্ভর হতে পারলে তবেই ভারত তার ইচ্ছামতো পদক্ষেপ করতে পারবে।’’
ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে রাশিয়া থেকে তেল কেনার ‘অপরাধে’ ট্রাম্প সরকার ভারতীয় পণ্যের উপর জরিমানা-সহ ৫০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করায় রফতানি বাণিজ্যে ‘বড় ক্ষতির’ আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যদিও রাশিয়া থেকে তেল কেনা সত্ত্বেও চিনের উপর জরিমানা বসাননি ট্রাম্প। সেই পরিস্থিতির দিকে ইঙ্গিত করেই ভাগবতের এই মন্তব্য বলে মনে করছেন অনেকে। আত্মনির্ভরতা অর্জনে ব্যর্থ হলে বিদেশি হস্তক্ষেপের আশঙ্কা বাড়ে দাবি করে ভাগবত বৃহস্পতিবার নেপালে জেন জ়ির সাম্প্রতিক বিক্ষোভ ও ক্ষমতার পালাবদলের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।
ভারতের পড়শি দেশে এমন পরিস্থিতি ‘ভাল লক্ষণ নয়’ বলেও জানিয়েছেন আরএসএস প্রধান। তাঁর কথায়, ‘‘হিংসাত্মক বিক্ষোভ কেবল অরাজকতা সৃষ্টি করে।’’ প্রসঙ্গত, আরএসএসের এই কর্মসূচি প্রতি বছরই বিজয়া দশমীতে আয়োজিত হয়। বিজয়া দশমীতে সরসঙ্ঘচালক তাঁর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বার্ষিক ভাষণটিও দেন। কারণ, ১৯২৫ সালে কেশব বলিরাম হেডগেওয়ার বিজয়া দশমীতেই আরএসএস প্রতিষ্ঠার জন্য প্রথম বৈঠকটি করেছিলেন। প্রতি বছর বিজয়া দশমীতে সরসঙ্ঘচালকের ভাষণে বিগত বছরের সঙ্ঘীয় গতিবিধির বিশ্লেষণ থাকে, আসন্ন সময়ে সঙ্ঘের নীতিগত দিশা কী হতে চলেছে, তারও স্পষ্ট বিবৃতি থাকে। এ বার ভাগবতের বক্তৃতায় সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব পেল ট্রাম্পের ‘শুল্কবাণ’। বৃহস্পতিবার সঙ্ঘ-সদরে প্রধান অতিথি হিসেবে হাজির ছিলেন প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ।