হিন্দু সমাজকে একত্রিত করতে দেশে আগামী এক বছরে এক লক্ষ হিন্দু সম্মেলনের লক্ষ্যমাত্র স্থির করেছেন আরএসএস নেতৃত্ব। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ভাষা সংক্রান্ত বিতর্কে প্রতিটি আঞ্চলিক ভাষা রাষ্ট্রীর ভাষা হিসেবে ব্যাখ্যা করে প্রাথমিকে আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষা দেওয়ার উপরে জোর দিয়েছে সঙ্ঘ। পাশাপাশি, পশ্চিমবঙ্গের মতো সীমান্তবর্তী এলাকায় আরএসএসের সাংগঠনিক কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে বলেও স্বীকার করা হয়েছে।
এ বছর আরএসএস সংগঠনের শতবর্ষ হতে চলেছে। শতবর্ষ উদ্যাপনের রূপরেখা স্থির করতে সংগঠনের প্রান্ত প্রচারকদের নিয়ে গত শুক্রবার থেকে রবিবার পর্যন্ত বৈঠকে বসেন সঙ্ঘ নেতৃত্ব। আজ তিন দিনের সম্মেলনের বিষয়ে জানাতে গিয়ে দলের মুখপাত্র সুনীল অম্বেকরবলেন, ‘‘একশো বছর উপলক্ষে দেশের হিন্দু সমাজের ঐক্যের লক্ষ্যে প্রায় এক লক্ষ হিন্দু সম্মেলনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।’’ ওই সম্মেলনের লক্ষ্যই হল, হিন্দু সমাজের বিভাজন দূর করা। পাশাপাশি, প্রতিটি বাড়ি গিয়ে সঙ্ঘের মতাদর্শ প্রচার, সঙ্ঘ সাহিত্য বিতরণ করবেন দলীয় কর্মীরা।
গেরুয়া শিবিরের মতে, বিজেপির হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে ভাষাভিত্তিক, রাজ্যভিত্তিক ও জাতভিত্তিক বিভাজন ঘটাতে তৎপর রয়েছে কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধীরা। যার প্রভাব পড়ছে দলের হিন্দু ভোটে। লোকসভার সময়ে উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে হিন্দুদের একটি বড় অংশ বিজেপির বিপক্ষে ভোট দেয়। সেই ছবিটি পাল্টাতে সামগ্রিক ভাবে হিন্দু সমাজকে এক ছাতার তলায় আনতে হিন্দু সম্মেলনের সিদ্ধান্ত। এ ছাড়াও ব্লক পর্যায়ে সামাজিক সদ্ভাব বৈঠক করবে আরএসএস।
ভাষা শিক্ষা নিয়ে বিতর্কের মাঝে আজ আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষাদানের পক্ষে সওয়াল করেছে সঙ্ঘ। অম্বেকর বলেন, ‘‘আরএসএস মনে করে ভারতের প্রতিটি ভাষাই হল জাতীয় ভাষা।’’ রাজনীতিকদের মতে, ভাষা নিয়ে বিজেপি ও আরএসএসের মতে অবস্থানগত পার্থক্য রয়েছে। বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব যেখানে ত্রিভাষা শিক্ষানীতির মাধ্যমে দেশে হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার পক্ষপাতী, সেখানে আরএসএস আঞ্চলিক ভাষায় শিক্ষাদানে জোর দিতে চায়।
এ ছাড়া বৈঠকে যে বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা হয়েছে তাতে পশ্চিমবঙ্গের মতো সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে সংগঠনের কাজ করতে সমস্যা হচ্ছে বলে উঠে এসেছে। আজ প্রকাশ্যে অবশ্য কোনও রাজ্যের নাম নেননি অম্বেকর। তবে সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলিতে জনবিন্যাসের পরিবর্তনের ফলে সাংগঠনিক কাজে বাধা আসছে। এ ছাড়া মণিপুর প্রশ্নে অম্বেকর বলেন, ‘‘আগের চেয়ে মণিপুর এখন অনেক শান্ত। কর্মীরা ওখানে শান্তি ফেরাতেতৎপর রয়েছেন। তবে বড় মাত্রায় অশান্তি হয়েছিল মণিপুরে। তাই শান্তি ফিরতে সময় লাগবে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)