ভারতীয় ব্যবসায়ী ও সহারা ইন্ডিয়ার স্রষ্টা সুব্রত রায়। ছবি: পিটিআই।
সহারা ইন্ডিয়ার স্রষ্টা সুব্রত রায় প্রয়াত। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭৫ বছর। দীর্ঘ দিন ধরেই ক্যানসার-সহ একাধিক শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। গত ১২ নভেম্বর শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটায় তাঁকে মুম্বইয়ের কোকিলাবেন ধীরুভাই অম্বানী হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। সেখানেই মঙ্গলবার তিনি শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। রেখে গেলেন তাঁর স্ত্রী স্বপ্না রায়, দুই পুত্র সুশান্ত এবং সীমান্ত রায়কে।
সহারা ইন্ডিয়া পরিবারের পক্ষে বিবৃতি দিয়ে সুব্রতের মৃত্যুর খবর জানানো হয়েছে। বিবৃতিতে আরও জানানো হয়েছে, মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা নাগাদ তাঁর মৃত্যু হয়েছে। বহু দিন ধরেই ক্যানসার, উচ্চ রক্তচাপ, শ্বাসকষ্ট, মধুমেহ ছাড়াও হৃদযন্ত্রের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে সমাজমাধ্যমে শোকপ্রকাশ করেছে সমাজবাদী পার্টি (সপা)।
১৯৪৮ সালের ১০ জুন বিহারের আরারিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন সুব্রত। গোরক্ষপুর টেকনিক্যাল ইনস্টিটিউট থেকে তিনি মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক হন। ১৯৭৬ সালে ধুকতে থাকা চিটফান্ড সংস্থা ‘সহারা ফিনান্স’কে অধিগ্রহণ করেন। ১৯৭৮ সালে সেটি নাম বদলে হয় ‘সহারা পরিবার’। ক্রমেই ভারতের মানচিত্রে নিজেকে এক জন বিশিষ্ট ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেন তিনি। তাঁর হাত ধরেই আর্থিক প্রতিষ্ঠান, আবাসন শিল্প, সংবাদমাধ্যম এবং হোটেল ব্যবসা-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিল সহারা। ১৯৯২ সালে ‘রাষ্ট্রীয় সহারা’ নামে হিন্দি সংবাদপত্রের সূচনা করেন তিনি। এর কয়েক বছর পরেই হাত দেন তাঁর স্বপ্নের প্রকল্পে। পুণেতে ১০ হাজার একরেরও বেশি জায়গা জুড়ে শুরু করেন ‘অ্যাম্বি ভ্যালি প্রকল্প’। এর পরে তিনি একটি টিভি চ্যানেলও চালু করেন। লন্ডনের গ্রসভেনর হাউস হোটেল এবং নিউ ইয়র্কের প্লাজা হোটেলের মতো নামী হোটেলও অধিগ্রহণ করেন তিনি।
বিতর্কও পিছু ছাড়েনি তাঁর। ২০০২ সালে সেবি সুপ্রিম কোর্টে জানায় যে, সহারা গ্রুপ কোম্পানিজ বেআইনি ভাবে বাজার থেকে ৩৫০ কোটি ডলার তুলেছে। সহারা কর্তৃপক্ষ যদিও দাবি করেন, যে লক্ষ লক্ষ ভারতীয় ব্যাঙ্কিং পরিষেবার বাইরে ছিলেন, তাঁদের বিনিয়োগের সুযোগ করে দিয়েছিলেন তাঁরা। তবে যে তালিকা সহারা দিয়েছিল, তার মধ্যে বহু বিনিয়োগকারীর হদিশই মেলেনি। ২০১৪ সালের মার্চে জেলে পাঠানো হয় সহারা কর্তাকে। প্রায় দু’বছর জেলে থাকার পর ২০১৬ সালে প্যারোলে বেরিয়ে আসেন সুব্রত। সেই থেকে জেলের বাইরেই ছিলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy