Advertisement
E-Paper

ভারতের প্রত্যাঘাতের আগে ও পরে! উপগ্রহচিত্রে ধরা পড়ল পাকিস্তানের গুঁড়িয়ে যাওয়া জঙ্গিঘাঁটিগুলির বর্তমান চিত্র

গত ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জায়গায় জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করা হয়। বহাওয়ালপুর, মুরিদকে এবং সিয়ালকোট, মূলত এই তিন এলাকার জঙ্গিঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়াই ছিল সেনার মূল লক্ষ্য।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৫ ১৮:০৫
উপগ্রহচিত্র ধরা পড়ল হামলার আগে ও পরের দৃশ্য।

উপগ্রহচিত্র ধরা পড়ল হামলার আগে ও পরের দৃশ্য। ছবি: ভারতীয় সেনা।

পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহামলার প্রত্যাঘাত হিসাবে পাকিস্তান ও পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে গত ৭ এপ্রিল গভীর রাতে জবাবি হামলা চালায় ভারতের সশস্ত্র বাহিনী। অভিযানের নাম দেওয়া হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’। সেনাবাহিনীর দাবি, গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় পাকিস্তানের একাধিক জঙ্গিঘাঁটি। সেই ছবিই ধরা পড়েছে উপগ্রহচিত্রে।

কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত ওই ছবিগুলি প্রকাশ্যে এনেছে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী। আর তাতেই ধরা পড়েছে পাকিস্তানের বহাওয়ালপুর এবং মুরিদকেতে হামলার পরবর্তী চিত্র। পাশাপাশি, পাসরুরে পাক বিমান প্রতিরক্ষা রেডার এবং বিমানঘাঁটিগুলিতে ভারতের প্রত্যাঘাতী হামলার পরবর্তী ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। বহাওয়ালপুরের উপকণ্ঠে জাতীয় সড়কের ধারে প্রায় ১৫ একর জমি জুড়ে রয়েছে জইশ-ই-মহম্মদ (জেইএম)-এর প্রধান প্রশিক্ষণ এবং প্রচারকেন্দ্র। ২০০৮ সালে মুম্বইয়ে ২৬/১১ হামলার মূল পরিকল্পনাকারী মাসুদ আজ়হারের নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসবাদী সংগঠন জইশ-ই-মহম্মদের প্রশিক্ষণকেন্দ্রেই ছিল মারকাজ় শুভান আল্লা কমপ্লেক্স। ভারতের প্রত্যাঘাতের পর সেই ইমারতগুলি কার্যত ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। বহাওয়ালপুরে মোট চারটি ভবনকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হয়। হামলার পরের উপগ্রহচিত্রে দেখা যাচ্ছে, ভেঙে পড়েছে শুভান আল্লা মসজিদের তিনটি গম্বুজ। ইমারতের স্থানে স্থানে বিস্ফোরণের চিহ্ন স্পষ্ট। কোথাও ছাদের একাংশ ভেঙে পড়েছে। কোথাও আবার উড়ে গিয়েছে আস্ত বাড়ি।

রহিম ইয়ার খান এয়ারফিল্ডের উপগ্রহচিত্র।

রহিম ইয়ার খান এয়ারফিল্ডের উপগ্রহচিত্র। ছবি: ভারতীয় সেনা।

জইশের ঘাঁটির পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালানো হয় মুরিদকেতে লশকর-এ-ত্যায়বার ঘাঁটিতেও। মুরিদকে পাকিস্তানের অন্যতম প্রধান বাণিজ্যিক কেন্দ্র, সেখানেই প্রায় ২০০ একর জমি জুড়ে রয়েছে লশকর-এ-ত্যায়বার সদর দফতর। কেউ কেউ একে পাকিস্তানের ‘সন্ত্রাসের আঁতুড়ঘর’ও বলে থাকেন। হাফিজ় সঈদের নেতৃত্বাধীন এই সন্ত্রাসবাদী সংগঠন পহেলগাঁও হামলার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত বলেও মনে করছেন অনেকে। ৭ মে রাতে সেখানেও হামলা চালায় ভারতীয় বাহিনী। গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় চারটি ইমারত।

নুর খানের চকলালা এয়ারফিল্ড।

নুর খানের চকলালা এয়ারফিল্ড। ছবি: ভারতীয় সেনা।

পাকিস্তানের ড্রোন হামলার পর পাক-ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে অবস্থিত রেডার ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্য করে ফের পাল্টা হামলা চালায় ভারত। রফিকি, চকলালা, রহিম ইয়ার খান, সুক্কুর এবং সিয়ালকোটে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলা চালানো হয়। এয়ার মার্শাল একে ভারতী সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘১০ মে রাতে তিন ঘণ্টার মধ্যে একে একে নুর খান, রফিকি, মুরিদ, পাসরুর, চুনিয়ান, সারগোধা, স্কারু, ভোলারি এবং জ্যাকোবাবাদ-সহ ১১টি ঘাঁটিতে আক্রমণ করা হয়।’’ যদিও ভারতের প্রতিটি হামলাই সুনির্দিষ্ট মাপজোকের ভিত্তিতে করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।

গত ৭ মে গভীর রাতে পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জায়গায় জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করা হয়। এই ন’টি জায়গার মধ্যে চারটি পাকিস্তানে এবং পাঁচটি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে। বহাওয়ালপুর, মুরিদকে এবং সিয়ালকোট— মূলত এই তিনটি এলাকার জঙ্গিঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়াই ছিল সেনার মূল লক্ষ্য। এর পর একে একে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় কোটলি, গুলপুর, মেহমুনা জোয়া, মুজফ্‌ফরাবাদের সওয়াই নালা, বরনালা, সরজল, চক আমরু এবং বাগের জঙ্গিঘাঁটি। ওই সব জায়গায় বসেই ভারতে সন্ত্রাসবাদী হানার ছক কষা হয়েছিল বলে দাবি ভারতের। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, বিভিন্ন প্রযুক্তির ব্যবহার এবং প্রচুর সূত্র কাজে লাগিয়ে ওই ন’টি জায়গা চিহ্নিত করেছিল ভারতীয় গুপ্তচর সংস্থা। সেই তথ্য সেনার হাতে তুলে দেওয়া হয়। শুরু হয় ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর তোড়জোড়। তার পরেই রাতের বেলা সুযোগ বুঝে প্রত্যাঘাত করে ভারত। তবে তার পরেও উত্তেজনা কমেনি। পাল্টা আঘাত-প্রত্যাঘাতে এখনও অশান্ত ভারত-পাক সীমান্ত। সেই আবহে শনিবার বিকেলে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। সোমবার বৈঠকেও বসছেন দুই দেশের কর্তারা।

India Pakistan War Terrorist Camp Indian Army
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy