‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাল্টা হামলা চালিয়েছিল পাকিস্তান। প্রত্যাঘাত হিসাবে ফের পাক সেনার একাধিক বিমানঘাঁটি লক্ষ্য করে হামলা চালায় ভারতের সশস্ত্র বাহিনী। এ বার সেই ছবিই ধরা পড়ল উপগ্রহচিত্রে।
কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে প্রাপ্ত ওই ছবিগুলি প্রকাশ্যে এনেছে আমেরিকার সংস্থা ম্যাক্সার টেকনোলজিস। আর তাতেই ধরা পড়েছে পাকিস্তানের সরগোধার মুশাফ, রাওয়ালপিন্ডির নুর খান, উত্তর সিন্ধের সুক্কুর-সহ বিভিন্ন বিমানঘাঁটিতে হামলার চিত্র। পাক বিমান প্রতিরক্ষা রেডার এবং বিমানঘাঁটিগুলি লক্ষ্য করে ভারতের প্রত্যাঘাতী হামলার পরবর্তী ছবিও প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে দেখা যাচ্ছে, ভারতের হামলার পর পাক বিমানঘাঁটিগুলি কার্যত ভগ্নস্তূপে পরিণত হয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় রানওয়েতে বড় বড় গর্ত হয়ে গিয়েছে। কোথাও ভেঙে পড়েছে ছাদ, কোথাও আবার ভেঙে গিয়েছে আস্ত হ্যাঙ্গারও। প্রসঙ্গত, এর আগেও বহাওয়ালপুর, মুরিদকে-সহ বিভিন্ন জায়গায় হামলার ছবি প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে এত কাছ থেকে এই প্রথম।
আরও পড়ুন:
-
সেনার অভিযানের পর কন্যাসন্তানের নামকরণের ধুম! শুধু উত্তরপ্রদেশেই ‘সিঁদুর’ নাম পেল ১৭ সদ্যোজাত
-
সিন্ধুসমস্যা না-মেটানোর অর্থ যুদ্ধবিরতির উপরেই আঘাত: পাক বিদেশমন্ত্রী! দাবি, সংঘর্ষ থেমেছে মার্কিন হস্তক্ষেপেই
-
গত মাসেই পালন করা হয়েছিল জন্মদিন, পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে একসঙ্গে মৃত্যু হল কাশ্মীরের যমজ ভাইবোন জ়োয়া, আয়ানের
‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পর পাকিস্তান পাল্টা ড্রোন হামলা চালালে প্রত্যুত্তরে পাক-ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে অবস্থিত রেডার ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা লক্ষ্য করে ফের হামলা চালায় ভারত। রফিকি, চকলালা, রহিম ইয়ার খান, সুক্কুর এবং সিয়ালকোটে সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ‘পরিমিত’ এবং ‘নিখুঁত’ হামলা চালানো হয়। এয়ার মার্শাল একে ভারতী সোমবার এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘১০ মে রাতে তিন ঘণ্টার মধ্যে একে একে নুর খান, রফিকি, মুরিদ, পাসরুর, চুনিয়ান, সরগোধা, স্কারু, ভোলারী এবং জ্যাকোবাবাদ-সহ ১১টি ঘাঁটিতে আক্রমণ করা হয়।’’ যদিও ভারতের প্রতিটি হামলাই সুনির্দিষ্ট মাপজোকের ভিত্তিতে করা হয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি।
গত ৭ মে গভীর রাতে ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর আওতায় পাকিস্তান এবং পাক-অধিকৃত কাশ্মীরের ন’টি জায়গায় জঙ্গি পরিকাঠামো লক্ষ্য করে ‘প্রিসিশন স্ট্রাইক’ করা হয়। এই ন’টি জায়গার মধ্যে চারটি পাকিস্তানে এবং পাঁচটি পাক-অধিকৃত কাশ্মীরে। বহাওয়ালপুর, মুরিদকে এবং সিয়ালকোট— মূলত এই তিনটি এলাকার জঙ্গিঘাঁটিগুলি গুঁড়িয়ে দেওয়াই ছিল সেনার মূল লক্ষ্য। এর পর একে একে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয় কোটলি, গুলপুর, মেহমুন জ়োয়া, মুজ়ফ্ফরাবাদের সওয়াইনালা, বরনালা, সরজল, চক আমরু এবং বাগের জঙ্গিঘাঁটি। ওই সব জায়গায় বসেই ভারতে সন্ত্রাসবাদী হানার ছক কষা হয়েছিল বলে দাবি ভারতের। তবে তার পরেও উত্তেজনা কমেনি। পাল্টা আঘাত-প্রত্যাঘাতে এখনও অশান্ত ভারত-পাক সীমান্ত। সেই আবহে শনিবার বিকেলে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে দুই দেশ। সোমবার বৈঠকেও বসেছেন দুই দেশের কর্তারা।