Advertisement
E-Paper

গত মাসেই পালন করা হয়েছিল জন্মদিন, পাকিস্তানের গোলাবর্ষণে একসঙ্গে মৃত্যু হল কাশ্মীরের যমজ ভাইবোন জ়োয়া, আয়ানের

শুধু ওই ভাইবোন নয়, তাদের বাবা রামিজ় খানও পাক হামলায় আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শেলের টুকরো ঢুকে গিয়ে তাঁর যকৃতের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। জম্মু হাসপাতালের আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে তাঁকে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ মে ২০২৫ ১১:৪৭
আয়ান এবং জ়োয়া খান।

আয়ান এবং জ়োয়া খান। ছবি: সংগৃহীত।

মাত্র এক মাস আগেই ধুমধাম করে জন্মদিন পালন হয়েছিল যমজ ভাইবোনের। ১২ বছরে পা দিয়েছিল জ়োয়া এবং আয়ান খান। মা-বাবা ও দুই সন্তানকে নিয়ে ছিল সুখী পরিবার। কিন্তু কেউই জানত না, আর মাত্র দিন কয়েকের মধ্যেই পাক গোলাবর্ষণে মৃত্যু হবে ফুটফুটে ভাইবোনের। ভারতের ‘অপারেশন সিঁদুর’-এর পাল্টা জবাবে সীমান্তবর্তী এলাকায় গোলাবর্ষণ করেছিল পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। সেখানেই গত ৭ মে পাক সেনার ছোড়া গোলা এসে পড়ে জ়োয়া, আয়ানদের পুঞ্চের ভাড়াবাড়ির অদূরে। গুরুতর আহত অবস্থায় কয়েক মিনিটের মধ্যে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে জ়োয়া এবং আয়ান।

শুধু ওই ভাইবোন নয়, তাদের বাবা রামিজ় খানও পাক হামলায় আহত হয়ে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। শেলের টুকরো ঢুকে গিয়ে তাঁর যকৃতের গুরুতর ক্ষতি হয়েছে বলে খবর। জম্মু হাসপাতালের আইসিইউ-তে রাখা হয়েছে তাঁকে। একই হামলায় মারা গিয়েছেন জ়োয়াদের কাকা ও কাকিমাও। তবে নিজের দুই সন্তান, ভাই এবং ভ্রাতৃবধূর মৃত্যুর খবর এখনও জানানো হয়নি রামিজ়কে। আয়ান এবং জ়োয়ার মা উরষা খান শোকে কথা বলার শক্তি হারিয়েছেন।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাত্র দু’মাস আগেই সন্তানদের উচ্চশিক্ষার জন্য পুঞ্চে এসে ভাড়াবাড়িতে থাকতে শুরু করেছিলেন রামিজ় ও তাঁর স্ত্রী। রামিজ়দের ঘনিষ্ঠ দুই আত্মীয় সোহেল এবং মারিয়া খান বলেন, ‘‘পাক হামলায় জ়োয়া গুরুতর জখম হয়েছিল৷ পেট থেকে নাড়িভুঁড়ি বেরিয়ে এসেছিল আয়ানের। আমাদের আর এক আত্মীয় ওদের বাঁচানোর অনেক চেষ্টা করেছিলেন, আমরা আশা করেছিলাম আয়ান হয়তো বেঁচে যাবে। কিন্তু কয়েক মিনিটের মধ্যেই ওদের মৃত্যু হয়।’’ ওই আত্মীয়ই জানান, দুই ভাইবোনই বয়সের তুলনায় যথেষ্ট পরিণত ছিল। রামিজ়কে কোনও দিন ছেলেমেয়েকে বকতে হয়নি। মারিয়ার কথায়, ‘‘ছেলেমেয়ের মৃত্যুর খবর জানতে পারলে উনি হয়তো আর বাঁচবেন না!’’

সেই রাতের কথা মনে পড়লেও শিউরে উঠছে ওই পরিবার। সোহেল বলেন, ‘‘ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে পাকিস্তানের দিক থেকে গোলাগুলি ছুটে আসছিল। আমরা আতঙ্কে ছিলাম। হাসপাতালে পৌঁছোতে বেশ কয়েক ঘণ্টা সময় পেরিয়ে যায়।’’ তাঁরা জানিয়েছেন, প্রথমে রাজৌরী, তার পর জম্মুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় আহতদের। কিন্তু দুই খুদে-সহ চার জনকে বাঁচানো যায়নি। অন্তত রামিজ়কে যাতে দিল্লি নিয়ে গিয়ে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়, কেন্দ্রের কাছে সেই আর্জি জানিয়েছে ওই পরিবার। গত ৭ মে থেকে ভারত ও পাকিস্তান উভয় দেশই একটানা হামলা, পাল্টা হামলা চালানোর পর অবশেষে শনিবার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছে। গত দু’দিন ধরে রাতের বেলা জম্মু-কাশ্মীরের কোথাও নতুন করে হামলা হয়নি। তবে পুঞ্চের খান পরিবারের আবেদন, এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপত্তার জন্য কোনও স্থায়ী পদক্ষেপ করুক সরকার। সোহেল বলেন, ‘‘এটা কেবল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের বিষয় নয়। সীমান্তে বসবাসকারী পরিবারগুলির জন্য এ বার অন্তত কিছু করা উচিত কেন্দ্রের।’’

twins Kashmir Pakistan India Pakistan War Operation Sindoor
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy