Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Euthanasia

নিষ্কৃতিমৃত্যুর পথ সহজ করল সুপ্রিম কোর্ট, যন্ত্রণা থেকে মুক্তি দিতে কী কী বাধ্যতামূলক

‘প্যাসিভ ইউথেনেশিয়া’ নিয়ে ২০১৮ সালে একটি রায় দিয়েছিল দেশের শীর্ষ আদালত। অন্তিম মুহূর্তে প্রিয়জনের কষ্ট লাঘব করতে চেয়ে জীবনদায়ী সংযোগ খোলার অনুমতি সংক্রান্ত নির্দেশ ছিল তাতে।

প্যাসিভ ইউথেনেশিয়া সংক্রান্ত এই নতুন নির্দেশ মঙ্গলবার দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। 

প্যাসিভ ইউথেনেশিয়া সংক্রান্ত এই নতুন নির্দেশ মঙ্গলবার দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ।  প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৩ ১৩:৪২
Share: Save:

জীবনে ফেরার আশা যেখানে নেই বললেই চলে, সেখানে দাঁড়িয়ে প্রিয়জনের অন্তিম মুহূর্তের কষ্টলাঘব করার সুযোগ দেয় ‘প্যাসিভ ইউথেনেশিয়া’ বা স্বরচিত ইচ্ছাপত্র অনুসারে ইচ্ছামৃত্যু। তবে সেই প্রক্রিয়া এতদিন ছিল চিকিৎসক এব‌ং সরকারি বিশেষজ্ঞের বিবেচনাধীন। সুপ্রিম কোর্ট বিষয়টিকে আরও সহজ সরল করল। এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে রোগী, রোগীর পরিবার এবং চিকিৎসকের বিচারবোধকেই গুরুত্ব দিয়ে শীর্ষ আদালত তার সাম্প্রতিক রায়ে সরকারি হস্তক্ষেপে রাশ টেনেছে। আদালত বলেছে, বিষয়টি আর সরকারি অনুমোদন সাপেক্ষ নয়। মূলত হাসপাতালই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।

২০১৮ সালের এই সংক্রান্ত একটি রায়ে নিষ্কৃতিমৃত্যুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে দু’টি মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ বদলায়নি। তবে এর পাশাপাশি, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য জেলা শাসকের নেতৃত্বাধীন একটি রিভিউ বোর্ড গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই নিয়মটি বাতিল করা হয়েছে। অর্থাৎ প্যাসিভ ইউথেনেশিয়ার সিদ্ধান্ত আর সরকারি রিভিউ বোর্ডের বিবেচনাধীন থাকল না। বদলে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, সরকারের প্রতিনিধি হিসাবে একজন জেলা মেডিক্যাল অফিসার থাকবেন হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ডে। জেলাশাসককে শুধু এ বিষয়ে জানিয়ে দিলেই হবে।

সুপ্রিম কোর্টের ২০১৮ সালের রায় অনুযায়ী, যে হাসপাতালে রোগী রয়েছেন, সেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষই একটি প্রাথমিক এবং একটি রিভিউ বোর্ড গঠন করে সিদ্ধান্ত নেবে প্যাসিভ ইউথেনেশিয়ার ব্যাপারে। নির্দেশ ছিল, প্যানেলের চিকিৎসকদের অন্তত ২০ বছরের চিকিৎসার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে। সেই নির্দেশও বদলেছে নতুন রায়ে। শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, চিকিৎসকদের ৫ বছরের অভিজ্ঞতা থাকলেই হবে। তবে মেডিক্যাল বোর্ডকে প্যাসিভ ইউথেনেশিয়ার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে হবে আবেদনের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে।

প্যাসিভ ইউথেনেশিয়া সংক্রান্ত এই নতুন নির্দেশ মঙ্গলবার দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ বিচারপতির বেঞ্চ। বিচারপতি কে এম জোসেফ, বিচারপতি অজয় রস্তোগি, বিচারপতি অনিরুদ্ধ বোস, বিচারপতি হৃষিকেশ রায় এবং বিচারপতি সিটি রবিকুমার ছিলেন ওই বেঞ্চে। প্যাসিভ ইউথেনেশিয়া বা স্বরচিত ইচ্ছাপত্র অনুসারে ইচ্ছামৃত্যুর অনুমোদন প্রক্রিয়া সহজ সরল করার পাশাপাশি, তাঁরা ইচ্ছাপত্র তৈরি করার বিষয়টিরও সরলীকরণ করেছেন।

প্যাসিভ ইউথেনেশিয়ার ইচ্ছাপত্র হল সেই অনুমতি পত্র যেখানে রোগী নিজেই তাঁকে কৃত্রিম জীবনদায়ী প্রক্রিয়ায় না রাখার অনুমতি দিয়ে যান। এর আগে দু’জন সাক্ষীর সইয়ের পাশাপাশি, একজন প্রথমস্তরীয় বিচারবিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট (জেএমএফসি) এর সই প্রয়োজন হত এই ইচ্ছাপত্রের জন্য। মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কোনও নোটারি বা গেজেটেড অফিসার সই করলেই চলবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Euthanasia Passive Euthanasia Supreme Court India
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE