Advertisement
২৩ এপ্রিল ২০২৪

আধার বিতর্কে ধর্মের বিষয় জুড়তে নারাজ সুপ্রিম কোর্ট

তাঁর ধর্ম আধারকে স্বীকার করে না। তাই ওই কার্ড দেওয়া সম্ভব নয়। টানাপড়েনের মধ্যে স্কুলটি শেষ পর্যন্ত ছেলেটিকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করেছে। আজ সুপ্রিম কোর্টে আধার মামলার শুনানিতে এই উদাহরণ তুলে ধরে এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেন এক আইনজীবী।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০১৮ ০৩:৫১
Share: Save:

স্কুলে ছেলেকে ভর্তি করাতে নিয়ে গিয়েছিলেন বাবা। কর্তৃপক্ষ সেই সময় তাঁর আধার কার্ড দেখতে চায়। তিনি বলেন, তাঁর ধর্ম আধারকে স্বীকার করে না। তাই ওই কার্ড দেওয়া সম্ভব নয়। টানাপড়েনের মধ্যে স্কুলটি শেষ পর্যন্ত ছেলেটিকে ভর্তি নিতে অস্বীকার করেছে।

আজ সুপ্রিম কোর্টে আধার মামলার শুনানিতে এই উদাহরণ তুলে ধরে এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেন এক আইনজীবী। যুক্তি ছিল, নাগরিকদের ধর্মাচরণের অধিকারকে স্বীকৃতি দিতে হলে কাউকে আধার নিয়ে জোরাজুরি করা চলে না। ব্যক্তিগত তথ্য দিতে বাধ্য করা যায় না। কিন্তু এই সময়েই প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের বেঞ্চের পাল্টা প্রশ্ন, ‘‘আয়কর দেওয়ার মতো ধর্মনিরপেক্ষ ব্যাপারে দেশের আইন কেউ অস্বীকার করতে পারে কি? তখন কি তিনি বলতে পারেন, আমার বিবেক সাড়া দিচ্ছে না বলে আয়কর দেব না!’’

আধারের সাংবিধানিক বৈধতা নিয়ে মামলায় সুপ্রিম কোর্টের পাঁচ সদস্যের বেঞ্চের সামনে একাধিক আইনজীবী আজ কেন্দ্রের পাল্টা যুক্তিকে তুলে ধরে সওয়াল করেছেন। আইনজীবী মীনাক্ষী অরোরা বলেন, ‘‘কেন্দ্র নির্দিষ্ট কোনও ব্যক্তির উপরে নজরদারি চালাতে পারে। কিন্তু ১৩০ কোটি মানুষের উপর নজরদারি চালানোর অধিকার কারও নেই। এটা নাগরিকদের সম্মানের উপর আঘাত ছাড়া কিছু নয়।’’ আইনজীবী সি ইউ সিংহ যুক্তি দেন, ‘‘ভারতের আইন অনুযায়ী কোনও শিশু চুক্তিপত্রে সই করতে পারে না। কিন্তু আধারের দুনিয়ার পা দেওয়ার ক্ষেত্রে তাদের বাধ্য করা হচ্ছে কী ভাবে?’’ আইনজীবী সঞ্জয় পুভাইয়ার বক্তব্য, ‘‘কোনও কিছুর পরিসংখ্যান ও ব্যক্তিগত তথ্যের মধ্যে ফারাক রয়েছে। কতখানি ব্যক্তিগত তথ্য অন্যদের জানানো যায়, সে ব্যাপারে ব্যক্তির অধিকার থাকা উচিত।’’

অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল কাল আধার নিয়ে কেন্দ্রের বক্তব্য শীর্ষ আদালতে জানাবেন। আর আধার কর্তৃপক্ষ ইউআইডিএআই-এর সিইও অজয়ভূষণ পাণ্ডে সম্ভবত কালই বিচারপতিদের সামনে আধার সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য তুলে ধরবেন। বেণুগোপাল আজ শীর্ষ আদালতে আর্জি জানান, পাণ্ডেকে আধার নিয়ে ‘পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন’ দেওয়ার অনুমতি দেওয়া হোক। কারণ, ‘‘এক জন আইনজীবী চার দিন ধরে যা বোঝাতে পারবেন, সেটা তাঁর পক্ষে এক দিনে বোঝানো সম্ভব’’— যুক্তি দেন তিনি। ইউআইডিএআই-এর সিইও আদালতকে আধার সংক্রান্ত সব প্রশ্নের জবাব দেবেন বলেই জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE