তিরিশটিরও বেশি ধর্ষণের মামলা ছিল তার বিরুদ্ধে। সঙ্গে ১৫টি খুনের অভিযোগ। অনেকগুলি ডাকাতির মামলাতেও জড়িত ছিল সে। এক সময়ে তাকে খুঁজতে কার্যত নাকানিচোবানি খেতে হয়েছে তিন রাজ্যের পুলিশকে। ধরা পড়ার পরেও পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে একাধিক বার পালিয়েও গিয়েছিল। দক্ষিণ ভারতের সেই ত্রাস ‘সাইকো শঙ্কর’ ওরফে এম জয়শঙ্কর জেলে বন্দি থাকাকালীন রহস্যজনক ভাবে আত্মঘাতী হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, বেঙ্গালুরুর কাছে পারাপ্পান্না অগ্রহারা জেলে বন্দি ছিল জয়শঙ্কর। কাল রাত সওয়া দু’টো নাগাদ ওই জেলের কিছু বন্দি খেয়াল করে রক্তে ভেসে যাচ্ছে জয়শঙ্কর। তারাই জেল কর্তৃপক্ষকে খবর দেয়। বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। আজ ভোরে সেখানে মৃত্যু হয় তার। ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন জেল কর্তৃপক্ষ। পুলিশকে তাঁরা জানিয়েছেন, জেলের নাপিতের কাছ থেকে ভাঙা ব্লেড চুরি করেছিল ওই দাগি আসামি। সেটা দিয়েই নিজের গলা চিরে ফেলে সে।
১৯৭৭-য় তামিলনাড়ুর সেলমের কান্নিয়ানপট্টিতে জন্ম। দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পরে ট্রাক চালানোর কাজ শুরু করে জয়শঙ্কর। ওই সময়ই অপরাধ জগতে হাতেখড়ি। জয়শঙ্করের জীবন নিয়ে বছর খানেক আগে ছবিও হয়েছে কন্নড়ে। নাম ‘সাইকো শঙ্কর’।
তামিলনাড়ু, কর্নাটক আর অন্ধ্রপ্রদেশের পুলিশকে বারবার ঘোল খাইয়েছে জয়শঙ্কর। মূলত একা মহিলাদেরই নিশানা করত সে। ২০০৯ সালে প্রথম বার পুলিশের নজরে আসে জয়শঙ্কর। সে বছর অগস্টে তামিলনাড়ুর কাঙ্গেয়ামের মহিলা পরিচালিত থানার কনস্টেবল এম জয়ামণিকে অপহরণের পরে ধর্ষণ করে খুন করে জয়শঙ্কর। সেপ্টেম্বরে জয়ামণির দেহ পাওয়া যায়। অক্টোবরে তিরুপুর থানার পুলিশ জয়শঙ্করকে গ্রেফতার করে। তদন্তে জানা যায়, ঠিক তার আগের বছর, অর্থাৎ ২০০৮ সালেও ধর্ষণ ও খুনের মামলায় নাম জড়িয়েছিল জয়শঙ্করের। ২০১১-র মার্চে আদালতে হাজিরার সময় সেলমের এক বাসস্ট্যান্ড থেকে পালায় সে। অপমানে আত্মঘাতী হন জয়শঙ্করের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা এক পুলিশকর্মী। দু’মাসের মাথায় কর্নাটক থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার মধ্যেও বেশ কয়েকটি ধর্ষণ করে জয়শঙ্কর। ২০১৩ সালের সেপ্টেম্বরে জেল থেকে পালায় সে। পাঁচ দিন পর ফের তাকে ধরে পুলিশ।
এ বছরের গোড়ায় আরও এক বার জেল ভেঙে পালানোর চেষ্টা করেছিল ‘সাইকো শঙ্কর’। ব্যর্থ হয়। পুলিশের ধারণা, সম্ভবত সেই হতাশা থেকেই আত্মহত্যা করেছে সে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy