জগন্নাথ বিগ্রহ বিতর্কে এ বার পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সেবায়েত রাজেশ দয়িতাপতি তথা রামকৃষ্ণ দাস মহাপাত্রকে শো কজ় করা হল। ওড়িশার মন্দির কর্তৃপক্ষের তরফে রবিবার রাজেশকে শো কজ়ের নোটিস ধরানো হয়। সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে হবে তাঁকে। উত্তর সন্তোষজনক না-হলে জগন্নাথ মন্দির আইন, ১৯৫৫ অনুসারে ওই সেবায়েতের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ করা হবে বলেও জানানো হয়েছে।
দিঘায় জগন্নাথ মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনের দিন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় দেখা গিয়েছিল রাজেশকে। তাঁর নেতৃত্বেই দিঘার মন্দিরে জগন্নাথ, বলরাম এবং সুভদ্রার মার্বেল পাথরের মূর্তির পাশাপাশি কাঠের বিগ্রহেও প্রাণ প্রতিষ্ঠা হয়। অভিযোগ ওঠে, ২০১৫ সালে পুরীর মন্দিরে নবকলেবরে ব্যবহৃত পবিত্র নিম কাঠের অবশিষ্ট অংশ দিয়েই বানানো হয়েছে দিঘার জগন্নাথের বিগ্রহ। সংবাদমাধ্যমের সামনে এমনই দাবি করেছিলেন রাজেশ। তাঁর এই মন্তব্যকে ঘিরে বিতর্ক শুরু হয়।
ওড়িশায় পৌঁছে রাজেশ অবশ্য দাবি করেন, নবকলেবরে ব্যবহৃত কাঠ নয়, অন্য একটি নিমগাছের কাঠ দিয়ে দিঘায় জগন্নাথের বিগ্রহ বানানো হয়েছে। ওড়িশার মন্দির কর্তপক্ষের তরফে জানানো হয়েছে, জগন্নাথের বিগ্রহ তৈরিতে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করে কোটি কোটি ভক্তকে বিভ্রান্ত করেছেন রাজেশ। রাজেশের আচরণে ওড়িশার মন্দিরের ভাবমূর্তিও নষ্ট হয়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।
প্রথা অনুযায়ী, নবকলেবরের আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে কাঠ সংগ্রহ করে ওড়িশার মন্দিরে জগন্নাথের নতুন বিগ্রহ তৈরি করা হয়। অতিরিক্ত কাঠ সংরক্ষিত করে রাখা হয় নির্দিষ্ট একটি কক্ষে। বিগ্রহ-বিতর্ক শুরু হওয়ার পরেই বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য পুরীর মন্দির কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছিলেন ওড়িশার আইনমন্ত্রী পৃথ্বীরাজ হরিচন্দন। রবিবারই পুরীর জগন্নাথ মন্দির প্রশাসনের প্রধান অরবিন্দ পাধী রাজেশকে ডেকে পাঠিয়ে প্রায় ৯০ মিনিট জিজ্ঞাসাবাদ করেন।
মন্দির প্রশাসনের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, দয়িতাপতিদের সংগঠনের সম্পাদক হওয়া সত্ত্বেও রাজেশ কী ভাবে পুরীর মন্দিরে থাকা পবিত্র কাঠ দিঘায় জগন্নাথের বিগ্রহ তৈরি করতে ব্যবহার করলেন, তা জানতে চাওয়া হয়েছে।