সংঘর্ষবিরতি হয়েছে। বিমানবন্দরগুলিও খুলে গিয়েছে। তবে সাবধানতার মার নেই! যাত্রীসুরক্ষার কথা বিবেচনা করে পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বেশ কিছু বিমানবন্দরের রুটে পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুই উড়ান সংস্থা ইন্ডিগো এবং এয়ার ইন্ডিয়া।
গত শনিবার ভারত এবং পাকিস্তান সংঘর্ষবিরতিতে সম্মত হয়েছে। ওই দিন বিকেল ৫টা থেকে সংঘর্ষবিরতি কার্যকর হয়। কিন্তু তার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে ভারতে হামলার অভিযোগ উঠে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে। সংঘর্ষবিরতির পরেও কাশ্মীরের শ্রীনগর উপত্যকায় পাক-হামলার জেরে নতুন করে উদ্বেগ ছড়ায়। জম্মু ও কাশ্মীর-সহ পাকিস্তান সীমান্তবর্তী রাজ্যগুলির বেশ কিছু শহরে ‘ব্ল্যাকআউট’ করে দেওয়া হয়। এমনকি সোমবার রাতেও কিছু সন্দেহজনক ড্রোনের গতিবিধির খবর ছড়ায় জম্মুর সাম্বা এবং পঞ্জাবের জলন্ধর এলাকায়। এর পরেই দুই উড়ান সংস্থার তরফে পরিষেবা বন্ধ রাখার ঘোষণা করা হয়।
প্রথম ঘোষণা আসে ইন্ডিগোর তরফে। জম্মু, শ্রীনগর, লেহ্, অমৃতসর, চণ্ডীগড় এবং রাজকোট বিমানবন্দরের রুটে মঙ্গলবার ইন্ডিগোর কোনও উড়ান ওঠানামা করবে না। পরে বেশি রাতের দিকে ‘এয়ার ইন্ডিয়া’ও প্রায় অনুরূপ একটি বিবৃতি দেয়। তারাও জম্মু, লেহ্, জোধপুর, অমৃতসর, চণ্ডীগড়, ভুজ, জামনগর এবং রাজকোট বিমানবন্দরের রুটে মঙ্গলবার পরিষেবা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বস্তুত, ভারত-পাক উত্তেজনার আবহে উত্তর এবং পশ্চিম ভারতের বন্ধ হওয়া বিমানবন্দরগুলিকে সোমবার থেকেই সচল করে দেওয়া হয়েছে। তবে সোমবার রাতের ওই কিছু ক্ষণের ‘ড্রোন-দর্শনের’ পরে ঝুঁকি নিতে চাইছে না উড়ান সংস্থাগুলি। ফলে বিমানবন্দর খুলে গেলেও উড়ান পরিষেবা এখনও পুরোপুরি স্বাভাবিক হল না। দুই উড়ান সংস্থাই জানিয়েছে, তারা পরিস্থিতির উপর নজর রাখছে এবং সেই মতো পরবর্তী সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হওয়া পর্যন্ত দুই উড়ান সংস্থার কেউই নতুন করে কোনও বিবৃতি প্রকাশ করেনি।
আরও পড়ুন:
শনিবার সংঘর্ষবিরতি ভেঙে পাক হামলার পরে সেই রাতেই পাকিস্তানকে সতর্ক করে কড়া বিবৃতি দিয়েছিল ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। তার পর থেকে সংঘর্ষবিরতি ভেঙে গুলি চালানো বা গোলাবর্ষণের কোনও অভিযোগ এখনও পর্যন্ত আসেনি। রবিবার এবং সোমবার রাতে মোটের উপর শান্তই ছিল ভারত-পাক আন্তর্জাতিক সীমান্ত এবং নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর অঞ্চল। সোমবার ড্রোনের খবর ছড়ানোর পর ভারতীয় সেনা সূত্রে প্রথমে জানা যায়, সন্দেহভাজন কিছু ড্রোনের গতিবিধি প্রতিহত করার চেষ্টা চলছে। তবে বেশি রাতের দিকে সেনা আবার জানিয়ে দেয়, পরে আর কোনও ড্রোন দেখা যায়নি।
তবে সোমবার রাতে সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসাবে জম্মুর কাটরায় বৈষ্ণোদেবী মন্দির চত্বর-সহ অন্য এলাকাগুলিতে আলো নিবিয়ে রাখা হয়। পঞ্জাবের অমৃতসরের কিছু অংশেও আলো নিবিয়ে রাখা হয়। পাশাপাশি জলন্ধরের সুরানুস্সি এলাকাতেও কিছু অঞ্চল অন্ধকার করে রাখা হয়েছিল। যদিও সোমবার রাতে জলন্ধরের ডেপুটি কমিশনার হিমাংশু অগরওয়াল জানান, জলন্ধরের কোথাও ঘোষিত ‘ব্ল্যাকআউট’ ছিল না। এই আবহেই ওই পদক্ষেপ দুই উড়ান সংস্থার।