অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তির পর পর গুলিতে মৃত্যু চার জনের। মৃতদের মধ্যে রয়েছেন এক জন বছর ষাটেকের বৃদ্ধাও। ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবার উত্তেজনা ছড়াল মণিপুরের চুরাচাঁদপুর জেলায়! সোমবার দুপুরে ঘটনাটি ঘটেছে।
পুলিশ সূত্রে খবর, চুরাচাঁদপুর থেকে একটি গাড়ি চেপে চার জন যাচ্ছিলেন। সাত কিলোমিটার পথ অতিক্রম করার পর আচমকাই এক বন্দুকবাজ তাঁদের পথ আটকান। গাড়ি থেকে নামিয়ে যাত্রীদের পর পর গুলি করা হয়। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, খুব কাছ থেকে গুলি করেছে আততায়ী। নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে এক ডজনের বেশি কার্তুজের খোল উদ্ধার করেছে। তবে কে গুলি চালালেন, কেন হামলা চালানো হল— তা এখনও স্পষ্ট নয়। কোনও গোষ্ঠীই এখনও পর্যন্ত ঘটনার দায় স্বীকার করেনি।
ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পরই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়েছে। নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা হয়েছে ওই এলাকায়। অভিযুক্তের খোঁজে এলাকা জুড়ে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে।
২০২৩ সালের ৩ মে জনজাতি ছাত্র সংগঠন ‘অল ট্রাইবাল স্টুডেন্টস ইউনিয়ন অফ মণিপুর’ (এটিএসইউএম)-এর কর্মসূচি ঘিরে মণিপুরে অশান্তির সূত্রপাত। মণিপুর হাই কোর্ট মেইতেইদের তফসিলি জনজাতির মর্যাদা দেওয়ার বিষয়টি রাজ্য সরকারকে বিবেচনা করার নির্দেশ দিয়েছিল। এর পরেই জনজাতি সংগঠনগুলি তার বিরোধিতায় পথে নামে। আর সেই ঘটনা থেকেই সংঘাতের সূচনা হয় সেখানে।
আরও পড়ুন:
মণিপুরের আদি বাসিন্দা হিন্দু ধর্মাবলম্বী মেইতেই জনগোষ্ঠীর সঙ্গে কুকি, জ়ো-সহ কয়েকটি তফসিলি জনজাতি সম্প্রদায়ের (যাদের অধিকাংশই খ্রিস্টান) সংঘর্ষে এখনও পর্যন্ত প্রায় দুশো জনের মৃত্যু হয়েছে। ঘরছাড়ার সংখ্যা প্রায় ৬০ হাজার। নানা পদক্ষেপ করেও অশান্তি থামাতে ব্যর্থ হয় মণিপুর সরকার। সেই দায় নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন এন বীরেন সিংহ। ভেঙে যায় সরকার। বর্তমানে রাজ্যপালের কাঁধে ওই রাজ্যের শাসনভার। তার মধ্যেই মণিপুরে সরকার গড়ার তোড়জোড় শুরু করেছে বিজেপি। কিন্তু মাঝেমধ্যেই অশান্ত গোষ্ঠীসংঘর্ষে উত্তপ্ত হয়ে উঠছে মণিপুর। শুধু কুকি এবং মেইতেইদের মধ্যে অশান্তিতে সীমাবদ্ধ থাকেনি, মণিপুরের বিভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে ঝামেলা বাধে। চলে গোলাগুলি। তবে সোমবারের ঘটনার নেপথ্যে কোনও গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব রয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।