Advertisement
E-Paper

শাহিনবাগে আসুন, সিএএ নিয়ে হোক চায়ে পে চর্চা, প্রধানমন্ত্রীকে পোস্টকার্ড মহিলাদের

হলদেটে পোস্টকার্ডের কোনওটায় লেখা, ‘‘নো সিএএ-এনআরসি-এনপিআর’’, কোনওটায় বা রয়েছে, ‘‘সংবিধান বাঁচাতে বসেছি’’, কখনও উঠে এসেছে সেই অমর লাইন, ‘‘হিন্দি হ্যায় হম’’।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ১৯ জানুয়ারি ২০২০ ১৬:২৭
ছবি: এপি।

ছবি: এপি।

কখনও স্লোগান উঠছে, ‘কালা কানুন ওয়াপস লো’। কখনও বা সকলে গলা মেলাচ্ছেন, ‘আজাদি’-র আওয়াজে। দিল্লির কনকনে ঠান্ডা উপেক্ষা করে এ ভাবেই নরেন্দ্র মোদী সরকারের করা আইনের বিরোধিতায় রাতের পর রাত কাটাচ্ছেন শাহিনবাগের মহিলারা। সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন (সিএএ), প্রস্তাবিত জাতীয় জনসংখ্যা রেজিস্টার (এনপিআর) এবং জাতীয় নাগরিকপঞ্জি (এনআরসি) প্রত্যাহারের দাবিতে অনড় তাঁরা। এ বার শাহিনবাগের মহিলাদের দাবি, এক বার তাঁদের মাঝে এসে আলোচনা করুন প্রধানমন্ত্রী। হোক ‘চায়ে পে চর্চা’! চা-পান করতে করতে এ আইনের যৌক্তিকতা নিয়ে শুরু হোক তর্ক-বিতর্ক। সে জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর উদ্দেশে অজস্র চিঠি লিখছেন শাহিনবাগের মহিলারা।

হলদেটে পোস্টকার্ডের কোনওটায় লেখা, ‘‘নো সিএএ-এনআরসি-এনপিআর’’, কোনওটায় বা রয়েছে, ‘‘সংবিধান বাঁচাতে বসেছি’’, কখনও উঠে এসেছে সেই অমর লাইন, ‘‘হিন্দি হ্যায় হম’’। এ সবই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পাঠাবে শাহিনবাগ। উদ্দেশ্য একটাই, প্রধানমন্ত্রীকে একটি বার্তা পৌঁছে দেওয়া। কী সেই বার্তা? প্রায় সকলে চিঠি-পোস্টকার্ডে ভেসে উঠেছে একটাই চিন্তা। ভবিষ্যৎ প্রজন্ম এ দেশে নিরাপদে থাকতে পারবে তো? এ দেশের নাগরিক হিসাবে বেঁচেবর্তে থাকবে তো? বছর পঞ্চাশের এক মহিলার কথাতেও উঠে এল সেই আশঙ্কার কথা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ওই মহিলা বলেন, ‘‘খুব জরুরি সময়েই আমরা চিঠি লিখতে বসি। এটা এমনই এক সময়, যখন আমরা নিশ্চিন্ত হতে চাই যে ধর্মের জন্য আমাদের সন্তানদের নাগরিকত্ব যাতে কেড়ে নেওয়া না হয়।’’ নিজের আশঙ্কার কথা বলতে গিয়ে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘আমার বয়স হয়েছে, কিছু দিন পরে মরেও যাব। কিন্তু আমার সন্তানেরা, নাতিনাতনিরা অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দোরগোড়ায়। লোকের মনে ডিটেনশন ক্যাম্পে যাওয়ার ভয় হয়ে গিয়েছে।’’ এমন সব আশঙ্কাকে দূর করতেই প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস চায় শাহিনবাগ। মোদীর প্রতি ওই মহিলার আহ্বান, ‘‘দেশের প্রধানমন্ত্রীকে শাহিনবাগে আসার আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আসুন, আমাদের সঙ্গে চা খেতে খেতে দেখুন আমাদের লড়াই, শুনে যান আমাদের দুশ্চিন্তার কথা।’’

নিজেদের দুশ্চিন্তার পাশাপাশি শাহিনবাগের প্রশ্ন, ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’-এর কথা কী ভাবে এক সারিতে থাকবে সিএএ বা এনআরসি-র মতো আইনের প্রয়োগ? তাই একটি পোস্টকার্ডে সরাসরি দাবি করা হয়েছে, ‘‘এটা কালা কানুন, একে ফিরিয়ে নেওয়া হোক। আমরা সংবিধান বাঁচাতে এখানে বসেছি।’’

আরও পড়ুন: ‘নোংরা ফিল্ম’ দেখা ছাড়া ইন্টারনেট কাজে লাগে না কাশ্মীরে, মন্তব্য নীতি আয়োগের সদস্যের

আরও পড়ুন: ভারতে বোমা ফেলেছিলেন, তাঁর ছেলে আদনান সামিকে নাগরিকত্ব দিয়েছেন! সিএএ-র বিরুদ্ধে সরব রাজা মুরাদ

শাহিনবাগের চৌহদ্দির বাইরে থেকেও এই আন্দোলনের পাশে থেকেছেন অনেকে। যেমন, বিহারের দ্বারভাঙ্গা জেলার ৮০ বছরের বৃদ্ধ তেহজিব। নিজে শাহিনবাগে না থাকলেও তাঁর বৌমা ফারহিন সামি রয়েছেন সেখানে। তাঁদের কাছ থেকে ছবি-ভিডিয়োর মারফত শাহিনবাগের সব খবরই পাচ্ছেন তিনি। ফারহিনের কাছেই শাহিনবাগের মহিলাদের জন্য ‘‘খতোঁ শাহিনবাগ কি’’ নামের কবিতা পাঠিয়েছেন তেহজিব। তাতে শাহিনবাগের মহিলাদের ‘‘তারিক কি জিনত (এ সময়ের গর্ব)’’ বলেছেন বৃদ্ধ কবি। উর্দুতে লেখা সে কবিতাটি গোলাপি রঙের কাগজে ছাপিয়ে শাহিনবাগে বিলি করেছেন ফারহিন। এ ভাবেই সমর্থন আর সাহসে ভর করে এগোচ্ছে শাহিনবাগ। যখন কোনও মহিলা আশঙ্কা করেছেন, ‘‘আমি জানি না মুসলিম হওয়ার জন্য ভবিষতে আমাদের ছেলেমেয়েদের কী দশা হবে?’’ পাশ থেকে সে সময় আর এক মহিলা তাঁকে আশ্বাস দিয়েছন, ‘‘এ কঠিন সময়ে আমাদের ভয় পেলে চলবে না, সঙ্কল্পে অটল থাকতে হবে!’’

Shaheen Bagh CAA NRC NPR
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy