Advertisement
E-Paper

‘বৌমা পালিয়েছে’! প্রতিবেশীদের জানান শ্বশুরবাড়ির লোকেরা, পাড়ার রাস্তা খুঁড়ে ১০ ফুট নীচ থেকে উদ্ধার হল তরুণীর দেহ

এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘পাড়ার অনেকেই অরুণের বাবাকে রাস্তায় গর্ত খুঁড়তে দেখেছিলেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, নিকাশির সমস্যা হচ্ছে। তার এক দিন পর থেকেই অরুণের স্ত্রীর কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না।’’

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৫ ১১:৪৩
(উপরে) তনু এবং তাঁর স্বামী অরুণ। (নীচে) রাস্তা খুঁড়ে তনুর দেহ উদ্ধার হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

(উপরে) তনু এবং তাঁর স্বামী অরুণ। (নীচে) রাস্তা খুঁড়ে তনুর দেহ উদ্ধার হয়েছে। ছবি: সংগৃহীত।

নিকাশি নালা করার জন্য পাড়ার রাস্তা খোঁড়া হয়েছিল। তার পর নালাও তৈরি করা হয়। ঢালাইও করে দেওয়া হয়েছিল রাস্তা। এক তরুণীর আচমকা নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে সন্দেহের বশে সেই রাস্তা আবার খোঁড়া হয়। মাটির ১০ ফুট নীচ থেকে নিখোঁজ হয়ে যাওয়া তরুণীর দেহ উদ্ধারে হুলস্থুল পড়ে গিয়েছে হরিয়ানার ফরিদাবাদে।

মৃতার নাম তনু। উত্তরপ্রদেশের শিকোহাবাদের বাসিন্দা। বছর দুয়েক আগে ফরিদাবাদের রোশননগরের বাসিন্দা অরুণের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল তনুর। গত কয়েক দিন ধরেই তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছিলেন না বাপের বাড়ির লোকেরা। তনুকে মাস দুয়েক না দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীরাও অরুণের বাবা-মাকে জিজ্ঞাসা করেন, কেন তাঁকে দেখতে পাওয়া যাচ্ছে না। তখন প্রতিবেশীদের কাছে তনু শ্বশুর-শাশুড়ি দাবি করেন, ‘‘বৌমা তাঁর প্রেমিকের সঙ্গে পালিয়েছে।’’ তনুর বাপের বাড়ি থেকে ফোন করলেও বার বার একই কথা বলা হয় বলে দাবি।

কিন্তু তনুর বাপের বাড়ির লোকেদের সন্দেহ হয়। তাঁর বোন প্রীতি জানিয়েছেন, তনু সেই ধরনের মেয়েই নন। নিশ্চয়ই এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ আছে। তার পর তাঁরা পুলিশের দ্বারস্থ হন। তনুর খোঁজে তল্লাশিতে নামে পুলিশ। কিন্তু তাঁর হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। তনুর শ্বশুরবাড়ির পাড়ার লোকেদেরও সন্দেহ হয় বিষয়টি নিয়ে। তাঁদেরই কয়েক জন পুলিশের কাছে দাবি করেন, গত এপ্রিলে বাড়ির পিছনের রাস্তা খুঁড়তে দেখেছিলেন তনুর শ্বশুরকে। জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি দাবি করেন, বাড়ির নিকাশি নালায় সমস্যা হয়েছে। তাই সারানো হচ্ছে। আর এখান থেকেই পুলিশের সন্দেহ আরও দৃঢ় হয়। রাস্তা উপর দিয়ে ঢালাই হয়ে যাওয়ায় বোঝার কোনও উপায় ছিল না। মাটি খোঁড়ার যন্ত্র নিয়ে আসা হয়। তার পর রাস্তা খোঁড়ার কাজ শুরু হয়। প্রায় ১০ ফুট খোঁড়ার পর হঠাৎ এক জনের পা দেখতে পাওয়া যায়। মাটি সরাতেই তনুর দেহ উদ্ধার হয়।

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার সকালে তনুর দেহ উদ্ধার হয়েছে। তাঁর স্বামী, শ্বশুর, শাশুড়ি এবং এক আত্মীয়কে গ্রেফতার করা হয়েছে। তনুর বোন প্রীতির অভিযোগ, ২০২৩ সালে বিয়ে হয় তাঁর দিদির। বিয়ের পরই সোনার গয়না, টাকা দাবি করতে থাকেন অরুণ এবং তাঁর বাবা-মা। প্রীতি জানিয়েছেন, যতটা সাধ্যের মধ্যে ছিল অরুণদের দাবি মেটানো হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও ক্রমাগত দাবি বাড়ছিল। প্রীতির কথায়, ‘‘মানসিক এবং শারীরিক অত্যাচার শুরু হয় তনুর উপর। বিয়ের কয়েক মাস পরেই বাপের বাড়িতে চলে এসেছিল দিদি। এক বছর আমাদের সঙ্গে থাকার পর আবার শ্বশুরবাড়ি চলে যায়। কিন্তু তার পরেও পরিস্থিতি শুধরোয়নি। আবার শুরু হয় অত্যাচার। আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে দিত না শ্বশুরবাড়ির লোকেরা।’’ ২৩ এপ্রিল থেকে তনুর সঙ্গে যোগাযোগ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ওঁর কোনও খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

এক প্রতিবেশী বলেন, ‘‘পাড়ার অনেকেই অরুণের বাবাকে রাস্তায় গর্ত খুঁড়তে দেখেছিলেন। তখন তিনি জানিয়েছিলেন, নিকাশির সমস্যা হচ্ছে। তার এক দিন পর থেকেই অরুণের স্ত্রীর কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছিল না। তখনই আমাদের সন্দেহ হয়েছিল। কিন্তু এতটা গভীর ভাবে বিষয়টি ভাবিনি। কল্পনাও করতে পারিনি যে, পাড়ার রাস্তা খুঁড়ে এক জনকে মেরে পুঁতে দেওয়া হয়েছে।’’ ডেপুটি পুলিশ কমিশনার ঊষা কুণ্ডু জানিয়েছেন, এক সপ্তাহ আগে একটি অভিযোগ পাওয়ার পরই পুলিশ ওই তরুণীর খোঁজে নামে। তার পর পাড়ার রাস্তার নীচ থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার হয়।

Haryana Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy