মহারাষ্ট্রে সাতারার চিকিৎসকের ‘ধর্ষণ’ এবং আত্মহত্যার ঘটনায় এ বার তাঁর বিরুদ্ধেই পাল্টা অভিযোগ তুললেন এক অভিযুক্ত। যে বাড়িতে চিকিৎসক ভাড়া থাকতেন, ঘটনাচক্রে সেই বাড়িওয়ালার পুত্র এই ঘটনার অন্যতম অভিযুক্ত। শনিবার সকালে তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। চিকিৎসকের বাড়ির মালিকের সেই পুত্র এ বার চিকিৎসকের বিরুদ্ধে পাল্টা অভিযোগ তুলেছেন। অভিযুক্ত যুবক পেশায় ইঞ্জিনিয়ার। থাকতেন পুণেতে। পুলিশের কাছে তিনি দাবি করেছেন, ‘‘আমাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। রাজি না হওয়ায় বার বার চাপ সৃষ্টি করছিল ও। এমনকি নানা ভাবে হেনস্থা করাও শুরু করে।’’
একই দাবি করেছে অভিযুক্তের পরিবার। তরুণী চিকিৎসকের বিরুদ্ধেই তারা পাল্টা অভিযোগের আঙুল তুলেছে। টাইমস অফ ইন্ডিয়া-র কাছে অভিযুক্ত যুবকের ভাই এবং বোন দাবি করেছেন, চার হাজার টাকা দিয়ে তাঁদের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন ওই চিকিৎসক। গত এক বছর ধরে তাঁদের বাড়িতেই ছিলেন। অভিযুক্তের বোনের দাবি, ‘‘ডেঙ্গি হওয়ায় গত মাসে দাদা ফলটনের বাড়িতে এসেছিল। সেই সময়ে এই তরুণী চিকিৎসক দাদার চিকিৎসা করে। তখন দু’জনের মধ্যে ফোন নম্বরও বিনিময় হয়। দিন পনেরো আগে দাদাকে প্রেমের প্রস্তাব দেয় চিকিৎসক। কিন্তু দাদা সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে।’’
অভিযুক্তের বোন আরও দাবি করেন, দীপাবলিতে খুব বিচলিত দেখাচ্ছিল চিকিৎসককে। কাজের চাপে হয়তো এ রকম ম্রিয়মাণ হয়ে রয়েছেন, এই ভেবে চিকিৎসককে কিছু জিজ্ঞাসা করেননি তাঁরা। অভিযুক্তের বোনের আরও দাবি, চিকিৎসককে তাঁরা নিজেদের পরিবারের একজন সদস্য হিসাবেই দেখতেন। তাঁর কথায়, ‘‘ফোন নম্বর পাওয়ার পরেও চিকিৎসককে ফোন করেনি দাদা। বরং চিকিৎসকই দাদাকে ঘন ঘন ফোন করত। নানা ভাবে হেনস্থা করত।’’
তদন্তকারী এক আধিকারিক জানিয়েছেন, চিকিৎসক এবং তাঁর বাড়ির মালিকের পুত্র তথা অন্যতম অভিযুক্তের কল রেকর্ডিং, চ্যাট উদ্ধার হয়েছে। সেগুলি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সেখানে হোয়াট্সঅ্যাপে কয়েকটি কথোপকথনে চিকিৎসক তাঁর উদ্বেগ, মানসিক চাপ ইত্যাদি উল্লেখ করেছেন।
সাতারার পুলিশ সুপার তুষার দোশী বলেন, ‘‘একজন মহিলা নিজের জীবন শেষ করে দিলেন। তিনি যে অভিযোগ তুলে গিয়েছেন, তার মধ্যে সত্যতা কিছু তো থাকবেই। আমরা সেই সত্য বার করার চেষ্টা করছি। এটি অত্যন্ত চ্যালেঞ্জিং একটি ঘটনা। কারণ, চিকিৎসক আগে কোনও অভিযোগ করেননি। হোয়াট্সঅ্যাপ চ্যাট এবং প্রযুক্তিগত তথ্যগুলিকে খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই ঘটনার নেপথ্যে ব্ল্যাকমেলের কোনও বিষয় ছিল কি না, তা-ও তদন্ত করে দেখা হবে।’’
প্রসঙ্গত, গত বৃহস্পতিবার রাতে সাতারার একটি হোটেল থেকে চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। হাতের তালুতে দুই অভিযুক্তের নামও লিখে গিয়েছেন তিনি। শনিবার সকালে গ্রেফতার করা হয় চিকিৎসকের বাড়িওয়ালার পুত্রকে। ওই দিন রাতে গ্রেফতার হন সাব-ইনস্পেক্টর। ফলটন থানায় এসে আত্মসমর্পণ করেন তিনি।