ছবি: ফাইল চিত্র।
শ্রদ্ধা এবং আফতাব দিল্লির যে বাড়িতে থাকতেন, মে মাসে সেই বাড়ির জলের বিল এসেছিল অত্যধিক বেশি! অর্থাৎ শ্রদ্ধা খুনের মাসে মেহরৌলীর ওই তিন তলা বাড়ির জলের বিল অনেকটাই বেশি এসেছিল। তা হলে কি শ্রদ্ধার রক্ত ধুতে অতিরিক্ত জল ব্যবহার করতেন আফতাব? আর সেই কারণেই বেড়ে গিয়েছিল জলের বিল? জলের বিলটি ইতিমধ্যেই পৌঁছেছে তদন্তকারী পুলিশকর্তাদের হাতে। আর এই জলের বিল অভিযুক্ত আফতাব আমিন পুনাওয়ালার বিরুদ্ধে অন্যতম প্রমাণ হয়ে দাঁড়াতে পারে বলেও সূত্রের খবর।
পুলিশ সূত্রে খবর, মুম্বই থেকে দিল্লি আসার পর শ্রদ্ধা এবং আফতাব ছতরপুরের যে তিন তলা বাড়িতে একত্রবাসে ভাড়া থাকতেন সেখানে প্রতি মাসে জলের আলাদা বিল আসত। আফতাব-শ্রদ্ধার সঙ্গে তিনতলা বাড়ির দোতলায় থাকতেন। ওই তলায় থাকা তিনটি ফ্ল্যাটের জলের বিল একসঙ্গে আসত। মে মাসে জলের বিল অনেক বেশি আসায় হতবাক হয়ে যান বাকি দু’টি ফ্ল্যাটে থাকা আবাসিকরা। কারণ এর আগে কখনও জলের বিল এত আসেনি। দিল্লি সরকার ২০ হাজার লিটার পর্যন্ত জলের ব্যবহারে কোনও দাম নেয় না। বেশির ভাগ মাসেই, আবাসিকদের জলখরচ বাবদ এক টাকাও দিতে হয়নি। কিন্তু মে মাসের বিল দেখে চমকে গিয়েছিলেন সকলে। কিন্তু আফতাবকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলেও তিনি কোনও কথা বলেননি বলেই প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন।
কিন্তু ২০২২ সালের মে মাসে ওই বাড়ির জলের বিল দেখে রীতিমতো বিস্মিত হন ওই বাড়ির আবাসিকরা। সূত্রের খবর, পুলিশ মনে করছে শ্রদ্ধার দেহ করাত দিয়ে টুকরো টুকরো করে ফেলার পর ঘরময় ছড়িয়ে পড়েছিল রক্ত। আর সেই রক্তের দাগ ধুতে যথেষ্ট বেগও পেতে হয়েছিল অভিযুক্তকে। প্রথমে গুগ্ল দেখে রক্ত সাফ করার উপায় দেখলেও পরে জল ব্যবহার করেই ওই রক্ত পরিষ্কার করার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত আফতাব।
দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, প্রেমিকার দেহের টুকরোগুলি বাথরুমে রাখার পর রক্তের দাগ পরিষ্কার করতে আফতাব জলের কল চালু করে রেখে দিয়েছিলেন বলে মনে করা হচ্ছে। আর সেই কারণেই বাড়ির জলের বিল বেশি এসেছিল । দিল্লি পুলিশের তত্ত্ব যদি ঠিক প্রমাণিত হয়, তাহলে শ্রদ্ধা হত্যা মামলায় জলের বিল একটি বড় এবং গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ হতে পারে।
ওই ফ্ল্যাটের তত্ত্বাবধায়ক রাজেন্দ্র কুমারের মতে, বিল বেশি আসা সত্ত্বেও আফতাব মে মাসের জলের বিল বাবদ কোনও টাকা দেননি।
প্রসঙ্গত, গত ১৮ মে দিল্লির মেহরৌলীতে একত্রবাসে থাকা প্রেমিকা শ্রদ্ধাকে খুন করার অভিযোগ রয়েছে প্রেমিক আফতাবের বিরুদ্ধে। এর পর নাকি আমেরিকার এক ওয়েব সিরিজ় থেকে ‘অনুপ্রেরণা’ নিয়ে শ্রদ্ধার মৃতদেহ ৩৫ টুকরো করে ফেলেন আফতাব। সেই মৃতদেহ সংরক্ষণ করে রাখতে কিনে আনা হয় নতুন ফ্রিজ। এর পর ১৮ দিন ধরে ছতরপুর ছিটমহলের জঙ্গলের বিভিন্ন জায়গায় শ্রদ্ধার দেহের টুকরোগুলি ছড়িয়ে দিয়ে আসেন অভিযুক্ত আফতাব। সন্দেহ এড়াতে আফতাব রোজ রাত ২টো নাগাদ একটি পলিব্যাগে করে শ্রদ্ধার দেহের টুকরো নিয়ে বাড়ি থেকে বেরোতেন বলেও পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে।
শ্রদ্ধার বাবার অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করার পর দিল্লি পুলিশ গত শনিবার আফতাবকে গ্রেফতার করে। তখন থেকেই শুরু হয়েছে বিস্তারিত তদন্ত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy