আমেরিকার সঙ্গে ভারতের টানাপড়েনের মাঝে বহুপাক্ষিক কূটনীতিতে আরও জোর দিচ্ছে নয়াদিল্লি। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বৈঠক সারলেন সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লরেন্স ওয়াং। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা হয় দু’জনের মধ্যে। পাশাপাশি সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রসঙ্গেও কথা হয়েছে দুই রাষ্ট্রনেতার। তিন দিনের সফরে গত মঙ্গলবার ভারতে এসেছেন ওয়াং। এ বছরই ভারত এবং সিঙ্গাপুরের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৬০ বছর পূরণ হচ্ছে। এ অবস্থায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজুবত এবং বহুমুখী সহযোগিতার পথকে আরও প্রশস্ত করতে এই বৈঠক যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ।
ওয়াংয়ের সঙ্গে বৈঠক শেষে মোদী জানান, ভারত এবং সিঙ্গাপুরের মধ্যে সম্পর্ক কূটনীতির ঊর্ধ্বে। কৃত্রিম মেধা, কোয়ান্টাম এবং অন্য ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার পথ আরও প্রশস্ত করার বিষয়ে আলোচনা হয়েছে মোদী এবং ওয়াংয়ের। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীও জানান, বর্তমান বিশ্বের অনিশ্চয়তা এবং অস্থিরতার আবহে ভারত-সিঙ্গাপুরের পারস্পরিক সহযোগিতা আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। দুই নেতার আলোচনায় পহেলগাঁও হত্যাকাণ্ড এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের প্রসঙ্গেও কথা হয় দু’জনের।
যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে মোদী বলেন, “সন্ত্রাসবাদ নিয়ে আমাদের উভয়েরই একই উদ্বেগ রয়েছে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করা প্রতিটি মানবতাবাদী দেশের কর্তব্য বলে আমরা মনে করি। পহেলগাঁওয়ে জঙ্গিহানার পরে ভারতীয়দের প্রতি সমবেদনা জানানোর জন্য এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের লড়াইয়ে সিঙ্গাপুর সমর্থন জানিয়েছে।” এর জন্য সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী এবং সে দেশের সরকারকে ধন্যবাদও জানান মোদী।
আরও পড়ুন:
এক দশক আগে চালু হওয়া ভারতের ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় ভিশনের দিক থেকে সিঙ্গাপুর ভারতের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সঙ্গী। সিঙ্গাপুরে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ ভারতীয়ের বাস। দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার আন্তর্জাতিক জোট ‘আসিয়ান’-এর সদস্য দেশগুলিও কৌশলগত ভাবে ভারতকের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। ‘আসিয়ান’-এর সদস্য দেশগুলির মধ্যে রয়েছে সিঙ্গাপুরও। গত বছরের সেপ্টেম্বরে প্রধানমন্ত্রী মোদী গিয়েছিলেন সিঙ্গাপুরে। বৈঠক করে এসেছেন ওয়াংয়ের সঙ্গে। এ বার ভারতে এসে মোদীর সঙ্গে বৈঠক করে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে ফের ঝালিয়ে নিলেন ওয়াং।