বিয়েতে দামি উপহার দেওয়া যাবে না। ডিজে বাজিয়ে অযথা টাকা ওড়ানো যাবে না। উত্তরাখণ্ডের ২৫টি গ্রাম সম্মিলিত ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, বিলাসবহুল যে কোনও রীতিই বাদ দিতে হবে বিয়ের অনুষ্ঠান থেকে। পরিবারগুলির উপর সামাজিক এবং আর্থিক চাপ কমানোর লক্ষ্যে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মেনুতে নিষিদ্ধ করা হয়েছে মদ ও বেশ কিছু খাবার এবং পানীয়। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির সিদ্ধান্ত, কেউ এই নিয়ম লঙ্ঘন করলে তাঁকে এক লক্ষ টাকা জরিমানা দিতে হবে।
উত্তরাখণ্ডের চকরাতা অঞ্চলের জৌনসর বাওয়ার এলাকার ২৫টি গ্রামে বিয়ে নিয়ে নতুন নিয়ম চালু করা হয়েছে। তালিকায় রয়েছে দোহা, দাউ, চুতোউ, বাজাউ, ঘিঙ্গো এবং কাইত্রির মতো গ্রামের নাম। বলা হয়েছে, এই সমস্ত গ্রামে বিয়ের মেনুতে চাউমিন, মোমোর মতো খাবার রাখা যাবে না। যে কোনও রকমের ফাস্টফু়ড নিষিদ্ধ। মদের আয়োজনও করা যাবে না। পরিবর্তে উত্তরাখণ্ডের গঢ়ওয়াল প্রদেশের ঐতিহ্যবাহী স্থানীয় খাবারের উপর জোর দিতে বলেছেন গ্রামপ্রধানেরা। তাতে এক দিকে যেমন খরচ বাঁচবে, অন্য দিকে ঐতিহ্যরক্ষাও হবে।
আরও পড়ুন:
গ্রামবাসীদের সমর্থনেই বিয়ে সংক্রান্ত নিয়মকানুন পরিবর্তন করা হয়েছে। দাবি, বিয়েতে অনাবশ্যক খরচ বিভিন্ন পরিবারের মধ্যে প্রতিযোগিতার মানসিকতা সৃষ্টি করছিল। সামর্থ্য না থাকলেও বর ও কনের পরিবার বিয়ের বিলাসবহুল আয়োজনে বাধ্য হচ্ছিলেন শুধুমাত্র সমাজে মানরক্ষার খাতিরে। এই ব্যবস্থা বদলানোর প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেছেন গ্রামপ্রধানেরা। দোহা গ্রামের প্রধান রাজেন্দ্র তোমর টাইম্স অফ ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘‘এই ধরনের রীতিনীতি প্রতিযোগিতায় পরিণত হয়ে গিয়েছিল। অযথা চাপ তৈরি হচ্ছিল এর ফলে।’’ শুধু দামি উপহার নয়, কোনও দামি জিনিস বিয়ের আসরে ব্যবহার করাই যাবে না বলে জানানো হয়েছে।
গ্রামপ্রধানদের এই সিদ্ধান্তে খুশি স্থানীয়েরা। এক গ্রামবাসী বলেন, ‘‘আমাদের স্থানীয় সংস্কৃতি, স্থানীয় খাবারের প্রচার করা হচ্ছে। এতে আমরা খুব খুশি। এর ফলে নতুন প্রজন্ম তাদের শিকড় মনে রাখতে পারবে।’’