আত্মহত্যা, নিছক দুর্ঘটনা না কি নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে? রাজস্থানের জয়পুরে চতুর্থ শ্রেণির ছাত্রীর মৃত্যুর ঘটনায় বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঠেছে। শুধু তা-ই নয়, মৃত্যু ঘিরে ঘনাচ্ছে রহস্যও। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ এটিকে আত্মহত্যার ঘটনা বলেই সন্দেহ করছে। কিন্তু ছাত্রীর পরিবারের দাবি, তাদের কন্যা আত্মহত্যা করতেই পারে না। স্কুল কর্তৃপক্ষ এই ঘটনায় কিছু লুকোনোর চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ তাঁদের। ফলে ছাত্রীমৃত্যুতে রহস্য আরও বেড়েছে।
শনিবার স্কুলের পাঁচ তলা থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয় চতুর্থ শ্রেণির ওই পড়ুয়ার। পুলিশে হাতে যে সিসিটিভি ফুটেজ এসেছে, সেখানেও ওই ছাত্রীকে রেলিং ধরে দাঁড়াতে দেখা গিয়েছে। তার পরই রক্তাক্ত অবস্থায় ছাত্রীটিকে উদ্ধার করা হয়। অভিযোগ উঠেছে, ছাত্রীটি পাঁচ চলা নীচে পড়ে যাওয়ার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ মেঝের রক্তের দাগ ধুইয়ে পরিষ্কার করে দেন। স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টার যে অভিযোগ উঠেছে, তার ভিত্তিতেও মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু হয়েছে।
মানসরোবর থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক লক্ষ্মণ সিংহ খাতানা জানিয়েছেন, মৃত ছাত্রীর পরিবারে স্কুল কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষকদের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলেছে। তার ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু করা হয়েছে। স্কুলের সমস্ত সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করেছেন ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞরা। ছাত্রীর মায়ের ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তি টাইমস অফ ইন্ডিয়া-কে জানিয়েছেন, ঘটনাটি শুনেই তিনি স্কুলে আসেন। কিন্তু যেখানে ছাত্রীটি পড়েছিল, সেই জায়গায় রক্তের কোনও দাগ ছিল না। তিনি যাওয়ার আগেই সেই দাগ মুছে ফেলা হয়েছিল বলে অভিযোগ।
স্কুলের অধ্যক্ষ ইন্দু দুবে টাইমস অফ ইন্ডিয়া-র কাছে দাবি করেছেন, ছাত্রীটি ওয়াশরুমে যাওয়ার অনুমতি চেয়েছিল। তার ক্লাসের পাশেই ছিল ওয়াশরুম। সে দিকে না গিয়ে সে সিঁড়ি বেয়ে উপরের তলায় ওঠে। পাঁচ চলায় পৌঁছোয়। তার পর সেখান থেকে লাফ মারে। অধ্যক্ষের কথায়, ‘‘পড়াশোনায় দারুণ ছিল ওই ছাত্রী। কেন এ কাজ করল ভেবে পাচ্ছি না। ঘটনার আগে কোনও অস্বাভাবিকতাও লক্ষ করা যায়নি ওর মধ্যে।’’ অধ্যক্ষের আরও দাবি, ঘটনার সঙ্গে সঙ্গেই ছাত্রীটিকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। ওর বাবা-মাকে খবর দেওয়া হয়। ছাত্রীর বাবা বিজয় কুমারের অভিযোগ, স্কুল কর্তৃপক্ষ তাঁর কোনও কথার উত্তর দেননি। এমনকি তাঁকে ঘটনাস্থলেও যেতে দেওয়া হয়নি। স্কুলশিক্ষামন্ত্রী মদন দিলাওয়ার জেলা শিক্ষা আধিকারিককে এই ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন।
অন্য দিনের মতে শনিবার স্কুলে গিয়েছিল বছর নয়েকের আমায়রা। স্থানীয় এক বেসরকারি স্কুলে পড়াশোনা করে সে। দুপুরের দিকে স্কুল বিল্ডিংয়ের নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। তড়িঘড়ি তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে চিকিৎসকেরা পরীক্ষা করে মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনাকে কেন্দ্র করে স্কুলে শোরগোল পড়ে যায়। নানা প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ছাত্রীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে।