আমজনতার রুটিরুজির সমস্যা বিজেপিকে বেগ দিতে পারে, হরিয়ানা-মহারাষ্ট্রের বিধানসভা ভোটের ফল এই ইঙ্গিতই দিচ্ছে বলে মনে করছে কংগ্রেস। তাই আজ সনিয়া গাঁধী চাষিদের সঙ্কট নিয়ে মোদী সরকারকে আক্রমণ করলেন।
গুজরাত দাঙ্গার সময় অটলবিহারী বাজপেয়ী তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে ‘রাজধর্ম’ পালনের কথা মনে করিয়েছিলেন। আজ সনিয়া সেই রাজধর্মের কথাই স্মরণ করিয়ে বলেছেন, চাষিদের স্বার্থ রক্ষা করুক সরকার। কারণ চাষিরা ফের ঘোষিত সহায়ক মূল্যের থেকে অনেক কম দামে ফসল বেচতে বাধ্য হচ্ছেন। সনিয়ার প্রশ্ন, ‘‘কৃষকরা আঁধারে দীপাবলি পালন করতে বাধ্য হচ্ছেন কেন?’’ রবি ফসলের সহায়ক মূল্যে সামান্য বৃদ্ধি নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সনিয়া।
মহারাষ্ট্রে কংগ্রেস-এনসিপি জোট হারলেও বিজেপির আসন কমেছে। হরিয়ানায় বিজেপিকে অনেকখানিই ধাক্কা দিতে পেরেছে কংগ্রেস। লোকসভায় বিজেপির বিপুল জয়ের তিন মাসের মধ্যে এমন ফল আশা না করে হতোদ্যম হয়ে বসেছিল কংগ্রেস। কিন্তু ফল দেখে ‘ম্যাডাম’ খুশি বলেই জানিয়েছেন হরিয়ানায় কংগ্রেসের কান্ডারি ভূপেন্দ্র সিংহ হুডা। আজ দশ জনপথে সনিয়ার সঙ্গে বৈঠকের পরে হুডা বলেন, ‘‘উনি বলেছেন, আমরা ভাল ফল করেছি। উনি খুশি।’’
হুডাকে একেবারে শেষবেলায় হরিয়ানার ভোটের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। আজ কংগ্রেস নেতা শশী তারুর বলেছেন, লোকসভা ভোটে হারের ফলে কংগ্রেস হতচকিত হয়ে যাওয়ার দল অবহেলিত হয়েছে। হরিয়ানায় রাজ্য নেতৃত্বে বদল ছয় মাস আগে হলে আরও ফল ভাল হত। তাঁর দাবি, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন কংগ্রেস সভাপতি ঠিক হোক।
হুডার সঙ্গে বৈঠকের পরেই সন্ধ্যায় সনিয়া বিবৃতি জারি করে মোদী সরকারকে আক্রমণ করেন। তাঁর অভিযোগ, মান্ডিগুলোয় খরিফ ফসল সহায়ক মূল্যের তুলনায় গড়ে ২২.৫ শতাংশ কম দামে বিক্রি হচ্ছে। মন্দা বলে ধানচাষিরা ২০০ টাকা কুইন্টাল দরে ফসল বেচতে বাধ্য হচ্ছেন।
বস্তুত হরিয়ানা-মহারাষ্ট্রের ফল ঘোষণার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই শুক্রবার কংগ্রেস আমজনতার সমস্যার কথা বলে ‘মুক্ত আঞ্চলিক বাণিজ্য চুক্তি’-র বিরোধিতা করেছিল। মনমোহন সরকারের সময় থেকে এই চুক্তি নিয়ে দর কষাকষি শুরু। এ বার মোদী সরকার তা কার্যকর করতে চলেছে বলে আরএসএস-এর স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ আর বামেরা সরব হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেস নীরব ছিল। এখন কংগ্রেসেরও অভিযোগ, এই চুক্তি হলে দেশের চাষি, পশুপালক থেকে ডেয়ারি শিল্প, ছোট ব্যবসা মার খাবে। আজ সনিয়ার অভিযোগ, কৃষিজ পণ্যের রফতানি কমছে। ফসলের সঠিক দামও মিলছে না। তিনি বলেন, ‘‘এই শোষণ বন্ধ হোক। অন্নদাতা চাষি পরিশ্রমের সঠিক মূল্য পান। সেটাই সরকারের আসল রাজধর্ম।’’