E-Paper

‘বাবা, মনে হয় আর বাঁচব না’

বৃহস্পতিবারও উত্তরকাশীর আক্রান্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ চলেছে। এখনও আংশিক বিচ্ছিন্ন গঙ্গোত্রী-সহ বেশ কিছু এলাকা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ০৮ অগস্ট ২০২৫ ১০:১৭
মঙ্গলবার উত্তরকাশীর পাহাড় থেকে ক্ষীরগঙ্গা ধরে সাক্ষাৎ ‘মৃত্যুদূত’ হয়ে নেমে আসে হড়পা বান।

মঙ্গলবার উত্তরকাশীর পাহাড় থেকে ক্ষীরগঙ্গা ধরে সাক্ষাৎ ‘মৃত্যুদূত’ হয়ে নেমে আসে হড়পা বান। —ফাইল চিত্র।

“বাবা, মনে হয় আমরা আর বাঁচব না। নালা দিয়ে প্রচুর জল ঢুকছে।” সন্তানদের কাছ থেকে শেষ বার এই কথা ক’টাই শুনতে পেয়েছিলেন নেপালের পরিযায়ী শ্রমিক বিজয় সিংহ এবং তাঁর স্ত্রী কালী দেবী। মিনিট দুয়েক মাত্র কথা হয়েছিল তাঁদের মধ্যে। ভাটওয়াড়ির হেলিপ্যাডে বসে এই কথাগুলোই আওড়াচ্ছিলেন বিজয় সিংহ এবং কালী দেবী। মঙ্গলবার দুপুরে উত্তরকাশীর ভয়াবহ হড়পা বান আর ক্ষীরগঙ্গার উথাল-পাথাল স্রোত ভাসিয়ে নিয়ে গিয়েছে ধারালী গ্রামকে। এখনও খোঁজ নেই বহু মানুষের। সেই নিখোঁজদের মধ্যেই রয়েছেন বিজয়-কালীর সন্তানেরা।

বৃহস্পতিবারও উত্তরকাশীর আক্রান্ত এলাকাগুলিতে উদ্ধারকাজ চলেছে। এখনও আংশিক বিচ্ছিন্ন গঙ্গোত্রী-সহ বেশ কিছু এলাকা। সরকারি ভাবে নিখোঁজের সংখ্যা নিয়ে বিস্তর ধন্দ রয়েছে। এ দিন মুখওয়ার কাছে একটি জায়গা থেকে ৩০৭ জনকে উদ্ধার করে তাঁদের হর্ষিলের হেলিপ্যাডে পাঠানো হয়েছে।

নেপালের বাসিন্দা হলেও বিজয়রা ধারালী গ্রামে থাকতেন। ভাটওয়াড়ি এলাকায় সেতু এবং রাস্তাঘাট সংস্কারের কাজে যুক্ত ওঁরা। মঙ্গলবারও বৃষ্টি মাথায় নিয়ে দুপুর ১২টা নাগাদ কাজে বেরিয়েছিলেন বিজয় ও কালী। তাঁদের দলে নেপাল থেকে আসা আরও ২৪ জন পরিযায়ী শ্রমিক ছিলেন। তাঁরা কোনও কারণে কাজে যেতে পারেননি। হড়পা বানে ভেসে গিয়েছেন তাঁরাও। মঙ্গলবার দুপুর ১টা ৪৫ নাগাদ হড়পা বান নেমে আসে উত্তরকাশী জেলার ধারালী গ্রামে। তার আগে থেকেই অতিভারী বৃষ্টির জেরে জল বাড়তে শুরু করে গ্রাম সংলগ্ন ক্ষীরগঙ্গা নদীতে। বাড়ির নালাতেও যে জল ঢুকতে শুরু করেছে, সে কথা বিজয়কে ফোন করে জানায় তাঁর সন্তানরা। এর কিছু ক্ষণের মধ্যেই বিপর্যয়।

“যখন উপত্যকা ছেড়েছিলাম, ভাবতেই পারিনি এমন বিপর্যয় আসবে। যদি বন্যার কথা আগে থেকে জানতাম, সন্তানদের ফেলে আসতাম না।” কাঁদতে কাঁদতে বলছেন কালী। তাঁর আর্জি, “সরকারের কাছে আবেদন করছি, আমাদের হর্ষিল উপত্যকায় পৌঁছে দিক। আমরাই সন্তানদের খুঁজে বার করব।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Uttarkashi

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy