Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
school

Ranchi: জল নেই, নেই শৌচাগার, ‘নেই’ শিক্ষকও! স্কুলের হাল দেখিয়ে শিক্ষকদের রোষে খুদে ‘সাংবাদিক’

সরফরাজের দাবি, ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই এক শিক্ষক বাড়িতে এসে তার মা-বাবাকে হুমকি দেন। হুমকি দেন পুলিশে অভিযোগ করার।

খুদে ‘সাংবাদিক’ সরফরাজ। ছবি সৌজন্য টুইটার।

খুদে ‘সাংবাদিক’ সরফরাজ। ছবি সৌজন্য টুইটার।

সংবাদ সংস্থা
রাঁচী শেষ আপডেট: ০৬ অগস্ট ২০২২ ১৫:৫৬
Share: Save:

জল নেই। টিউবওয়েলের লাইন করা হয়েছে, কিন্তু সেখানে কলের উপরের অংশই নেই! ঘন জঙ্গলে স্কুল চত্বর ভর্তি। শৌচাগার থাকলেও তার শোচনীয় অবস্থা। প্রয়োজন পড়লে বাইরে শৌচকর্মে যেতে হয় পড়ুয়াদের। শ্রেণিকক্ষ রয়েছে ঠিকই, কিন্তু তাতে ঢোকে না আলো-বাতাস। পলেস্তরা খসে খসে পড়ছে। বিপদ প্রতি মুহূর্তে মাথার উপর ঝুলছে।

পড়ুয়ারা এলেও, শিক্ষকদের দেখা পাওয়া যায় না। ঝাড়খণ্ডের রাঁচীর গোড্ডার একটি প্রাথমিক স্কুলের এমনই ভয়াবহ ছবি তুলে ধরল এক খুদে পড়ুয়া। গোড্ডার মাহগামা ব্লকের ভিখিয়াচক প্রাথমিক স্কুলের ঘটনা।

নিজেকে সাংবাদিকের ভূমিকায় রেখে স্কুলেরই আরও কয়েক পড়ুয়াকে প্রশ্ন করতে দেখা গেল ওই খুদে পড়ুয়াকে। ‘সাংবাদিকের’ নাম নাম সরফরাজ। লুঙ্গি ভাঁজ করে পরা। গায়ে হলুদ টিশার্ট। হাতে একটা লাঠি, তার উপরিভাগে একটি ঠান্ডা পানীয়ের বোতল ঢোকানো। সেটিকে বুম হিসাবে ব্যবহার করছিল সরফরাজ।

ভিডিয়োর শুরু হচ্ছে, ‘আমি এখন আপনাদের দেখাব আমাদের গ্রামের প্রাথমিক স্কুলে কী অবস্থা।’ এর পরই ‘বুম’ নিয়ে তার সহপাঠীদের প্রশ্ন করে সে, ‘স্কুলের কী অবস্থা তোমরা বলো।’ এর পরই তাকে স্কুলভবনের বাইরে বেরিয়ে আসতে দেখা যায়। স্কুল চত্বরের ছবিটা দেখাতে দেখাতে সে বলে, ‘শিক্ষকরা স্কুলে আসেন না। স্কুল ঘন জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। জলের কোনও ব্যবস্থা নেই। শৌচাগারও নেই। স্কুলের ঘরে গবাদি পশুদের খাবার রাখা হয়েছে।’ স্কুলের অবস্থা দেখিয়ে মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সরেনকে আর্জি জানিয়েছে সে। দাবি, স্কুলের সব শিক্ষককে যেন বরখাস্ত করা হয়।

সরফরাজের এই ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই শিক্ষকদের রোষের মুখে পড়ে সে। সরফরাজের দাবি, ভিডিয়োটি প্রকাশ্যে আসতেই এক শিক্ষক বাড়িতে এসে তার মা-বাবাকে হুমকি দেন। হুমকি দেন পুলিশে অভিযোগ করার। সরফরাজের কথায়, “আমার বাড়িতে মহম্মদ তাজিমুদ্দিন নামে এক শিক্ষক এসে হুমকি দিয়ে গিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রীকে অনুরোধ জানাচ্ছি ওই শিক্ষককে বরখাস্ত করার।” রোষের মুখে পড়েও যে সে ভয় পাচ্ছে না, সে কথাও জানিয়েছে সরফরাজ।

সে জানিয়েছে, ওই স্কুল প্রথমে এত খারাপ ছিল না। যত দিন গিয়েছে অবস্থার অবনতি হয়েছে। শিক্ষকরা শুধু হাজিরা দেওয়ার জন্য আসেন, তা-ও নিয়মিত নয়। ঠিক মতো পড়ান না বলেও দাবি সরফরাজের।

খুদে পড়ুয়ার ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসার পর দিনই স্কুল পরিষ্কার করা হয়। জেলা শিক্ষা আধিকারিক রজনী দেবী দুই শিক্ষককে নিলম্বিত করার নির্দেশ দিয়েছেন। স্কুলশিক্ষা মন্ত্রী সরফরাজকে ডেকে জিজ্ঞাসা করেন, শিক্ষককে বরখাস্ত করা উচিত কি না। সরফরাজ জানায়, সেটাই ভাল হবে।

বড় হয়ে সাংবাদিক হতে চায় সরফরাজ। কিন্তু সে জানিয়েছে, শিক্ষকরা সাংবাদিকতার পেশা পছন্দ করে না। এই ধরনের কাজ থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখার পরামর্শ দেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

school ranchi Student
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE