Advertisement
০১ মে ২০২৪

বিরতি, তবে যুদ্ধের মাঠেই থাকছেন স্বামী

সঙ্ঘ পরিবার এবং দলের হস্তক্ষেপের পর আপাতত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তবে খোঁচাটা রেখেই দিলেন! বুঝিয়ে দিলেন, চাপের মুখে আপাতত থামলেও যুদ্ধের মাঠ থেকে মোটেই সরছেন না। অন্তত এখনই।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নিজস্ব সংবাদদাতা শেষ আপডেট: ২৪ জুন ২০১৬ ১০:০০
Share: Save:

সঙ্ঘ পরিবার এবং দলের হস্তক্ষেপের পর আপাতত যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করলেন বিজেপি নেতা সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। তবে খোঁচাটা রেখেই দিলেন! বুঝিয়ে দিলেন, চাপের মুখে আপাতত থামলেও যুদ্ধের মাঠ থেকে মোটেই সরছেন না। অন্তত এখনই।

ইউপিএ আমলে নিযুক্ত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর রঘুরাম রাজনকে সরাসরি অপসারণের দাবি তুলে দেশ-বিদেশে তোলপাড় ফেলে দিয়েছিলেন স্বামী। তার পর থেকেই আলোচনার কেন্দ্রে উঠে আসেন রাজন। অবশেষে নিজেই সরে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর। সেটাকে জয় হিসেবে ধরে নিয়ে রক্তের স্বাদ পাওয়া সুব্রহ্মণ্যম স্বামী গতকাল তাঁর পরবর্তী নিশানা করেছিলেন দেশের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণিয়নকে। কিন্তু অরুণ জেটলি থেকে রবিশঙ্কর প্রসাদ, মায় বিজেপির তরফেও স্বামীর মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করা হয়। বিজেপি সূত্রের খবর, পরে রাতেই রাজনাথ সিংহ কথা বলেন স্বামীর সঙ্গে। সঙ্ঘের পক্ষ থেকেও হস্তক্ষেপ করা হয়। অবশেষে আজ যুদ্ধবিরতির কথা নিজেই ঘোষণা করেন স্বামী। যদিও সেই সঙ্গেই বুঝিয়েছেন, এত সহজে তিনি থামবেন না।

বৃহস্পতিবার সকালে টুইট করে স্বামী বলেন, ‘‘যদি সব কিছু জানার পরেও বিজেপি ও কেন্দ্রীয় সরকার মনে করেন অরবিন্দ সুব্রহ্মণিয়ন একজন সম্পদ, তা হলে আমি আপাতত আমার দাবি স্থগিত রাখছি।’’ সেই সঙ্গেই দেশের মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টাকে কার্যত হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘সত্য প্রমাণের জন্য আমি অপেক্ষা করব।’’ এই সঙ্গেই অরবিন্দের প্রতি তীব্র শ্লেষ ছড়িয়ে স্বামীর প্রশ্ন, ‘‘একজন দেশপ্রেমিক কী করে একটি বিদেশি রাষ্ট্রকে ভারতের বিরুদ্ধে কাজ করার পরামর্শ দিতে পারেন?’’ রাজন-বিদায় সুনিশ্চিত করার পরেই সুব্রহ্মণ্যম স্বামী ঘোষণা করেছিলেন, তাঁর ঝুলিতে এমন ২৭ জন আমলার নাম রয়েছে, যাঁরা কংগ্রেস সভানেত্রী সনিয়া গাঁধীর অনুগত। পি চিদম্বরম তাঁদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে বসিয়ে গিয়েছেন। একে একে এই আমলাদের মুখোশ তিনি খুলবেন বলেও জানিয়েছিলেন।

এই সূত্র ধরেই আজ আর এক জন আমলাকেও স্বামী নিশানা করেছেন টুইটারে। ঘটনাচক্রে এই আমলাও সরাসরি অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলির মন্ত্রকের অধীনে। ঘটনা হল, এ পর্যন্ত যত জন আমলার বিরুদ্ধে

স্বামী সরব হয়েছেন, তাঁরা সকলেই জেটলির মন্ত্রকের সঙ্গে কোনও না কোনও ভাবে যুক্ত। এ দিন যে আমলার বিরুদ্ধে তিনি তোপ দেগেছেন, তিনি অর্থ বিষয়ক সচিব শক্তিকান্ত দাস। এক ব্যক্তি টুইটারে স্বামীকে লেখেন, শক্তিকান্তকে তামিলনাড়ুতে ফেরত পাঠানো উচিত। সেই বক্তব্যকে সমর্থন করে স্বামী লেখেন, মহাবলিপুরমে এক সম্পত্তি মামলায় শক্তিকান্ত চিদম্বরমকে সহযোগিতা করছেন। যদিও ‘স্বভাববহির্ভূত ভাবে’ শক্তিকান্তকে সরানোর দাবি আজই তোলেননি বিজেপির এই সাংসদ।

তাঁর দফতরের বিভিন্ন আমলার বিরুদ্ধে স্বামীর এই আচরণে বেশ কিছু দিন ধরেই ক্ষুব্ধ জেটলি। গত কালই তিনি স্বামীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে বলেছেন, বক্তব্যে সংযম থাকা দরকার। বিজেপি সূত্রের মতে, জেটলি বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী ও বিজেপি সভাপতি অমিত শাহের গোচরে এনেছেন। তার পরেই অরবিন্দ সুব্রহ্মণিয়নের বিরুদ্ধে স্বামীর বক্তব্য খণ্ডন করেছেন অমিত শাহ। বিষয়টি নিয়ে সঙ্ঘ নেতৃত্বের সঙ্গেও কথা বলেন জেটলি। তার পরেই সঙ্ঘ ও বিজেপির পক্ষ থেকে স্বামীকে বলা হয়, এ ধরনের মন্তব্য থেকে বিরত থাকতে।

রঘুরাম রাজনের সময় দল কিন্তু স্বামীকে এ ধরনের কোনও বার্তা দেয়নি। তাই রাজন যখন নিজে থেকেই বিদায় ঘোষণা করেছিলেন, তখন আরও উৎসাহ বেড়েছিল স্বামীর। এ দিন দল ও সঙ্ঘের চাপে সাময়িক থামলেও জেটলির প্রতি তাঁর মনোভাব স্পষ্ট করে দিয়ে স্বামী আজ বলেন, ‘‘জেটলি কী বলছেন, তাতে আমার কী! দল ও সরকার যদি মনে করে, সব কিছু জেনেও অরবিন্দ সুব্রহ্মণিয়নকে মাফ করা যায়, তা হলে আমার কিছু করার নেই।’’ আর রঘুরাম রাজন? স্বামীর কথায়, ‘‘ওই বিষয়টা পুরনো হয়ে গিয়েছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Subramanian Swamy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE