Advertisement
E-Paper

জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলকে সাংবিধানিক বৈধতা দিতে নারাজ সুপ্রিম কোর্ট, খারিজ আর্জি

সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, কাশ্মীরে ৩৭০ ধারার অবলুপ্তির ক্ষেত্রে কোনও সাংবিধানিক বিধি লঙ্ঘিত হয়েছিল কি না, তার উপর ভিত্তি করে মোদী সরকারের পদক্ষেপের বিচারবিভাগীয় পর্যালোচনা হবে।

গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৩ ১৬:১০
Share
Save

জম্মু ও কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘সাংবিধানিক ভাবে বৈধ’ ঘোষণার দাবি খারিজ করে দিল সুপ্রিম কোর্ট। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ বিচারপতির সাংবিধানিক বেঞ্চ সোমবার এ সংক্রান্ত একটি দাবি খারিজ করে দিয়েছে। শনিবার সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছিল, জম্মু ও কাশ্মীর থেকে ৩৭০ ধারার অবলুপ্তির ক্ষেত্রে কোনও সাংবিধানিক বিধি লঙ্ঘিত হয়েছিল কি না, তার উপর ভিত্তি করে নরেন্দ্র মোদী সরকারের ২০১৯ সালের পদক্ষেপের বিচারবিভাগীয় পর্যালোচনা হবে। তার পরে শীর্ষ আদালতের এই পদক্ষেপ ‘তাৎপর্যপূর্ণ’ বলে মনে করছেন সংবিধান বিশেষজ্ঞদের একাংশ।

প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ সোমবার জানিয়েছে, ৩৭০ ধারা বাতিলের সাংবিধানক বৈধতা সংক্রান্ত মামলা বিচারধীন। তাই নতুন করে এই সংক্রান্ত শুনানির প্রয়োজন নেই। প্রসঙ্গত, ২০১৯ সালের ৫ অগস্ট রাজ্যসভায় জম্মু ও কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা দানকারী ৩৭০ নম্বর ধারা প্রত্যাহারের কথা ঘোষণা করার সময় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ জানিয়েছিলেন, এ সংক্রান্ত নির্দেশনামায় সই করেছেন রাষ্ট্রপতি। এর পরে সংসদের দুই কক্ষে ৩৭০ বাতিলের বিল পাশের ফলে ‘বিশেষ’ মর্যাদা হারায় কাশ্মীর। এমনকি, হারায় রাজ্যের মর্যাদাও। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যকে ভেঙে জম্মু ও কাশ্মীর এবং লাদাখ— দু’টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল তৈরি করা হয়।

এ ক্ষেত্রে সরকার পক্ষের দাবি, ১৯৫০ সালে সংবিধান প্রণয়নের সময় ৩৭০ অনুচ্ছেদে জম্মু-কাশ্মীরকে বিশেষ মর্যাদা দেওয়া হলেও সেই মর্যাদা স্থায়ী ছিল না, বরং ছিল ‘অস্থায়ী সংস্থান’ (টেম্পোরারি প্রভিশন)। ওই অনুচ্ছেদের ৩ নম্বর উপধারায় বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ইচ্ছে করলে ওই ‘বিশেষ মর্যাদা’ তুলে নিতে পারেন। রাষ্ট্রপতির ওই ক্ষমতাকে ব্যবহার করেই ২০১৯ সালে ‘বিশেষ মর্যাদা’ প্রত্যাহার করে মোদী সরকার। অর্থাৎ নির্দেশনামায় রাষ্ট্রপতি সই করার পরের মুহূর্ত থেকেই রদ হয়ে যায় ৩৭০ ধারা। এই ধারার অধীনেই ৩৫(এ) ধারায় ভারতীয় ভূখণ্ডে থেকেও জম্মু ও কাশ্মীরের বাসিন্দারা যে বিশেষ সুযোগ-সুবিধা ভোগ করতেন, খারিজ হয়ে যায় তা-ও।

অন্য দিকে, ৩৭০ ধারার বৈধতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে দায়ের মামলার আবেদনকারী পক্ষের যুক্তি, জওহরলাল নেহরুর জমানায় সংবিধান সংশোধন সম্পর্কিত অংশ ১২ বলছে— কেবল মাত্র ‘কনস্টিটিউয়েন্ট অ্যাসেম্বলি’ (পরে রাজ্য সরকার) সম্মত হলে তবেই সংবিধানের কোনও ধারার সংশোধন জম্মু ও কাশ্মীরে প্রযোজ্য। অর্থাৎ কোনও সংশোধন জম্মু ও কাশ্মীরে প্রযোজ্য হতে হলে ৩৭০(১) ধারা মতে রাজ্য সরকারের সম্মতিতে রাষ্ট্রপতির আদেশ জারি প্রয়োজন। নির্বাচন সংক্রান্ত অংশ ১৫ বলছে— রাজ্য বিধানসভার নির্বাচন রাজ্যের নিজস্ব আইন দ্বারা পরিচালিত বা নিয়ন্ত্রিত হবে। ফলে ৩৭০ ধারা বাতিল করতে হলে সংবিধানসভা বা বিধানসভার সম্মতি প্রয়োজন।

কিন্তু মোদী সরকারের আমলে ৩৭০ বাতিলের আগে জম্মু ও কাশ্মীরে বিধানসভা ভেঙে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি শাসনে রাজ্যপালকে কোনও অবস্থাতেই ‘স্থানীয় সরকার’ বলা যায় না বলে আবেদনকারী পক্ষের দাবি। তাঁদের মতে রাজ্যপাল জনপ্রতিনিধিত্বের প্রতীক নন, এ ক্ষেত্রে ৩৭০ এবং ৩৫(এ) ধারা বাতিলের ঘটনা সাংবিধানিক ভাবে বেআইনি।

Jammu and Kashmir Abrogation of Article 370

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}