কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)-এর ভূমিকায় ফের উষ্মাপ্রকাশ করল সুপ্রিম কোর্ট। রাজনৈতিক যুদ্ধে কেন ইডি নিজেদের ব্যবহৃত হতে দিচ্ছে, তা নিয়ে সোমবার প্রশ্ন তুললেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি বিআর গবই। কেন্দ্রের আইনজীবীকে তিনি সতর্ক করে দিয়ে বলেন, “আমাদের মুখ খোলাবেন না। মুখ খোলালে আমরা ইডির বিরুদ্ধে কিছু কড়া কথা বলতে বাধ্য হব।”
মায়সুরু নগরোন্নয়ন নিগম (মুডা)-র জমি দুর্নীতি মামলায় কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার স্ত্রী বিএম পার্বতীকে সমন পাঠিয়েছিল ইডি। কর্নাটকের মন্ত্রী বৈরথী সুরেশকেও সমন পাঠানো হয়েছিল ওই একই মামলায়। তবে কর্নাটক হাই কোর্ট ওই সমন খারিজ করে দেয়। পরে হাই কোর্টের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। সোমবার শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি গবই এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের বেঞ্চে মামলাটি উঠতেই তা খারিজ হয়ে যায়।
আইনি খবর পরিবেশনকারী ওয়েবসাইট ‘লাইভ ল’ অনুসারে, সোমবারের শুনানিতে ইডির ভূমিকা নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান বিচারপতি গবই। কেন্দ্রের অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেল তথা ইডির আইনজীবী এসভি রাজুর উদ্দেশে প্রধান বিচারপতি বলেন, “দয়া করে আমাদের মুখ খোলাবেন না। মুখ খোলালে আমরা ইডির বিরুদ্ধে কিছু কড়া মন্তব্য করতে বাধ্য হব। দুর্ভাগ্যবশত, মহারাষ্ট্রে আমার কিছু অভিজ্ঞতা রয়েছে। এখন আর গোটা দেশে আপনারা এই হিংসা ছড়াবেন না। রাজনৈতিক লড়াই ভোটের ময়দানে লড়তে দিন। আপনারা কেন এর জন্য ব্যবহৃত হচ্ছেন?”
কর্নাটক হাই কোর্টের একক বেঞ্চ যে ভাবে মামলাটি দেখেছে, তাতে কোনও ভুল নেই বলেই পর্যবেক্ষণ সুপ্রিম কোর্টের। সেই কারণেই মামলাটি খারিজ করা হচ্ছে বলে সোমবার জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। মামলাটি খারিজ করার পরেও এ নিয়ে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি জানান, সুপ্রিম কোর্টকে কিছু কড়া মন্তব্য না করানোর জন্য অতিরিক্ত সলিসিটর জেনারেলকে ধন্যবাদ জানানো উচিত।
আরও পড়ুন:
জমি বণ্টনের ক্ষেত্রে দুর্নীতির অভিযোগে কংগ্রেসশাসিত কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী, তাঁর স্ত্রী পার্বতী এবং শ্যালক মল্লিকার্জুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। সেই সূত্র ধরেই সিদ্দারামাইয়ার নাম জড়িয়ে যায় এই মামলায়। মায়সুরুর অভিজাত এলাকায় স্ত্রীর নামে ১৪টি জমি পাইয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে তাঁর বিরুদ্ধে। ওই মামলায় মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগের তদন্তে সম্মতি দিয়েছিলেন রাজ্যপাল। বর্তমানে ওই মামলার তদন্ত চালাচ্ছে ইডি। চলতি বছরের মার্চ মাসেই কর্নাটক হাই কোর্ট মুখ্যমন্ত্রীর স্ত্রী পার্বতী এবং রাজ্যের এক মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সমন খারিজ করে দিয়েছিল।