গার্হস্থ্য হিংসার মামলাগুলিকে অত্যন্ত সংবেদনশীলতার সঙ্গে খতিয়ে দেখা উচিত। অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যদের অকারণে মামলায় জড়িয়ে ফেলা যাবে না। শুক্রবার এ কথা জানিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। এই ধরনের মামলার ক্ষেত্রে অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনের কোনও নির্দিষ্ট ধারায় অভিযোগ রয়েছে কি না, তা দেখা প্রয়োজন বলে মনে করছে আদালত।
শীর্ষ আদালতের বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চ জানিয়েছে, দাম্পত্য কলহের মামলায় আবেগ ভীষণ ভাবে জড়িয়ে থাকে। এ ক্ষেত্রে শ্বশুরবাড়ির কোনও সদস্য ঘটনায় জড়িত না থাকলেও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আদালতের পর্যবেক্ষণ, পরিবারের কোনও সদস্য অভিযোগকারীর পাশে না দাঁড়ালে কিংবা তাঁর হেনস্থার সময়ে চুপ থাকলে, সেই সদস্যের বিরুদ্ধেও অভিযোগ জানানোর প্রবণতা থাকে। সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, গার্হস্থ্য হিংসার মামলায় প্রত্যেকের বিরুদ্ধে যত দূর সম্ভব নির্দিষ্ট অভিযোগ এবং ধারাগুলি থাকা প্রয়োজন। বাছবিচার না করে শ্বশুরবাড়ির প্রত্যেক সদস্যকে মামলায় জড়িয়ে ফেললে আইনের অপব্যবহারের সম্ভাবনা থাকে।
তেলঙ্গানার এক মহিলা তাঁর শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে গার্হস্থ্য হিংসার মামলা রুজু করেছিলেন। মামলা থেকে অব্যাহতির আর্জি নিয়ে প্রথমে তেলঙ্গানা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন অভিযুক্তের পরিবারের সদস্যেরা। কিন্তু সেই আর্জি খারিজ করে দেয় হাই কোর্ট। পরে তাঁরা শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন। শুক্রবার ওই মামলার শুনানিতে শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
আরও পড়ুন:
সম্প্রতি শীর্ষ আদালত নিষ্ঠুরতা সংক্রান্ত আইনের অপব্যবহার নিয়েও সতর্ক করেছে। সুপ্রিম কোর্ট একটি মামলার পর্যবেক্ষণে জানায়, স্বামীর বিরুদ্ধে ব্যক্তিগত আক্রোশ মেটানোর অস্ত্র হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে নিষ্ঠুরতা সংক্রান্ত আইন। ওই মামলায় আদালতের পর্যবেক্ষণ ছিল, ৪৯৮ (এ) ধারার মূল লক্ষ্য স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির সদস্যদের নিষ্ঠুরতা থেকে মহিলাদের সুরক্ষিত রাখা। কিন্তু গত কয়েক বছরে দাম্পত্য কলহের মামলা দেশ জুড়ে বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে এই ধারার অপব্যবহারের প্রবণতাও বৃদ্ধি পেয়েছে বলে মনে করছে শীর্ষ আদালত। সুপ্রিম কোর্টের মতে, অনেক ক্ষেত্রেই স্বামী এবং তাঁর পরিবারের বিরুদ্ধে ‘ব্যক্তিগত আক্রোশ’ মেটানোর অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে আইনের এই ধারাকে।