Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Ayushman Bharat

আয়ুষ্মান ভারতে নেই কেন, পশ্চিমবঙ্গকে নোটিস পাঠাল সুপ্রিম কোর্ট

মোদী সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েই গত কয়েক বছরে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চলছে।

—ফাইল চিত্র।

—ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
নয়াদিল্লি ও কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৪:২৮
Share: Save:

শতকরা আশি ভাগ টাকা দেয় রাজ্য। কেন্দ্র দেয় মাত্র ২০ শতাংশ। কিন্তু তার পরেও নরেন্দ্র মোদী সরকার প্রকল্পের পুরো কৃতিত্ব একাই নেওয়ার চেষ্টা করছে। এই অভিযোগ তুলেই কেন্দ্রের স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত’ থেকে রাজ্যকে সরিয়ে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ পশ্চিমবঙ্গ-সহ চারটি রাজ্যে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু না করা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকার ও সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির জবাব চাইল সুপ্রিম কোর্ট।

হায়দরাবাদের বিজেপি নেতা পি শেখর রাও সুপ্রিম কোর্টে দাবি জানিয়েছিলেন, রাজ্যগুলির আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু না করার সিদ্ধান্তকে ‘বেআইনি’ ও ‘অসাংবিধানিক’ বলে ঘোষণা করা হোক। পশ্চিমবঙ্গের মতোই দিল্লি, ওড়িশা, তেলঙ্গানাও আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করেনি। সুপ্রিম কোর্টে ওই বিজেপি নেতার অভিযোগ ছিল, রাজনৈতিক কারণে এই চারটি রাজ্য আয়ুষ্মান ভারত চালু করেনি। এর ফলে মানুষের ক্ষতি হচ্ছে। প্রধান বিচারপতি শরদ অরবিন্দ বোবডের বেঞ্চ কেন্দ্র ও চারটি রাজ্যের কাছে দু’সপ্তাহের মধ্যে বক্তব্য জানতে চেয়ে নোটিস জারি করেছে।

মোদী সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়েই গত কয়েক বছরে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত চলছে। স্বাস্থ্যবিমা থেকে ফসল বিমা, কেন্দ্রের অনেক প্রকল্পেই রাজ্য নাম লেখায়নি। সেই বিরোধ এ বার শীর্ষ আদালতে পৌঁছেছে। রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য অবশ্য সুপ্রিম কোর্টের নোটিস নিয়ে মুখ খুলতে চাননি। প্রশাসনিক সূত্রের বক্তব্য, আইন মাফিক এর উত্তর দেওয়া হবে। তবে তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, ‘‘আয়ুষ্মান ভারত নামে যে প্রকল্পের কথা বলা হয়েছে, তার থেকে অনেক ভাল প্রকল্প এ রাজ্যে চালু করা হয়েছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সেই স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পই মডেল হিসেবে সারা দেশে চালু করা উচিত। যে প্রকল্পে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার যৌথ ভাবে আর্থিক দায়িত্ব বহন করছে, তা নিয়ে কারও একক প্রচার চলতে পারে না।’’

আরও পড়ুন: মতান্তরও রয়ে গেল, পাঁচটি বিষয়ে ঐকমত্য মস্কো-বৈঠকে​

আরও পড়ুন: রদবদল কংগ্রেসে, রাহুলের ইচ্ছে মেনেই​

গত বছর আয়ুষ্মান ভারত থেকে রাজ্যকে সরিয়ে নেওয়ার কথা জানিয়ে মমতা অভিযোগ করেছিলেন, স্বাস্থ্যবিমার জন্য রাজ্য ৮০% টাকা দেয়, কেন্দ্র দেয় মাত্র ২০%। অথচ রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে কেন্দ্র এমন ভাবে প্রচার করছিল যে মনে হচ্ছিল, পুরোটাই কেন্দ্রীয় প্রকল্প। কেন্দ্রের সঙ্গে মউ সইয়ের সময় রাজ্য জানিয়েছিল, তারা প্রকল্পটির নাম ২০১৭ থেকে বাংলায় চালু ‘স্বাস্থ্যসাথী’ই রাখবে। কেন্দ্র তা মেনেও নিয়েছিল। অথচ কেন্দ্র বাড়ি বাড়ি যে চিঠি ও কার্ড পাঠায়, তাতে ‘স্বাস্থ্যসাথী’র উল্লেখ ছিল না।

কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ আগেই ঘোষণা করেছেন, বিজেপি রাজ্যে ক্ষমতায় এলে এক মিনিটের মধ্যে আয়ুষ্মান চালু করবে। শুক্রবার বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘আমি সর্বদল বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীকে বলেছিলাম, আয়ুষ্মান ভারতে পশ্চিমবঙ্গ নেই কেন? উনি বলেছিলেন, এ রাজ্যের সরকার স্বাস্থ্যসাথী করেছে। আমার প্রশ্ন, স্বাস্থ্যসাথীর সুবিধা না হয় এ রাজ্যে চিকিৎসা করালে পাওয়া গেল! অন্য রাজ্যে চিকিৎসা করাতে যাওয়া মানুষেরা তার সুবিধা পাবেন না। তাঁদের কথা ভেবেও তো মুখ্যমন্ত্রী আয়ুষ্মান ভারতে রাজ্যকে ঢোকাতে পারতেন! আর স্বাস্থ্যসাথীতে পুরো টাকাই রাজ্যকে দিতে হয়। আয়ুষ্মানে কেন্দ্রের ভাগ থাকায় রাজ্যকে কম টাকা খরচ করতে হত।’’

হায়দরাবাদের বিজেপি নেতার অভিযোগ, চার রাজ্যের মানুষ অন্য রাজ্যের নাগরিকদের মতো সুবিধা পাচ্ছেন না। তা সংবিধানের সমানাধিকারের নীতির বিরোধী। স্বাস্থ্য বিমা ও সরকারি হাসপাতালে ঠিক মতো চিকিৎসার অভাবে গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষকে বেসরকারি হাসপাতালে বিপুল টাকা গুণতে হচ্ছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE