সুপ্রিম কোর্ট। —ফাইল চিত্র।
ঋতুমতী মহিলাদের শবরীমালায় প্রবেশের অনুমতি দিয়েছে আগেই। এ বার মসজিদে মহিলাদের নমাজ পড়া নিয়ে শুনানি করতে রাজি হল সুপ্রিম কোর্ট। বিষয়টি নিয়ে মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকার, কেন্দ্রীয় ওয়াকফ কাউন্সিল এবং অল ইন্ডিয়া মুসলিম পার্সোনাল ল বোর্ডকে নোটিস দিল শীর্ষ আদালত।
মসজিদে মহিলাদের নমাজ পড়ার অনুমতি চেয়ে সম্প্রতি আদালতে আবেদন পুণের বাসিন্দা ইয়াসমিন জুবের আহমেদ পীরজাদে ও তাঁর স্বামী জুবের আহমেদ নাজির আহমেদ পীরজাদে। শবরীমালা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায়ে অনুপ্রাণিত হয়েই আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন বলে জানান তাঁরা। ওই দম্পতির কথায়, ইসলামের প্রবর্তক মহম্মদ মহিলাদের মসজিদে প্রবেশ এবং নমাজ পড়া নিষিদ্ধ করেননি। কোরানেও পুরুষ এবং নারীর মধ্যে কোনও পার্থক্য করা হয়নি। সেখানে শুধু অনুগতদের কথা বলা রয়েছে। তা সত্ত্বেও ইসলাম ধর্মে মহিলারা নিপীড়নের শিকার হচ্ছেন।
মসজিদে মহিলাদের নমাজ পড়ার উপর নিষেধাজ্ঞাকে অসাংবিধানিক এবং মহিলাদের মর্যাদা বিরোধী বলেও উল্লেখ করেন ওই দম্পতি। দেশের সংবিধানে ১৪, ১৫, ২১ এবং ২৫ ধারায় মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। কিন্তু ইসলামের এই প্রথায় সংবিধান লঙ্ঘিত হয়েছে বলে আবেদনে জানান তাঁরা। সেই সঙ্গে আরও বলেন যে, জামাত-ই-ইসলাম এবং মুজাহিদ পরিচালিত মসজিদে বেশ কিছু মহিলাকে নমাজ পড়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে বটে। কিন্তু সুন্নি মসজিদগুলোতে এখনও মহিলাদের প্রবেশ নিষিদ্ধ। আবার যে মসজিদগুলোতে নমাজ পড়ার অনুমতি পেয়েছেন মহিলারা, সেখানে তাঁদের জন্য আলাদা প্রবেশ পথ রাখা হয়েছে। নমাজ পড়ার জন্য তৈরি করা হয়েছে আলাদা ঘর। এই ধরনের লিঙ্গ বৈষম্য রুখতে এবং মসজিদে মহিলাদের অবাধ প্রবেশ চেয়ে তাই আদালতের হস্তক্ষেপ দাবি করেন জুবের আহমেদ পীরজাদে এবং জুবের আহমেদ নাজির আহমেদ পীরজাদে।
আরও পড়ুন: প্রচারে নিষেধাজ্ঞায় চ্যালেঞ্জ মায়াবতীর, আবেদন খারিজ শীর্ষ আদালতে
মঙ্গলবার বিচারপতি এসএ বোবডে এবং এস আব্দুল নাজিরের ডিভিশন বেঞ্চে তাঁদের আবেদনটি ওঠে। সেখানে বিচারপতিরা জানান, সংবিধানের ১৪ নম্বর ধারা অনুযায়ী, আইনি সমানাধিকার থেকে রাষ্ট্র কাউকে বঞ্চিত করতে পারে না। কিন্তু মন্দির, মসজিদকে কি রাষ্ট্রের সঙ্গে তুলনা করা চলে? আবেদনকারীদের আইনজীবী আশুতোষ দুবে সদুত্তর দিতে পারেননি যদিও। তবে শবরীমালা রায়ের কথা মাথায় রেখে মসজিদে মহিলাদের প্রবেশ নিয়ে শুনানি করতে রাজি হন বিচারপতিরা। ডিভিশন বেঞ্চের তরফে সাফ জানানো হয়, ‘‘শবরীমালা রায়ের জেরেই এই মামলার শুনানি করছি আমরা। দেখা যাক কী হয়।’’
আরও পড়ুন: ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডেও রক্ষা মূল কাঠামোর, মাকরঁর প্রতিশ্রুতি, ‘ফের গড়ে তুলব নোত্র দাম!
এর আগে ঋতুমতী মহিলাদের কেরলের শবরীমালা মন্দিরে প্রবেশের অনুমতি দিয়ে যুগান্তকারী রায় দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সে বার আদালতের যুক্তি ছিল, ধর্মের নামে মহিলাদের পূজা-অর্চনার অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যায় না।
(দেশজোড়া ঘটনার বাছাই করা সেরা বাংলা খবর পেতে পড়ুন আমাদের দেশ বিভাগ।)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy