Advertisement
E-Paper

চার বছরের শিশুকে ধর্ষণ-খুন! ১৭ বছর আগের ঘটনায় দোষীকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েও রায় পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত সুপ্রিম কোর্টের, কী যুক্তি?

২০০৮ সালে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে চার বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় বসন্ত সম্পৎ দুপারের। সেই থেকে নাগপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন তিনি। ২০১০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক বসন্তকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৫ ১৮:১৪

— প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

সাজা ঘোষণার সময় যদি আসামির মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়ে থাকে, সে ক্ষেত্রে মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনা করা যাবে। এমনই যুক্তি দেখিয়ে আট বছর পর ফের পুরনো মামলা খুলল শীর্ষ আদালত। ফাঁসির সাজা পুনর্বিবেচনার সুযোগ পেলেন নাগপুরে শিশু ধর্ষণ-খুনে সাজাপ্রাপ্ত বসন্ত সম্পৎ দুপারে!

সোমবার ১৭ বছর আগের ওই মামলার সাজা পুনর্বিবেচনার নির্দেশ দিয়েছে বিচারপতি বিক্রম নাথ, বিচারপতি সঞ্জয় করোল এবং বিচারপতি সন্দীপ মেহতার বেঞ্চ। সম্প্রতি সংবিধানের ৩২তম ধারার অধীনে মৃত্যুদণ্ডের রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন করেছিলেন বসন্ত। সেই আবেদন মঞ্জুর করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, ওই মামলায় সাজা ঘোষণার সময় আসামির সাংবিধানিক মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। তিন বিচারপতির বেঞ্চের পর্যবেক্ষণ, এর আগে ২০২২ সালে ‘মনোজ বনাম মধ্যপ্রদেশ সরকার’ মামলার রায়ে সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট জানিয়েছিল, মৃত্যুদণ্ড ঘোষণার আগে শাস্তি হ্রাসকারী পরিস্থিতি বা ‘মিটিগেটিং সারকমস্ট্যান্সেস’ খতিয়ে দেখা বাধ্যতামূলক। কিন্তু বসন্তের ক্ষেত্রে তা হয়নি বলেই দাবি। আর সে কারণেই ওই মামলায় নতুন করে শুনানি শুরুর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

২০০৮ সালে মহারাষ্ট্রের নাগপুরে চার বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনায় নাম জড়ায় বসন্তের। সেই থেকে নাগপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রয়েছেন তিনি। ২০১০ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর নিম্ন আদালতের অতিরিক্ত দায়রা বিচারক বসন্তকে মৃত্যুদণ্ড দেন। ২০১২ সালের মার্চ মাসে বসন্তের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখে বম্বে হাইকোর্টের নাগপুর বেঞ্চ। তাঁকে ‘সমাজের জন্য হুমকি’ বলেও চিহ্নিত করেন বিচারপতি। ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের পর বসন্তের মৃত্যুদণ্ড একপ্রকার নিশ্চিত হয়ে যায়। ২০১৭ সালের মে মাসে রায় পুনর্বিবেচনার আবেদন খারিজ করে দেয় শীর্ষ আদালত। এর পরেও দমেননি বসন্ত। মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল এবং রাষ্ট্রপতির কাছে ক্ষমাভিক্ষার আবেদন করেন তিনি। যথাক্রমে ২০২২ এবং ২০২৩ সালে সেই আবেদনও খারিজ করে দেওয়া হয়। শেষমেশ সেই মামলায় সাজা খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিল সুপ্রিম কোর্ট। তবে সাজা পুনর্বিবেচনা হলেও বসন্ত আগের মতোই দোষী সাব্যস্তই থাকবেন।

বিরল এই রায়কে ভারতের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা। ২০২২ সালে মনোজের মামলায় তৎকালীন প্রধান বিচারপতি উদয় ললিতের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ রায় দিয়েছিল, মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার আগে আদালতগুলিকে আসামির মানসিক স্থিতি-সহ সমস্ত পরিস্থিতি মূল্যায়ন করে দেখতে হবে। সেই মামলার উদাহরণ টেনে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, বসন্তের ক্ষেত্রেও প্রক্রিয়াগত নিরাপত্তা বিধি লঙ্ঘিত হয়েছিল। তাই নতুন করে শুনানি হবে এবং তার ভিত্তিতে সাজার মাত্রা নির্ধারণ করা হবে। মামলাটি দেশের প্রধান বিচারপতি বিআর গবইয়ের কাছে নতুন করে বিবেচনার জন্য পাঠানো হয়েছে।

Supreme Court Rape Murder Nagpur death sentence
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy