এইচ-১বি ভিসা নিয়ে জটিলতার জেরে কর্মপদ্ধতিতে বদল আনছে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস (টিসিএস)। আমেরিকায় কাজের ক্ষেত্রে সেখানকার স্থানীয়দেরই নিয়োগ করার চেষ্টা হবে বলে জানানো হয়েছে সংস্থাটির তরফে। ‘টাইম্স অফ ইন্ডিয়া’-র প্রতিবেদন অনুসারে, সংস্থার সিইও কে কৃতিবাসন এই খবরের সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন। জানিয়েছেন, চলতি অর্থবর্ষে এইচ-১বি ভিসা থাকা কাউকে নিয়োগের পথে হাঁটবে না টিসিএস। পরিবর্তে আমেরিকায় নিয়োগের ক্ষেত্রে স্থানীয়দের অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। এ ভাবেই কর্মী নিয়োগের ক্ষেত্রে ভিসা নির্ভরতা কাটাতে চাইছে টিসিএস।
এইচ-১বি ভিসার জন্য মার্কিন সংস্থাগুলির উপর এক লক্ষ ডলারের (ভারতীয় মুদ্রায় ৮৮ লক্ষ টাকা) বোঝা চাপিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, দক্ষ বিদেশি কর্মীদের নিয়োগ করতে গেলে এ বার থেকে সংস্থাগুলিকে এই পরিমাণ অর্থ সরকারের হাতে তুলে দিতে হবে। সূত্রের খবর, কী ভাবে কাদের মার্কিন সংস্থাগুলিতে নিয়োগ করা হচ্ছে, কী ভাবে কর্মীকে বেছে নেওয়া হচ্ছে, এ বার সেই প্রক্রিয়াতেও ট্রাম্প প্রশাসন নাক গলাবে। ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি এইচ-১বি ভিসা ব্যবস্থার জন্য নতুন নিয়মাবলি প্রস্তুত করেছে, যার শিরোনাম ‘এইচ-১বি অ-অভিবাসী ভিসা ক্লাসিফিকেশন প্রোগ্রামের সংস্কার’। অ-অভিবাসী ভিসার ক্ষেত্রে এত দিন মার্কিন প্রশাসন যা যা ছাড় দিয়ে আসছিল, এ বার তাতে লাগাম পরানো হবে। কিছু ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত হবে। তৃতীয় পক্ষ দ্বারা যে সমস্ত নিয়োগ হয়, তাতে নজরদারি বৃদ্ধি করার ভাবনাও রয়েছে নতুন নিয়মাবলিতে।
‘এইচ-১বি’ ভিসা নিয়ে সবচেয়ে বেশি কর্মী আমেরিকার যে সংস্থায় কাজ করেন, সেটি হল অ্যামাজ়ন। ওই সংস্থার ১০ হাজারেরও বেশি কর্মী ‘এইচ-১বি’ ভিসা নিয়ে আমেরিকায় থাকেন। তার পরেই রয়েছে টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিস (টিসিএস)। ওই সংস্থায় এই সংখ্যাটা ৫৫০৫। তার পর যথাক্রমে রয়েছে মাইক্রোসফ্ট (৫১৮৯), মেটা (৫১২৩), অ্যাপ্ল (৪২০২), গুগ্ল (৪১৮১)। একটি পরিসংখ্যান বলছে, ২০০৯ থেকে ২০২৫ সাল পর্যন্ত আমেরিকায় এইচ-১বি ভিসা থাকা ৯৮,২৫৯ জনকে নিয়োগ করেছিল টিসিএস। বর্তমানে ওই ভিসা নিয়ে আমেরিকায় থেকে যাঁরা কাজ করেন, তাঁদের নিয়ে অবশ্য কিছু জানানো হয়নি। মনে করা হচ্ছে, তাঁদের কারও চাকরিকে কোপ পড়বে না। তবে ওই ভিসা থাকা নতুন কাউকেও আপাতত নিয়োগ করবে না টিসিএস।