ক্ষমতায় এলে পরিবার-পিছু অন্তত একটি সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব। পাশাপাশি তাঁর প্রতিশ্রুতি, বেতন বাড়িয়ে সরকারি কর্মীর মর্যাদা দেওয়া হবে প্রায় কয়েক লক্ষ ‘জীবিকা দিদি’-কে। যা দেখে বিজেপির কটাক্ষ, এই সব প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে গেলে রাজ্যের বাজেটের থেকে দশ গুণ বেশি অর্থ প্রয়োজন হবে। তেজস্বী কি সে কথা জানেন? বিজেপি নেতা সুধাংশু ত্রিবেদীর কটাক্ষ, ‘‘এই জন্যই কিছুটা পড়াশোনা করা লোকেদের রাজনীতিতে আসা উচিত।’’
ভোট যত এগোচ্ছে, তত ভোটারদের মন জয়ে ঢালাও প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন তেজস্বী। তাঁর দাবি, ক্ষমতায় আসার কুড়ি দিনের মধ্যেই চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি পূরণে আইন আনা হবে। আজ আবার তেজস্বী জানান, রাজ্যে যে কয়েক লক্ষ ‘জীবিকা দিদি’ (সামাজিক উন্নয়নে নিযুক্ত কর্মী) কাজ করছেন, তাঁদের বেতন ৩০ হাজার টাকা করার পাশাপাশি তাঁদের সরকারি কর্মচারী হিসেবে গণ্য করা হবে। সরকার থেকে জীবিকা দিদিদের যে ঋণ দেওয়া হয়েছিল তা মকুবের পাশাপাশি নতুন ঋণের ক্ষেত্রে দু’বছর সুদমুক্ত ঋণ দেওয়ারও দাবি করেন তিনি। মহিলাদের জন্য বেটি ও মা (বাড়ি, অন্ন ও আয়) প্রকল্পও চালু করা হবে বলে জানান তেজস্বী।
বিহারে মহিলা-ভোটে এ যাবৎ একচেটিয়া ভাগ বসিয়ে এসেছেন নীতীশ কুমার। দু’দশক আগেই মহিলাদের জন্য পুর ও পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৩৩ শতাংশ সংরক্ষণের ঘোষণা করেছিলেন নীতীশ। পরবর্তী সময়ে মুখ্যমন্ত্রী মহিলা রোজগার যোজনায় নগদ অর্থ সরাসরি ব্যাঙ্কে পাঠানোর মতো প্রকল্প হাতে নেন। ফলে গত বেশ কয়েকটি নির্বাচনে বিহারে মেয়েদের ভোট পেতে কোনও সমস্যা হয়নি নীতীশের। এ বার সেই ভোট ব্যাঙ্কে ভাঙন ধরাতে ‘জীবিকা দিদি’দের বেতন ও সরকারি চাকরি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন তেজস্বী।
আজ তেজস্বীর প্রতিশ্রুতির বাস্তবতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন বিজেপি সাংসদ সুধাংশু ত্রিবেদী। তাঁর পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ‘‘বিহারের জনসংখ্যা ১৩.৫ কোটি। পরিবার সংখ্যা প্রায় ৩ কোটি। সরকারি চাকরির বেতনের ধাপ ৩০ হাজার থেকে ২ লক্ষ। যদি ধরে নিই, ২.৭ কোটির মতো পরিবারে সরকারি চাকরি দেওয়া হবে এবং পরিবার পিছু বেতন খাতে যদি গড়ে ৭৫ হাজার টাকা খরচ হয়, সে ক্ষেত্রে পরিবারপিছু বার্ষিক বাজেট দাঁড়াবে প্রায় ১০ লক্ষ টাকা। যার অর্থ কেবল এঁদের বেতন খাতে সরকারের খরচ হবে ২৯ লক্ষ কোটি টাকা। অথচ, বিহার সরকারের বাজেট হল মাত্র ৩ লক্ষ কোটি টাকা। ওই দশ গুণ টাকা আসবে কোথা থেকে, সেই জবাব কি তেজস্বী দেবেন? বিহারের মাটি ভগবান বুদ্ধের, বোকাদের নয়!’’
গতকাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অমিত শাহ ও ধর্মেন্দ্র প্রধানের বিরুদ্ধে তাঁর দলের প্রার্থীদের ভোটের ময়দান থেকে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন জন সুরাজ দলের নেতা প্রশান্ত কিশোর (পি কে)।তাঁর দাবি, তাঁর তিন জন প্রার্থীকে এখনও পর্যন্ত বিজেপির চাপে সরে যেতে হয়েছে। ওই দাবি নস্যাৎ করে দিয়ে আজ সুধাংশু বলেন, ‘‘ওই নেতারা বিজেপিতেই ছিলেন। মনোমালিন্য মিটতেইফিরে এসেছেন।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)