—প্রতীকী ছবি।
আগামী বছরের মধ্যে দেশে যক্ষ্মা দূরীকরণে জোর দিয়েছে কেন্দ্র। সেই জাতীয় কর্মসূচির মধ্যেই প্রাপ্তবয়স্কদের ফের বিসিজি টিকা (যক্ষ্মা রোধে) দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। চলতি বছরেই, কয়েক মাসের মধ্যে দেশে ‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে ওই কর্মসূচি শুরু হবে বলে বুধবার নয়াদিল্লিতে জানিয়েছেন ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টিবি অ্যান্ড রেসপিরেটরি ডিজ়িজ়’-এর যক্ষ্মা ও বক্ষ রোগের বিভাগীয় প্রধান চিকিৎসক রূপক সিংলা।
এ দিন দিল্লি এমসের ফিজ়িওলজি বিভাগ ও হিল ফাউন্ডেশনের যৌথ উদ্যোগে স্বাস্থ্য সংক্রান্ত জাতীয় স্তরের সম্মেলনে ওই চিকিৎসক জানান, জন্মের পরে বিসিজি টিকা দেওয়া হয়। এর পরে আবার ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সিদের ওই টিকা দেওয়ার কথা ভাবছে কেন্দ্র। তিনি বলেন, ‘‘প্রথমে পাইলট প্রজেক্টে প্রাপ্তবয়স্কদের ওই টিকা দিয়ে তার কার্যকারিতা পর্যবেক্ষণ করা হবে। বিনা মূল্যেই মিলবে টিকা।"
যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের বিসিজি টিকা দেওয়ার বিষয়ে বিতর্কও রয়েছে। বঙ্গের সংক্রামক রোগের চিকিৎসক যোগীরাজ রায় বলেন, ‘‘প্রাপ্তবয়স্কদের বিসিজি টিকা নিয়ে এখনও প্রশ্ন রয়েছে। এখন বেশি গুরুত্ব দেওয়া উচিত ড্রাগ রেজিস্ট্যান্ট টিবি বা ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মার চিকিৎসায়।’’ এ দিন যক্ষ্মা বিষয়ক আলোচনায় অংশ নিয়েছিলেন স্বাস্থ্য মন্ত্রকের সেন্ট্রাল টিবি ডিভিশনের অতিরিক্ত ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল সঞ্জয় কে মাট্টু, এমসের পালমোনারি ও ক্রিটিক্যাল কেয়ারের চিকিৎসক বিজয় হাড্ডা।
জানা যাচ্ছে, প্রতি বছর নতুন করে দেশে ২৮ লক্ষ মানুষ ষক্ষ্মায় আক্রান্ত হন। তবে কয়েক বছর আগেও অন্তত ১০ লক্ষ আক্রান্ত নথিভুক্ত বা চিহ্নিত হতেন না। এখন তা কমে ২-৩ লক্ষ হয়েছে। যক্ষ্মা দূরীকরণ কর্মসূচিতে বিভিন্ন মন্ত্রক থেকে শুরু করে বিভিন্ন বেসরকারি সংস্থার সহযোগিতায় কাজ হচ্ছে বলে দাবি করেন সঞ্জয়। পাশাপাশি যক্ষ্মা রোগের চিকিৎসায় এখন অ্যাপের ব্যবহারও শুরু করা হচ্ছে। যা কয়েক মিনিটের মধ্যে বলে দেবে এক জন যক্ষ্মা রোগীর কী করণীয়, কোন ওষুধ কতটা মাত্রায় নিতে হবে।
তবে মানুষের একাংশের মধ্যে এখনও যক্ষ্মা রোগকে কেন্দ্র করে সামাজিক ভীতি কাজ করছে, যা সচেতনতার মাধ্যমে দূর করা প্রয়োজন বলে দাবি করেন বিজয়। চিকিৎসকেরা এ-ও জানান যে, ওষুধ প্রতিরোধী যক্ষ্মা রোগীদের উপর বিভিন্ন নতুন ওষুধ প্রয়োগ করে সুফল মিলেছে। গত কয়েক বছরে দেশের ১ লক্ষ ৩০ হাজার জনের উপরে ওষুধ প্রয়োগে ৭০ শতাংশ সাফল্য মিলেছে।
যক্ষ্মা নির্ণয়ে সিবি-ন্যাট পরীক্ষার উপরেও জোর দিচ্ছেন কর্তারা। কিন্তু গত কয়েক মাস ধরে পশ্চিমবঙ্গে ওই পরীক্ষার প্রয়োজনীয় কার্টিজ সরবরাহ করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। সমস্যা মিটে গিয়েছে বলে এ দিন দাবি করেন সঞ্জয়। যদিও রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের দাবি, পুরোপুরি সমস্যা মেটেনি। কেন্দ্র অল্পস্বল্প কার্টিজ পাঠাচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy