Advertisement
E-Paper

দিল্লির পুজোয় পরিবেশ সচেতনতায় টেক্কা গুরুগ্রামের মহিলাদের

প্রবাসের মাতৃ আরাধনায় এ বার জেগেছে নারী শক্তি। গুরুগ্রামের বঙ্গীয় পরিষদ সেক্টর ৫৬-র সর্বজনীন দুর্গাপুজায় এ বার শুধুই প্রমীলারা। মণ্ডপ সাজানো থেকে শুরু করে চাঁদা তোলা, ভোগ রান্না থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সামলানো— প্রমীলা প্রতিভার সমূহ প্রকাশ এখানে। বয়সে নবীন হলেও তাই এই পুজো অভিনবত্বে টেক্কা দিচ্ছে রাজধানীর প্রাচীন দুর্গোৎসবগুলিকে।

অপরাজিতা মৈত্র

শেষ আপডেট: ০৮ অক্টোবর ২০১৬ ১৬:১৫

জাগো মা! জাগো দশপ্রহরণধারিনী।

প্রবাসের মাতৃ আরাধনায় এ বার জেগেছে নারী শক্তি। গুরুগ্রামের বঙ্গীয় পরিষদ সেক্টর ৫৬-র সর্বজনীন দুর্গাপুজায় এ বার শুধুই প্রমীলারা। মণ্ডপ সাজানো থেকে শুরু করে চাঁদা তোলা, ভোগ রান্না থেকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের দায়িত্ব সামলানো— প্রমীলা প্রতিভার সমূহ প্রকাশ এখানে। বয়সে নবীন হলেও তাই এই পুজো অভিনবত্বে টেক্কা দিচ্ছে রাজধানীর প্রাচীন দুর্গোৎসবগুলিকে।

মাত্র ১১ বছর বয়স এই সেক্টর ৫৬-র। যার এ বারের থিম ‘গ্রাম বাংলা’, যে থিমের পুরোটাই পরিবেশ সচেতনতার মন্ত্রে গাঁথা। এই পুজো কমিটির মহিলারা, যারা অক্লান্ত ভাবে দিনে অফিস সেরে রাতে মণ্ডপের কাজ করেছেন। গ্রামবাংলার সাজসরঞ্জাম দিয়ে তৈরি এই পুজো চত্বর। চট, বাঁশ, চাটাই, খড় দিয়ে তৈরি মণ্ডপটির ভেতর আলপনা দিয়ে সাজানো অন্দরসজ্জায় আছে কুলো, গামছা, খড়, মাটির মালসাও। রাতের অন্ধকারে মাটির ঝুড়ি দিয়ে সাজানো লাইটিংও দাবি রাখে অভিনবত্বের।

মণ্ডপ থেকে প্রতিমা, সব কিছুই পুনর্ব্যবহারযোগ্য জিনিস দিয়ে তৈরি। প্রতিমার গয়না থেকে শুরু করে শাড়ি, সবই তৈরি হয়েছে মাটি দিয়ে। শুধু তাই নয়, মণ্ডপ ও প্রতিমা সাজানোর জন্য যাতে প্রাকৃতিক রংই ব্যবহৃত হয় নজর রাখা হয়েছে সে দিকেও। পুজো প্রাঙ্গণে তিন ফুট অন্তর দু’টি করে ডাস্টবিন রাখা হয়েছে, যার একটিতে সেই সব জিনিস ফেলা হবে যা শুধু প্রাকৃতিক ভাবে নষ্ট করা যায়। ভোগের থালা বা বাটি তৈরি হয়েছে কাগজ দিয়ে, জলের গ্লাসেও নেই কোনও প্লাস্টিকের ছোঁওয়া।

উদ্যোক্তারাই শুধু নন, পুজো দেখতে আসা সমস্ত মানুষও যাতে এই পুজোর থিমের সঙ্গে একাত্ম হয়ে ওঠেন, সেই লক্ষ্যে পুজোপ্রাঙ্গণে কিছু ক্ষণ অন্তর প্লাস্টিক ব্যবহার না-করার কথা ঘোষণা হচ্ছে। পুজোর চার দিনের জন্য কিছু অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের নিয়ে তৈরি হয়েছে ‘গ্রিন ব্রিগেড’, যারা পুজো চত্বরে ঘুরে ঘুরে খেয়াল রাখবে থিম গ্রাম বাংলার পরিবেশ যাতে সুরক্ষিত থাকে।

পুজোর সাংস্কৃতিক কমিটির সেক্রেটারি সেমন্তী চট্টোপাধ্যায় বলছেন, ‘‘বর্তমান প্রজন্মের বাঙালিদের বাংলার গ্রামীণ রূপের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্যই থিম হিসাবে আমরা বাংলার গ্রামকে বেছে নিয়েছি।’’ পাশাপাশি তাঁর বক্তব্য, প্রতিনিয়ত বাড়তে থাকা দূষণ সম্পর্কে মানুষকে সচেতন করার জন্যই এই পরিবেশবান্ধব মণ্ডপ বানানোর উদ্যোগ। শুধু ভাবনা আর থিমের জন্য নয়, মণ্ডপ তৈরি থেকে শুরু করে পুজো প্রাঙ্গণের সমস্ত বড়-ছোট বিষয়েই প্রধান ভূমিকায় মহিলারা। সেমন্তীর কথায়: “মণ্ডপের ভিতরের আলপনা থেকে শুরু করে কোন জিনিস কোথায় কী ভাবে সাজানো হবে, সবটাই করেছেন আমাদের কমিটির মহিলা শিল্পীরা। তাঁরা গত একমাস ধরে রাত ৮টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত নিজেদের হাতে এই কাজগুলি করছেন।”

তবে পরিবেশ সচেতনতার মতো গুরুগম্ভীর বিষয়ের পাশাপাশি এই পুজোয় রয়েছে দেদার মজাও। পুজোর প্রত্যেকদিন সকালে থাকছে ছোট এবং বড়দের জন্য বিভিন্ন রকমের মজার খেলা। বড়রাও ক’দিনের জন্য ছোট হওয়ার সুযোগ পাবেন এই খেলার আসরে! এই স্পোর্টস কমিটির’ চেয়ারম্যান লীনা দাস বলছেন, ‘‘গত বারে ঘড়ি বাঁধা সময়ে আমরা রসগোল্লা এবং ফুচকা খাওয়ার প্রতিযোগিতা করেছিলাম! তাতে দারুণ উন্মাদনা তৈরি হয়!’’

এ বারেও পুজোর শেষ দিন থাকছে এমনই অভিনব খেলা। এখন যা কিছুতেই প্রকাশ করে মজা নষ্ট করতে চাইছেন না লীনা!

durga pujo delhi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy