ন’বছর বয়সি শিশুর বয়ান ধরিয়ে দিল খুনিদের! বাবার মৃত্যু ঠিক কী ভাবে ঘটেছিল, পুলিশকে জানাল শিশু। তার বয়ানের ভিত্তিতে অভিযুক্তদের জেরা করে সত্যিটা জানতে পেরেছে পুলিশ। তিন জনকে গ্রেফতারও করা হয়েছে। আরও তিন জনের খোঁজ চলছে। ওই শিশুর বয়ান অনুযায়ী,তার বাবাকে খুন করিয়েছেন তার মা। পরিচিত এক ‘কাকু’ এসে ঘুমন্ত অবস্থায় বাবার মুখে বালিশ চেপে ধরেন বলে অভিযোগ। সঙ্গে ছিলেন আরও চার জন। শিশুর পাশেই তার বাবাকে খুন করা হয়।
রাজস্থানের অলওয়ারের ঘটনা। গত ৭ জুন সেখানেই খুন হন বীরু ওরফে মান সিংহ জাটভ। বাড়ি থেকে তাঁর দেহ উদ্ধার করা হয়। তাঁর স্ত্রী পুলিশকে জানিয়েছিলেন, রাতে আচমকা তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। কিন্তু ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রকাশ্যে আসে অন্য তথ্য। শিশুটি জানায়, সে রাতে মা ইচ্ছা করেই দরজা খুলে রেখেছিলেন। ‘কাশী কাকু’ নামের এক জন প্রায়ই মায়ের সঙ্গে দেখা করতে আসতেন। রাতে তিনি এসেছিলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন আরও চার জন। বাবা ঘুমিয়ে পড়ার পর তাঁরা ঘরে ঢোকেন। ‘কাকু’ বালিশ দিয়ে বাবার মুখ চেপে ধরেন। বাকিরা তাঁকে মারধর করেন। কেউ বাবাকে ঘুষি মারেন, কেউ তাঁর পা ভেঙে দেন। পাশে শুয়ে শুয়ে এ সব দেখেছে শিশু। সে ঘুমের ভান করছিল। বাবাকে নিথর হয়ে যেতেও দেখে সে।
আরও পড়ুন:
শিশু জেগে উঠলে তাকেও হুমকি দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। ভয় পেয়ে সে চুপ করে যায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের স্ত্রী অনিতা একটি দোকান চালাতেন। স্থানীয় কচুরি বিক্রেতা কাশীরামের সঙ্গে তাঁর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল। সেই কারণেই স্বামীকে সরিয়ে দেওয়ার পরিকল্পনা করেন মহিলা। এর জন্য প্রেমিকের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে চার জন ভাড়াটে খুনি নিয়োগ করেন। তাঁদের দু’লক্ষ টাকা দেওয়া হয়েছিল বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ।
আচমকা অসুস্থ হয়ে স্বামীর মৃত্যু হয়েছে— এই গল্প প্রচার করতে চেয়েছিলেন অনিতা। কিন্তু মৃতের শরীরে ধস্তাধস্তির চিহ্ন ছিল স্পষ্ট। তাঁর দাঁতও ভেঙে গিয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে পুলিশের সন্দেহ হয় এবং দেহটি পাঠানো হয় ময়নাতদন্তের জন্য। পুলিশ জানতে পারে, তাঁকে খুন করা হয়েছে।
এলাকার অন্তত ১০০টি সিসি ক্যামেরার ফুটেজ খতিয়ে দেখে অভিযুক্তদের শনাক্ত করে পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়েছে অনিতা, কাশীরাম এবং ভাড়াটে খুনিদের এক জনকে। বাকি তিন জনের খোঁজ চলছে।