বাঘের আতঙ্কে ঘুম উড়ে গিয়েছে উত্তরপ্রদেশের পীলীভীতের ১৫টি গ্রামের বাসিন্দাদের। গত কয়েক দিনে বাঘের হামলায় পর পর তিন জনের মৃত্যুতে আতঙ্ক আরও বেড়েছে। মানুষখেকোর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে বন দফতর। দেখামাত্রই বাঘটিকে গুলি করার অনুমতি চাওয়া হয়েছে মুখ্য বনপালের কাছে।
স্থানীয় প্রশাসন সূত্রে খবর, গত কয়েক দিন ধরেই বাঘের খোঁজ চালানো হচ্ছে। সেটি ধরা না পড়া পর্যন্ত গ্রামবাসীরা আতঙ্কে বাইরে বেরোতে পারছেন না। গ্রামে কার্যত অঘোষিত বন্ধের চেহারা নিয়েছে। দোকানপাট বন্ধ। ছাত্রছাত্রীরা স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে দিয়েছে। নিরাপত্তার স্বার্থে খুব প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে না বেরোনোর পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। বাঘের আতঙ্কে ইতিমধ্যেই ১৫টি গ্রামের ১৮টি সরকারি স্কুল বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
শনিবার প্রাথমিক শিক্ষা দফতরের আধিকারিক অমিত কুমার জানিয়েছেন, বিভাগীয় বনাধিকারিক ভরতকুমার ডি কে-র অনুরোধে এবং পড়ুয়াদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই স্কুলগুলি আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। যত দিন না বাঘ ধরা পড়বে, তত দিন স্কুলগুলি বন্ধ রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন:
এক বনকর্মী জানিয়েছেন, বাঘটিকে ধরার জন্য নানা রকম ফাঁদের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বেশ কয়েকটি দল গঠন করে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। সন্দেহ করা হচ্ছে, আখ ক্ষেতগুলিতে লুকিয়ে থাকতে পারে বাঘটি। ড্রোন, নাইট ভিশন ক্যামেরা-সহ বিভিন্ন প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে বাঘটিকে বাগে আনার জন্য। কিন্তু এখনও সেটিকে ধরা সম্ভব হয়নি। তার মধ্যে সম্প্রতি বাঘের হামলায় তিন জনের মৃত্যুতে পরিস্থিতি আরও ঘোরালো হয়েছে। বন দফতরের শীর্ষ কর্তারা ঘাঁটি গেড়েছেন পীলীভীতে। তাঁরাও রাত জাগছেন। গত ১৭ জুলাই বাঘের হামলায় এক মহিলার মৃত্যুর পর বনাধিকারিকেরা মুখ্য বনপালের কাছে মানুষখেকোটিকে দেখামাত্র গুলির নির্দেশের অনুমতি চেয়েছেন। যদিও বিষয়টি এখনও বিবেচনাধীন।
বন দফতর সূত্রে খবর, শনিবার শেষ বার বাঘটিকে দেখা গিয়েছিল ডান্ডিয়া গ্রামে, সম্প্রতি হামলাস্থল থেকে দু’কিলোমিটার দূরে। পীলীভীত ব্যাঘ্র সংরক্ষণ কেন্দ্রের পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে তিন জনের মৃত্যু হয় বাঘের হামলায়। বিভাগীয় বনাধিকারিক মণীশ সিংহ বলেন, ‘‘বাঘের পায়ের ছাপ চিহ্নিত করা হয়েছে। তা দেখে সন্দেহ করা হচ্ছে খাকরা নদী পেরিয়ে সেটি ডান্ডিয়া গ্রামে ঢুকেছে। হাতি নিয়ে ক্ষেতগুলিতে তল্লাশি চালানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু ফসল নষ্ট হতে পারে এই আশঙ্কায় সেই পরিকল্পনা বাতিল করা হয়েছে।’’
(এই খবরটি প্রথম প্রকাশের সময় উত্তরপ্রদেশ না-লিখে পীলীভীত মধ্যপ্রদেশে বলে লেখা হয়েছিল। গোচরে আসার সঙ্গে সঙ্গেই সেই ভুল সংশোধন করা হয়েছে। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা আন্তরিক ভাবে দুঃখিত এবং ক্ষমাপ্রার্থী)