নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করল তিপ্রা মথা। ছবি: ফেসবুক।
‘গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড’ নিয়ে আবার সুর চড়াল তিপ্রামথা। শিয়রেই ত্রিপুরায় বিধানসভা নির্বাচন। আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি এ রাজ্যের ৬০টি আসনে প্রার্থীদের ভাগ্য নির্ধারণ করবেন ভোটাররা। পর্যবেক্ষকদের একাংশ মনে করছেন, বিজেপি শাসিত ত্রিপুরায় এ বার অন্যতম কিংমেকার হয়ে উঠতে পারে তিপ্রা মথা। এই আবহে তিপ্রা মথার প্রধান, ত্রিপুরা রাজপরিবারের সদস্য প্রদ্যোতকিশোর দেববর্মা জানিয়ে দিলেন যে, তিপ্রাল্যান্ডের সাংবিধানিক সমাধান না করলে কোনও দলকেই তাঁরা সমর্থন জানাবেন না। কোনও সরকারেও যোগ দেবেন না।
তিপ্রা মথার নির্বাচনী ইস্তাহার প্রকাশ করতে এসে প্রদ্যোতকিশোর বলেন, “প্রয়োজনে আমরা বিরোধী আসনে বসব। কিন্তু কয়েকটা মন্ত্রিপদ পাওয়ার লোভে আমরা আমাদের মূল দাবি থেকে সরে আসব না।” রাজনৈতিক দলগুলি এ বিষয়ে মৌখিক প্রতিশ্রুতি দিলেও তা গ্রাহ্য হবে না বলে জানিয়ে দিয়েছেন তিনি। আগেই তিপ্রা মথার তরফে জানানো হয়েছিল যে, রাজ্যের ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ৪২টি আসনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে তারা। তবে তিপ্রা মথা যে ত্রিপুরাতে বিভক্ত করতে চায় না, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন প্রদ্যোতকিশোর। তাঁর কথায়, “আমরা ত্রিপুরাকে ভাঙতে চাই না। কে ভারতকে দুর্বল করতে চায়? ধর্মের নামে ভাগ করতে চায়?”
প্রদ্যোত আগেই জানিয়েছেন, জনজাতি সম্প্রদায়ের স্বার্থরক্ষাই তাঁর প্রাথমিক লক্ষ্য। ত্রিপুরার ৬০টি বিধানসভা আসনের মধ্যে ২০টি জনজাতি সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত। ২০১৮-র বিধানসভা নির্বাচনে এর মধ্যে ১০টিতে বিজেপি এবং ৮টিতে তার সহযোগী দল আইপিএফটি জয়ী হয়েছিল। সিপিএম জিতেছিল ২টিতে। গত কয়েক মাসে আইপিএফটির নেতা-কর্মীদের অধিকাংশই তিপ্রায় যোগ দিয়েছেন। এই পরিস্থিতি তিপ্রাই ওই আসনগুলিতে শাসক জোটের মূল প্রতিদ্বন্দ্বী বলে মনে করা হচ্ছে। প্রদ্যোত কিশোরও সম্প্রতি দাবি করেছেন যে, আইপিএফটি গুরুত্বহীন হয়ে পড়েছে।
ত্রিপুরা প্রদেশ কংগ্রেসের প্রাক্তন সভাপতি তথা রাজপরিবারের বংশধর প্রদ্যোতবিক্রম ২০২১ সালের গোড়ায় জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার রক্ষার দাবিতে তিপ্রা ইন্ডিজেনাস প্রোগ্রেসিভ রিজিওনাল অ্যালায়েন্স বা তিপ্রা মথা দল গড়েছিলেন। দলের জনভিত্তির প্রথম প্রমাণ পাওয়া যায় ২০২১ সালের এপ্রিলে। ত্রিপুরা ট্রাইবাল এরিয়াস অটোনমাস ডিস্ট্রিক্ট কাউন্সিল (এডিসি) নির্বাচনে। বিভিন্ন আদিবাসী বা জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের নিয়ে তৈরি তিপ্রা মথা এডিসির ১৮টি আসনে জয়লাভ করে। বাকি ৯টি আসন মিলিত ভাবে পায় বিজেপি এবং তাদের জোট সঙ্গী জনজাতি আইপিএফটি। গত ১ জানুয়ারি আইপিএফটির প্রধান তথা জোট সরকারের মন্ত্রী এনসি দেববর্মার মৃত্যুর পর কার্যত নেতৃত্বহীন হয়ে পড়া দল তিপ্রায় মিশে যাওয়ার জন্য আলোচনাও শুরু করেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিজেপির বাধায় তা সম্ভব হয়নি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy