E-Paper

নজর বিধানসভায়, ‘ইন্ডিয়া’র যৌথ কর্মসূচিতে নেই তৃণমূল

তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটই হল পাখির চোখ। সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে যুযুধান তৃণমূল। কাছাকাছি কোনও লোকসভা ভোটও নেই।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৩ মে ২০২৫ ০৮:৫৪

— প্রতীকী চিত্র।

সংসদের বাইরে ‘ইন্ডিয়া’ মঞ্চের সঙ্গে কোনও রকম যৌথ কর্মসূচি আপাতত বিবেচনার বাইরে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলীয় সূত্রে আজ এই ইঙ্গিত পাওয়া গিয়েছে। যেটুকু সমন্বয় হবে, তা সংসদীয় অধিবেশন চলার সময়েই হবে।

একাধিক উদাহরণে এই নীতিই স্পষ্ট করছে তৃণমূল। ওয়াকফ নিয়ে সমস্ত বিরোধী দলের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে প্রতিবাদ আন্দোলন তৈরি করার ডাক এসেছিল তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্বের কাছ থেকেই। কিন্তু আপাতত বিষয়টি শিকেয় তুলে রাখা হয়েছে। পাশাপাশি, কথা ছিল পহেলগাম কাণ্ডের প্রেক্ষিতে মে মাসের গোড়ায় কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলির সঙ্গে তৃণমূলও একটি বিশেষ সংসদীয় অধিবেশনের দাবি জানাবে। প্রসঙ্গত, এই নিয়ে প্রথম সাংবাদিক সম্মেলন করেন নির্দল সাংসদ কপিল সিব্বল। পরবর্তী কালে কংগ্রেস বা আরজেডি-র মতো দলগুলি এই দাবিতে স্পিকারের কাছে চিঠি দিলেও তৃণমূল সূত্রে জানানো হয়েছে, তারা এ নিয়ে কোনও রকম পদক্ষেপই আপাতত করবে না। জাতভিত্তিক জনগণনার প্রসঙ্গেও কংগ্রেসের সুরে সুর মিলিয়ে কোনও কথা বলছে না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।

তৃণমূলের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আগামী বছর পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটই হল পাখির চোখ। সেখানে কংগ্রেসের সঙ্গে যুযুধান তৃণমূল। কাছাকাছি কোনও লোকসভা ভোটও নেই। ফলে এমন কোনও পদক্ষেপই জাতীয় রাজনীতিতে করতে চায় না দল, যা বাংলার ভোটের সঙ্গে সম্পর্কহীন। অর্থাৎ রাজ্যের বিধানসভা ভোটকে নজরে রেখেই আগামী এক বছরের রাজনীতির চাল চালবে মমতার দল।

পহেলগাম কাণ্ডের পর দেশের অন্যান্য প্রান্তের মতো বাংলাতেও মুসলিম-বিরোধিতার হাওয়া চলছে। মুখ্যমন্ত্রী নিজে দিঘায় গিয়ে পাল্টা হিন্দুত্বের ভাষ্য তৈরি করেছেন। সূত্রের মতে, এখনই ওয়াকফ নিয়ে রণমূর্তি ধারণ করে রাস্তায় নামার উপযুক্ত সময় নয়— এমনটাই মনে করছে তাঁর দল। বাইরে এটাই বলা হচ্ছে, সংখ্যালঘু সম্প্রদায় তৃণমূলকে বিশ্বাস করেন। ওয়াকফ প্রশ্নে তৃণমূলের ইতিমধ্যেই জয় হয়েছে। কাশ্মীরের মেহবুবা মুফতি পর্যন্ত প্রকাশ্যে মমতার অবস্থানকে সমর্থন করেছেন।

এর পাশাপাশি, সংসদের পৃথক অধিবেশন নিয়েও কংগ্রেস-সহ কোনও বিরোধী দলের সঙ্গেই আপাতত কথা বলবে না তৃণমূল। এসপি-ও এই নিয়ে কোনও যৌথ বিরোধী পদক্ষেপ করতে চায় না বলেই খবর। কংগ্রেস যাতে বাড়তি কৃতিত্ব বা গুরুত্ব বিরোধী মঞ্চে না পায়, সেটা নিশ্চিত করতেই এই সিদ্ধান্ত বলে মনে করা হচ্ছে। প্রসঙ্গত, এসপি-র সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তৃণমূলের।

একই ভাবে মোদী সরকার দেশ জুড়ে জাতভিত্তিক জনগণনার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতেই রাহুল গান্ধীকে ‘কৃতিত্ব’ দিতে আসরে নেমে পড়েছে কংগ্রেস। দেশের প্রধান বিরোধী দলের দাবি, রাহুলের চাপেই এই সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হয়েছে কেন্দ্র। ইতিমধ্যেই দিল্লি জুড়ে রাহুলকে কৃতিত্ব দিয়ে পোস্টার দেওয়া শুরু করেছে হাত শিবির। বিষয়টি নিয়ে নীরবতা পালনের রাস্তা নিয়েছে তৃণমূল। গোড়া থেকেই এই গণনা নিয়ে খুব স্বচ্ছন্দ ছিল না দল। এ ব্যাপারে বামেদের অভিযোগ, জাতভিত্তিক জনগণনা হলে নিদারুণ বেকারত্ব এবং কর্মহীনতার দিকগুলি প্রকাশ হবে বলেই অস্বাচ্ছন্দ্য তৃণমূলের।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC INDIA Alliance

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy